বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করেই দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বিচার বিভাগ দানবীয় শাসনে পরিণত হয়েছিল। তখন রাষ্ট্রব্যবস্থা একটা নিপীড়নমূলক ভূমিকায় ছিল।
রোববার (১২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
এদিন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। এদিন এ মামলার বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। আগামীকাল সোমবার এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে।
পরে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিগত সরকারের সময় বিচারের নামে বিচারকরা স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা আজ সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের প্রতারণার কথা তুলে ধরেছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারপদ্ধতি বাতিলের সময় যে জাজমেন্ট (রায়) প্রথমে ওপেন কোর্টে দেওয়া হয়েছিল, পরে চূড়ান্ত রায়ের সময় সেই রায়ের অংশটুকু বাতিল করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তিনি। প্রধান বিচারপতির মতো আসনে অধিষ্ঠিত থেকে খায়রুল হক এই স্বেচ্ছাচারী কাজ করেছেন।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই বিচারকরা গুরুত্বপূর্ণ মামলা ফেলে রেখে সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী অগুরুত্বপূর্ণ মামলাকে বিচারের জন্য নিয়ে আসতেন। কাউকে ফাঁসি দেওয়ার প্রয়োজনে সেই মামলাকে আগে নিয়ে আসা, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অন্য মামলাকে পেছনে ফেলে দেওয়া এই বিচারকদের স্বেচ্ছাচারিতা। এটা রোধ করতে সাংবিধানিক অথবা আইনি ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান অভিমত প্রকাশ করেছেন।
তাজুল ইসলাম যুক্তি উপস্থাপনকালে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে গত বছর ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসন তথা হত্যা, নির্যাতন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, দুর্নীতি, ক্রসফায়ারসহ বিভিন্ন সময়ের দুঃশাসনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। পাশাপাশি ২০০৮ সালের পাতানো নির্বাচন, ওয়ান ইলেভেন আসার নেপথ্য কারণ, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, বিচার বিভাগ ধ্বংস, ব্যাংক লুটপাট, ২০১৩, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের তামাশার নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয় ট্র্যাইব্যুনালে। এ সময় গত ১৫ বছরে বিচার বিভাগ দানবীয় শাসনে পরিণত করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, বিচারকদের জবাবদিহিতার কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা পড়ে আছে, আমরা বিচার করতে পারছি না। জনগুরুত্বপূর্ণ মামলা রেখে সরকারের অথরিটি পালন করছেন বিচারকরা। তাদের একটা সিস্টেমের মধ্যে আসতে হবে। বিচারের নামে স্বাধীনতা মানে তো আপনি যা খুশি তা করবেন। এটার নাম স্বাধীনতা না। জুডিশিয়াল কাউন্সিলেরও যদি কেউ অফেন্স (অপরাধ) করে তাদেরও জবাবদিহিতা বা বিচারের আওতায় আনার একটা সিস্টেম থাকতে হবে।
কেকে/এজে
রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, 
আরও 
সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লায় শিয়ালের কামড়ে শিশুসহ আহত ৭
নবীনগরের কালিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট চরমে
২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের
সিলেটবাসী নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত : আরিফুল
নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের মিছিল ও স্মারকলিপি
রাজশাহীতে চার পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ
সাপ্টিবাড়ী ডিগ্রি কলেজে চরম দুর্নীতি ও অনিয়ম
রায়েরবাজারে দুই মাস ধরে অর্ধসমাপ্ত সাদেক খান সড়ক
মৌলভীবাজারে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন
গাজীপুরে টাইফয়েড টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন
