একটি কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুবকদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে ইসলামী যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট তাওহিদুল ইসলাম তুহিন বলেছেন, দেশের পরিবর্তন আনতে হলে যুবসমাজকে কুরআন-হাদিসের আলোকে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। সুদ-ঘুষমুক্ত ব্যবসা ও ন্যায়পরায়ণ নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) মৌলভীবাজার পৌর অডিটোরিয়ামে ইসলামী যুব মজলিস
মৌলভীবাজার জেলা শাখার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সভা ও যুব সমাবেশে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট ও বৈষম্য সমাজকে গ্রাস করছে। এ ক্ষেত্রে যুব সমাজকেই সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ বিশ্বের যত বড় বড় অর্জন সব এসেছে যুব সমাজের হাত ধরেই। তাই দেশ ও জাতির এমন ক্রান্তিকালে দেশের নতুন প্রজন্মকেই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। বিশেষ কওে সমাজ পরিবর্তনে যুব সমাজকে আরো এগিয়ে আসতে হবে।
ইসলামী যুব মজলিস মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে জেলার বাছাইকৃত কর্মীদের নিয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সভা ও যুব সমাবেশ ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব মজলিসের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি প্রিন্সিপাল মো. এহসানুল হক।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা শামছুজ্জামান চৌধুরী, ইসলামী যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো. মহিউদ্দিন জামিল, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য (মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী) প্রিন্সিপাল মাওলানা আহমদ বিলাল, খেলাফত মজলিসের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা ফখরুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ মুহিবুল ইসলাম ও জেলা সহ-সাধারণ মাওলানা সৈয়দ সাইফুর রহমান।
যুব মজলিসের জেলা সেক্রেটারি সৈয়দ আতহাওয়ার জাকওয়ানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা শামছুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দেশের মানুষ ইসলামকে ভালবাসে ও ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করে। এখন প্রয়োজন ইসলামী চেতনা ধারণ করা এবং এর কল্যাণমুখী কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামের প্রকৃত রূপ তুলে ধরা। সবার মাঝে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অনুভূতি জাগ্রত করা। মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে যুবকদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সিলেট বিভাগীয় জোন পরিচালক মো. মহিউদ্দিন জামিল বলেন, ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় ন্যায়বিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে। নেতৃত্বের পরিবর্তন আনতে হলে আমাদের যুবসমাজকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হবে। ইসলামই পারে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি কল্যাণকর সমাজ গঠন করতে। সুতরাং সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়তে হলে যুব সমাজকেই সবচেয়ে বেশি ত্যাগ শিকার করতে হবে।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, ইসলামই মুক্তিকামী মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল। প্রতিটি যুবকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। ভ্রাতৃত্ববোধকে ধারণ করে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে আমাদের সকল তৎপরতা পরিচালনা করতে হবে। হিংসা-বিদ্বেষ, লুটপাট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।
প্রশিক্ষণ সভার শুরুতে ইসলামের আলোকে জীবন ও যৌবন বিষয়ে দারসুল কোরআন পেশ করেন জামেয়া দ্বীনিয়া মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মাওলানা সৈয়দ মাজদুদ আহমদ রাফিদ। ‘মুসলিম যুব সমাজের ক্যারিয়ার গঠন ও দক্ষতা উন্নয়ন’ বিষয়ে আলোচনা করেন সংগঠনের সিলেট বিভাগীয় জোন পরিচালক মো. মহিউদ্দিন জামিল এবং ইসলামী সংগঠনে নেতৃত্ব আনুগত্য ও ত্যাগ বিষয়ে আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি তাওহীদুল ইসলাম তুহিন।
আরো বক্তব্য দেন শ্রমিক মজলিসের জেলা সভাপতি মাওলানা এম এ রহিম নোমানী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের মৌলভীবাজার শহর বায়তুলমাল সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, যুব মজলিস মৌলভীবাজার জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি এম খসরু, সহ-সভাপতি মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম. জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সিহাব উদ্দিন, মুজাহিদুল ইসলাম মামুন, জেলা অর্থ সম্পাদক আহমেদ রেজা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক নুহ বিন হোসাইন, প্রকাশনা সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ, অফিস সম্পাদক তালহা আহমদ চৌধুরী।
উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য দেন কমলগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আনিসুল ইসলাম চৌধুরী শাকের, মৌলভীবাজার শহর শাখার সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান তরফদার খালেদ, শমসেরনগর সাংগঠনিক থানা শাখার সেক্রেটারি মোজাম্মিল হক জালালী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা সভাপতি মুস্তাকিম আল মুনতাজ, বড়লেখা উপজেলা সভাপতি মাওলানা আবুল হাসান হাদী, সেক্রেটারি মো. এনামুল হক (মেম্বার), শ্রীমঙ্গল পৌর সভাপতি মাহমুদুল হাসান নাঈম, রাজনগর উপজেলা সহ-সভাপতি মুফতি এবাদ ফারুকী এবং মৌলভীবাজার সদর উপজেলা সেক্রেটারি হামজা বিন হোসাইন। সভায় হাতে কলমে শিক্ষা, গ্রæপ ডিসকাশন, কর্মীদের মানোন্নয়নসহ বিবিধ অ্যাজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রশিক্ষণ সভা সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে বেলা ১টায় শেষ হয় এবং দুপুর ২টায় যুব সমাবেশ শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় জেলা সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্তি হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সাংগঠনিক থানা শাখা থেকে বাছাইকৃত দুইশ কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
কেকে/ এমএস