সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
ইতিহাস ও এতিহ্য
আবারো গিনেস বুকের তালিকায় শালিখার হালিম, ভাঙলেন নিজের রেকর্ড
মাসুম বিল্লাহ, শালিখা (মাগুরা)
প্রকাশ: বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১:১৭ পিএম
মাথার ওপর ফুটবল রেখে গিনেস বুকে রেকর্ড আব্দুল হালিমের। ছবি : প্রতিনিধি

মাথার ওপর ফুটবল রেখে গিনেস বুকে রেকর্ড আব্দুল হালিমের। ছবি : প্রতিনিধি

সাইকেল চালাতে চালাতে মাথায় ফুটবল ভারসাম্য রেখে একটানা ২০.২০ কিলোমিটার (১২ দশমিক ৫৫ মাইল) পথ পাড়ি দিয়ে নিজের অর্জিত রেকর্ড নিজেই ভেঙ্গে চতুর্থ বারের মতো গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের আব্দুল হালিম (৪৯)। 

গত ২২ ফেব্রুয়ারি মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামে এ কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি। যাচাই বাছাই শেষে গত শনিবার এ রেকর্ডের স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস কর্তৃপক্ষ।  

মাথার ওপর ফুটবল রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটা, বাইসাইকেল চালানো বা স্কেটিং করা তার কাছে যেন কোনো ব্যাপারই নয়। ফুটবল নিয়ে যিনি অর্ধশতাধিক আকর্ষণীয় খেলা দেখাতে পারেন। এমন ফুটবল কসরত করেই ২০১২, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে আগে তিনটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়েছেন তিনি। 

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, ‘দ্য গ্রেটেস্ট ডিসট্যান্স ট্রাভেল্ড অন এ বাইসাইকেল ব্যালান্সিং এ ফুটবল অন দ্য হেডথ বা মাথায় ফুটবল রেখে সাইকেল চালিয়ে সবচেয়ে বেশি দূর যাওয়ার রেকর্ডের মালিক এখন আবদুল হালিম। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামে এই রেকর্ড যেদিন গড়েন সেদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু করে দুপুর ১২টা ১৯ মিনিট পর্যন্ত এক টানা সাইকেল চালান তিনি। এসময় তার মাথার ওপরে ফুটবল, আর দুই হাত ছিল হ্যান্ডেলে। এভাবে টানা ১ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট বাইসাইকেল চালিয়েছিলেন হালিম। এর মধ্যে একবারও বল মাথা থেকে পড়েনি, তিনি হাত দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করেননি। এতেই মিলেছে গিনেসের স্বীকৃতি।
 
এই রেকর্ড গড়তে নিজের রেকর্ডই ভেঙেছেন আবদুল হালিম। ২০১৭ সালের ৮ জুন ঢাকায় ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটে মাথায় বল নিয়ে ১৩ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে গিনেস রেকর্ড গড়েন তিনি। সাত বছরের বেশি সময় রেকর্ডটি তার দখলেই ছিল। গিনেস বুকে আবদুল হালিমের নাম প্রথমবার ওঠে ২০১১ সালে। ওই বছরের ২২ অক্টোবর ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে বল মাথায় নিয়ে ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার পথ হেঁটে রেকর্ড গড়েন তিনি। এই রেকর্ড অবশ্য এখন হাতছাড়া হয়ে গেছে। দ্বিতীয় দফায় ২০১৫ সালে গিনেসে নাম ওঠে তাঁর। ওই বছরের ২২ নভেম্বর ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আবদুল হালিম মাথায় বল নিয়ে রোলার স্কেটিং করে ১০০ মিটার দূরত্ব ছুটে যান মাত্র ২৭ দশমিক ৬৬ সেকেন্ডে। এতেই আসে গিনেসের স্বীকৃতি। 

মাথায় ফুটবল রেখে সাইকেল চালিয়ে গিনেস বুকে নতুন রেকর্ড আব্দুল হালিমের। ছবি : খোলা কাগজ

মাথায় ফুটবল রেখে সাইকেল চালিয়ে গিনেস বুকে নতুন রেকর্ড আব্দুল হালিমের। ছবি : খোলা কাগজ


প্রতিবেদককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবদুল হালিম বলেন, ‘ছোটবেলায় এক গোলকিপারের বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ দেখে এতে আগ্রহী হই। আজ প্রায় ৩৩ বছর ফুটবল নিয়ে নানা খেলা শিখেছি, প্রদর্শন করেছি। এখনও প্রায় নিয়মিত চর্চা করি। এটাই আমার পেশা। এটা করতে গিয়ে অন্য কোনো কাজ আর শেখা হয়নি। কসরত দেখিয়ে চলে সংসার।’  

৯০ দশকের শুরুতে ফুটবলের কসরত শেখার নেশা তৈরি হয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করা আবদুল হালিমের। এর পর থেকে এটাই তাঁর পেশা, এটাই তার নেশা। 

জানা গেছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুটবলের কসরত দেখিয়ে যে সম্মানী পান, তা দিয়ে কোনোরকমে চলে সংসার তার। আগে যে তিনবার রেকর্ড করেছিলেন, তখন স্পনসর (পৃষ্ঠপোষক) ছিল। এবার কোন পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই গড়েছেন রেকর্ড। 

নতুন রেকর্ডের স্বীকৃতি নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় আবদুল হালিম বলেন, গিনেস রেকর্ড করে দেশের সুনাম বাড়িয়েছি। কিন্তু এর বিনিময়ে তেমন কিছুই পাইনি। একটা রেকর্ড করতে অনেক সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যায় হয়। পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া আমার মতো মানুষ এটা কিভাবে করবে? এটা করে যদি আমার কোনো আর্থিক উন্নতি না হয়, আমি যদি না খেয়ে থাকি তাহলে অন্যরা কিভাবে আগ্রহী হবে?  

আবদুল হালিম চান, তিনি যে কসরত ও কৌশল রপ্ত করেছেন সেগুলো নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। তিনি আরো বলেন, আমি তো চাই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এসব কৌশল শিখুক। আরও নতুন নতুন রেকর্ডের মাধ্যমে মাগুরা তথা দেশের সুনাম অর্জন করুক। কিন্তু এর জন্য তো সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। আমার নিজেরও আরো রেকর্ড গড়ার ইচ্ছে আছে।  সবকিছু অর্থ সঙ্কটের কাছে হার মেনে যাচ্ছে। 

এ বিষয়ে মাগুরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক (জেলা প্রশাসক) মো. অহিদুল ইসলাম সোমবার বলেন, আবদুল হালিমের এ অর্জনে আমরা আনন্দিত। আমরা চাই সে এমন আরো কৃত্তি গড়ুক। তার এ অগ্রযাত্রায় জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা পাশে আছে। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে আমরা তার কসরত প্রদর্শন করে থাকি। এর সঙ্গে বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সে আরো ভালো করতে পারবে। 

মাসুম বিল্লাহ 
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি
জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার
কালাইয়ে বিএনপির গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ

ইতিহাস ও এতিহ্য- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close