কুমিল্লার মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠেছে। সাম্প্রতি মুরাদনগরে অপহরণ করে নির্যাতন ও চাঁদা দাবির ঘটনায় সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করলেও এ ঘটনায় মামলা নেননি তিনি।
রোববার (১২ অক্টোবর) ভুক্তভোগী এনামুল কুমিল্লা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
১১ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি করা হয়। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল রাজ্জাক।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, মুরাদনগরে নাজমুল হাসান নামে এক যুবলীগ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে তিন যুবককে অপহরণের পর চাঁদা দাবি করে নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় পর থেকে একটি অপহরণ মামলা করতে শনিবার (১১ অক্টোবর) পর্যন্ত মুরাদনগরের ওসি ও থানার দুয়ারে ঘুরেন ভুক্তভোগী পরিবার।
কিন্তু এ মামলার কোন কাগজই দেখতে চাননি ওসি। প্রতিবারই বলতেন এজাহার পরিবর্তন করেন। মুন্সীর কাছে যান। সর্বশেষ শনিবার থানায় গেলে ওসি ও থানার মুন্সি জানিয়ে দেয়, এ মামলা মুরাদনগর থানায় হবে না। আদালতে গিয়ে মামলা করেন।
অপহরণের পর চাঁদা দাবি ও নির্যাতনের শিকার এনামুল, হৃদয় মিয়া। তাদের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলায়।
তারা বলেন, ‘সেই দিনের ঘটনা এখনও ভুলতে পারি না। সন্ত্রাসী নাজমুল ও তার বাহিনীর করা আঘাত এখনও আমরা শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছি। নির্যাতনের পর আমাদেরছবি তুলে রাখে। পরে আমরা চাঁদা দিতে স্বীকৃতি জানালে তারা আমাদেরকে নিয়ে বের হয়। আমরা দোকানের সামনে এসে কান্নাকাটি শুরু করলে স্থানীয়রা আমাদেরকে উদ্ধার করে এবং সন্ত্রাসীরা মুহূর্তের মধ্যে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করতে গেলে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান মামলা নেননি।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘দিন দিন মুরাদনগর থানার ওসির পক্ষপাতিত্ব বাড়ছে। তিনি এখন পর্যন্ত কোনো আওয়ামী লীগের একটা নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বরং সে বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে জাহিদুর রহমান ঘোষ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও ড্রেজার ব্যবসায়সহ নানা অপরাধে জড়িত। তাকে মুরাদনগর থানা থেকে অপসারণের দাবি করছি।’
অপহরণের মামলা কেন নেননি জানতে চাইলে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘মামলা নেইনি- এসব মিথ্যা কথা। আমি মামলা নেওয়ার জন্য বসে আছি। কিন্তু তারা আসেনি। এজাহারে ভুল ছিল, আমি বলেছি এটা পরিবর্তন করে নিয়ে আসেন। এরপর তারা আর আসেনি।’
কেকে/ এমএ