সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
ইতিহাস ও এতিহ্য
উপমহাদেশের বেতার যাত্রা
খোলা কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:১৮ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

আজ থেকে একশ দুবছর আগে ১৯২৩ সালের জুন মাসে বোম্বেতে (বর্তমানে মুম্বাই) কিছু উৎসাহী ব্যক্তি বেসরকারি উদ্যোগে ‘বোম্বে প্রেসিডেন্সি রেডিও ক্লাব’ গড়ে তুলে ভারতে প্রথম নিয়মিত বেতার সম্প্রচার শুরু করে। এর মাত্র কয়েক মাস পারে নভেম্বরে ‘ক্যালকাটা রেডিও ক্লাব’-এর পরিচালনায় প্রথম কলকাতায় বেতার সম্প্রচার শুরু হয়। 

ইংল্যান্ডের মার্কনি কোম্পানি এ সম্প্রচারের জন্য তাদের একটা ট্রান্সমিটার ধার দিয়েছিল। এরপর ১৯২৪ সালে মাদ্রাজে (বর্তমানে চেন্নাই) ‘মাদ্রাজ রেডিও ক্লাব’ বেতার বাবস্থা চালু করে। প্রতিদিন মাত্র কয়েক ঘণ্টার অনুষ্ঠান সবাই প্রচার করত। এগুলো সবই কিন্তু ছিল সখের উদ্যোগ, কোনো পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল না। 

এরপর ১৯২৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কলেজের অধ্যাপক ড. শিশির কুমার মিত্র পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের একটি ঘরে ছোট ট্রান্সমিটার বসিয়ে রেডিও সম্প্রচার শুরু করেন। এখান থেকে গান-বাজনা,বক্তিতা ইত্যাদ প্রচারিত হত। এরপর আরও কিছু ছোট ছোট বেতার কেন্দ্র আত্মপ্রকাশ করেছিল। কিন্তু এগুলি সবই ছিল বিচ্ছিন্ন ও বেসরকারি প্রয়াস।

১৯২৬ সালে মুশ্বইয়ের কয়েকজন ব্যবসায়ী রেডিও সম্প্রচারের একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এর নাম দেন ‘ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কোম্পানি’ (আইবিসি)। প্রধান উদ্যোগক্তা ছিলেন বিশিষ্ট পারসী ব্যবসায়ী ‘এফ এম চিনয়’। এ কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে নিযুক্ত করা হয় বিবিসির ‘ই সি ডানস্টন’কে। ১৯২৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এ কোম্পানির সঙ্গে ভারত সরকারের (তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার) একটা চুক্তি হয়। এ চুক্তি অনুসারে, আইবিসি কে কলকাতা ও মুম্বাই বেতার কেন্দ্র থেকে সম্প্রচারের অধিকার দেওয়া হয়। যদিও তখনো ওই বেতার কেন্দ্র দুটি চালু হয় নি।

১৯২৭ সালের ২৩ জুলাই ভারতের বেতার সম্প্রচারের ইতিহাসে এক স্বর্ণোজ্জ্বল দিন। ওই দিন মুম্বাইতে ভারতের প্রথম সংগঠিত বেতার কেন্দ্রের উদ্বোধন হয় তৎকালীন ভারতের ভাইসরয় ‘লর্ড আরউ্ইন’ এর হাত দিয়ে। এ কারণে ভারতে সংগঠিত বেতার ব্যবস্থা প্রবর্তনের তারিখ হিসাবে এই ২৩ জুলাই দিনটাকে পালন করা হয়। তখনো কিন্তু ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ নামটা অসেনি। তবে এই ‘আইবিসি’ কে অল ইন্ডিয়া রেডিওর পূর্বসূরি বলা হয়।

মুম্বাই রেডিও স্টেশন চালু হওয়ার মাত্র এক মাস পরেই ২৬ আগস্ট ভারতের দ্বিতীয় বেতার কেন্দ্র কলকাতায় শুরু হয়।

