একসময় রেডিও ছিল তথ্য জানার প্রধান উৎস এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, কিন্তু স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট-এর সহজলভ্যতার কারণে রেডিওর ব্যবহার নেই বললেই চলে। রেডিও ছিল একটা সময় শহর কিংবা গ্রামে খুবই জনপ্রিয়। আধুনিকতার ছোঁয়া হলেও বর্তমানে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে যন্ত্রটি। অনেকের বাসায় রেডিও থাকলেও এখন আর কেউ যন্ত্রটি দিয়ে গান কিংবা অনুষ্ঠান শোনেন না। আগে মানুষ রেডিওর মাধ্যমে বিনোদন, সংবাদ সবকিছুই জানতো।
টেলিভিশন আবিস্কারের পর আস্তে আস্তে শহর এলাকায় রেডিওর ব্যবহার কমতে থাকলেও গ্রামে তার ব্যবহার কমেনি। কিন্তু আজ সময়ের ব্যাপ্তিকালে রেডিও একবারেই বিলুপ্ত হয়েছে।
রেডিওতে শুধু শোনার ব্যবস্থা থাকার কারণে তার গুরুত্বও বেশ ছিলো। এক কথায় বলতে গেলে তথ্য জানার জন্যে সকলেই কান পেতে থাকতো। গ্রামের ঘরে ঘরে ছিলো রেডিও।
এছাড়াও সরকারি উন্নয়ন, পরিকল্পনা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, সংস্কৃতি, আবহাওয়াসহ চলমান বিভিন্ন তথ্যবহুল সংবাদ জানার ও বিনোদনমূলক বিভিন্ন গান শোনার একমাত্র মাধ্যমই ছিলো রেডিও। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পট-পরিবর্তনে তথ্য সরবরাহের কাজ করেছে রেডিও।
মধুখালি রেল স্টেশনে সামনে থেকে কথা হয় ৭০ বছর বয়সী মকবুলের সাথে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন আমাদের গ্রামের এক বাড়িতে রেডিও ছিল। সেখানে সন্ধ্যার পরই আমরা বসে মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন গান, নাটক, পালা ও খবর শুনতাম।’তিনি আরো বলেন, ‘গেল কয়েক বছর ধরে মোবাইল, টেলিভিশন এর কারচ হারিয়ে গেছে রেডিও। এখন রেডিও কথা মনে পরে না।’
বোয়ালমারী উপজেলার ময়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালিপদ চক্র বর্ত্তী বলেন, খবরের জন্য একসময় বিবিসি বাংলা রেডিও ছিল অসংখ্য মানুষের ভরসার নাম। সকাল, সন্ধ্যা ও রাতে রেডিও নিয়ে বসে থাকত মানুষ। স্টেশন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বিবিসি বাংলা ধরাতে বেগও পেতে হতো। বেজে উঠত ‘বিবিসি বাংলা’।
তিনি আরো বলেন, একসময় রেডিও ছিল আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। দেশের গান, সংবাদ, বিনোদন, চিঠির প্রাপ্তি শিকার এর মাধ্যমে শৈশবের রঙিন ও মধুর সময় গুলো কেটেছে রেডিওর সাথে। রেডিও শোনার মাধ্যমে অনেক কিছু জেনেছি। বর্তমান মানুষের জীবন ধারায় পরিবর্তন এসেছে। রেডিও আর এখন মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়। মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েছে এখন মোবাইল ফোন। রেডিও হারিয়ে ফেলেছে তার সেই পুরনো ঐতিহ্য।
কেকে/ এমএস