তখন রেডিও কার্যালয়ের কোনো নিজস্ব বাড়ি ছিল না। ভাড়া নেওয়া হয়েছিল ডালহৌসি স্কোয়ারের পশ্চিমে ১ নং গারস্টিন প্লেসের বাড়িটা। মাসিক ভাড়া ছিল ৮০০ টাকা। রেডিওর অনুষ্ঠানগুলো শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটা ট্রান্সমিটারের দরকার। তাই টালা পার্কের কাছে কাশীপুরে কিছু জায়গা লিজ নিয়ে সেখানে বসানো হয়েছিল দেড় কিলো ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন মিডিয়াম ওয়েভ ট্রান্সমিটার যা সবচেয়ে পুরনো প্রযুক্তি ‘ভাল্ভ’ এর দ্বারা বানানো। 

তখন কলকাতা বেতার কেন্দ্রের ডিরেকটর হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন ‘সি সি ওয়ালিক’। ভারতীয় অনুষ্ঠানের পরিচালক হিসাবে ছিলেন বিশিষ্ট ক্যারিওনেট (এক রকমের বাঁশি) বাদক নৃপেন্দ্রনাথ মজুমদার। এরপর কলকাতা বেতারে ঘোগ দেন বহু বিশিষ্ট ও গুণী বাক্তিরা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন রাইচাঁদ বড়াল, হীরেন বসু, নলিনী কান্ত সরকার, রাজেন্দ্র নাথ সেন, বীরেন রায়, পঙ্কজ কুমার মল্লিক, বাণী কুমার, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র প্রমুখ।

১৯৩০ সালের ১ এপ্রিল বেতার সম্প্রচারের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ভারতের ব্রিটিশ সরকারের হাতে চলে আসে। নতুন করে নাম দেওয়া হয় ‘ইন্ডিয়ান স্টেট ব্রডকাস্টিং সার্ভিস’ (আইএসবিএস)। কিন্ত এটা অল্প দিনই টিকল। দেড় বছরের মাথাতেই এই ‘আইএসবিএস’কে ব্রিটিশ সরকার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে সব বেতার কর্মী ও কলাকুশলীদের মধ্যে একটা অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। তখন ভারতের বেতার দফতরের পরিচালন সমিতি; ভারপ্রাপ্ত অফিসার ছিলেন ‘স্যার জোসেফ ভোর’। তার কাছে তখন বিখ্যাত সাংবাদিক তুষারকান্তি ঘোষ ও আরো কিছু বিশিষ্টজনরা এ ব্যাপারে দরবার করেন। 

স্যার জোসেফ তখন লাটসাহেবকে বোঝালেন যে, রেডিওর মতো প্রচার মাধামকে হাতছাড়া করা ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে সমীচীন হবেনা। স্যার জোসেফের এই উদ্যোগে ব্রিটিশ সরকার তখন সাময়িকভাবে বেতার কেন্দ্রগুলো বন্ধ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৩২ সালের ৫ মে পাকাপাকিভাবে বেতার কেন্দ্রগুলো চালু রাখার ঘোষণা করা হয়। এ সিদ্ধান্তে বেতার কর্মী ও কলাকুশলীরা নতুনভাবে উৎসাহিত হয়ে কাজ করতে শুরু করেন। স্যার জোসেফ ভোরের এই প্রয়াস প্রশংসার দাবি রাখে, না হলে ভারতের বেতার সম্প্রচারের ইতিহাস অন্যদিকে মোড় নিত।

১৯৩৫ সালে ভারতীয় বেতারের প্রথম ‘কন্ট্রোলার অফ ব্রডকাস্টিং’ পদে কার্যভার গ্রহণ করেন বিবিসি থেকে আগত ‘লায়োনেল ফিলডেন’। তিনি ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি ভারতের রেডিও সম্প্রচারের সদর দফতর দিল্লিতে নিয়ে গেলেন। ওই বছরেরই ৮ জুন তারিখে ‘আইএসবিএস’-এর নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ (এ আই আর)। 

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  উপমহাদেশ   বেতার যাত্রা   ইতিহাস  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি
জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার
কালাইয়ে বিএনপির গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ

ইতিহাস ও এতিহ্য- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close