বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বর্তমানে তরল ও প্রবল অনিশ্চয়তার আবরণে ঢাকা। পরস্পরবিরোধী অবস্থান, আদর্শহীন উদ্যোগ এবং অদৃশ্য শক্তির হস্তক্ষেপে রাজনীতির দিকনির্দেশনাই যেন লন্ডনের বিখ্যাত ঘড়ি বিগ বেন-এর কাঁটার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারিত হচ্ছে! এক পত্রিকার এই শ্লেষযুক্ত মন্তব্য হয়ত কৌতুকের ছলে বলা, কিন্তু এর আড়ালে লুকানো সত্য গভীর।
দেশের ৯৮ শতাংশ রাজনৈতিক দল নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছিল। এর বাইরে ছিল কেবল একটি ধর্মভিত্তিক দল এবং নবগঠিত এনসিপি। তাদের দাবি ছিল, জুলাইয়ের মধ্যেই নতুন সংবিধান ঘোষণা হোক, এরপর গণপরিষদ ও স্থানীয় নির্বাচন হোক এবং জাতীয় নির্বাচন হোক এপ্রিল মাসে। বর্তমানে ড. ইউনূস নিজেও এ এপ্রিলে নির্বাচনের দাবির সুরে কথা বলেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে এই ‘‘‘এপ্রিল’-এ ভোট’’ পরিকল্পনা, সেটি কার পরিকল্পনা? কার ইচ্ছা? জনগণের না প্রভুদের?
দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপি শুরু থেকেই বলে আসছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচন কখনো হয়নি। কারণটা সহজ—ওই সময়ে থাকে গ্রীষ্ম, রমজান ও পাবলিক পরীক্ষা। শুধু প্রশাসনিক ও পরিবেশগত দিক দিয়েই নয়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্যও এটি অনুপযুক্ত।
এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় বিপদ হবে তখন, যখন সাম্রাজ্যবাদী ও সাম্প্রদায়িক
শক্তি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে, ক্ষমতার সংযোগস্থলে নিজেদের প্রবেশ
ঘটাবে, আমাদের ভেতরে-বাইরে সব জায়গায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। তখন
গণতন্ত্র, অংশগ্রহণ, প্রতিনিধিত্ব—সব হবে কাগুজে শব্দ। এ মুহূর্তে সবচেয়ে
জরুরি হলো, জনগণের ম্যান্ডেটযুক্ত একটি নির্বাচিত সরকার গঠন। আর এ সরকারের
অধীনেই হবে দরকারি সংস্কার, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও শাসন কাঠামোর পর্যালোচনা।
স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা; গালভরা কথার ফুলঝুরি নয়, জবাবদিহির কাঠামো—এটাই চাই।
তাই বলব, কম হোক, কিন্তু ভালো হোক। এবং তা হতে হবে, নির্বাচনের মাধ্যমেই।
নির্বাচন কমিশনও প্রাথমিকভাবে ২০২৫-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২৬-এর জুন সময়কালকে উপযুক্ত বলে বিবেচনা করছিল, যেহেতু ক্ষমতায় এসেই ড. ইউনূস এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বামপন্থিদের যুক্তিও ছিল—নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম কাঠামোগত সংস্কার করে ডিসেম্বরেই ভোট গ্রহণ হোক। এটি ছিল স্বাভাবিক প্রস্তাব—যুগপৎ প্রশাসনিক প্রস্তুতি, রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমন এবং অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিতের সময়সীমা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এখনো কোনো রোডম্যাপ নেই, তারিখ নেই, বরং রাজনৈতিক ভাষণে ভাষণে বিভ্রান্তি ও অস্পষ্টতা আরো ঘনীভূত হচ্ছে। অনেকেই সন্দেহ করছেন, এপ্রিলেও হয়ত নির্বাচন হবে না।
এ প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূসের সাম্প্রতিক লন্ডন সফর আরো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বলা হচ্ছিল, তিনি সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করবেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার তার সঙ্গে দেখা করেননি। এটা নিয়ে নানা ধোঁয়াশার মধ্যে মানুষকে রাখা হলো। অথচ দেশে ফিরেই তার সহযোগী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক ঘোষণায় জানান—পাচারকারীদের সঙ্গে আপস করেই অর্থ উদ্ধারের পথ খোঁজা হবে। এর আগেই বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ঘোষণা হয়েছিল। এটিকে কেউ কেউ ‘প্রাগম্যাটিক রিয়ালিজম’ বললেও, থিংক ট্যাংক সিপিডি ও সানেম একে ‘অনৈতিক’ বলেই চিহ্নিত করেছে।
দেশের অর্থনীতি এক অনিশ্চিত মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। ১০ দিনের ঈদ ছুটি, ব্যাংক ও বাণিজ্য বন্ধ, বেড়ে চলা বেকারত্ব ও দারিদ্র্য—এসব মিলিয়ে মানুষ দিশেহারা। কেউ কেউ স্বস্তি নিচ্ছেন এই ভেবে যে, দ্রব্যমূল্য খুব বেশি বাড়েনি। কিন্তু পচে যাওয়া বিক্রি না হওয়া আমের মতো অর্থনৈতিক মন্দা এক ভয়ংকর বিপর্যয়ের বার্তা দিচ্ছে।
মূল্যস্ফীতির বিপরীতে মন্দার প্রতিক্রিয়া নিয়েও কেউ ভাবছে না। অথচ অর্থনীতির পাঠ্যপুস্তকে বহু আগেই লেখা হয়েছে—‘‘গ্রথ অ্যাট দ্য কস্ট অব স্ট্যাবিলিটি অর স্ট্যাবিলিটি অ্যাট দ্য কস্ট অব গ্রথ—নেইদার ইজ ডিজারেবল।’’
অন্যদিকে, সীমান্ত নিয়ে রাষ্ট্রের অবস্থানও ধোঁয়াশে। সেনাপ্রধান বলেছেন, তাদের বাহিনী দীর্ঘদিন মাঠে থাকলে সমস্যা; তাই দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন। একইসঙ্গে পরামর্শকরা বলছেন, ‘মানবিক করিডোর’ নয়, বরং ‘প্যাসেজ’ দেওয়া হবে।
তবে নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশ বাস্তব কারণে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, যদিও রাষ্ট্রীয়ভাবে এখনো আমরা মিয়ানমারের সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে চলছি। এর মানে দাঁড়ায়—আরসার সঙ্গে যোগাযোগ মানে এক প্রকার পররাষ্ট্রনীতি ও সার্বভৌমত্বের ভারসাম্য হারানোর ঝুঁকি। এ বিষয়ে কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা আজও আসেনি।
ডাবলমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল নিয়ে নানা গুজব এবং চটকদার প্রতিশ্রুতিতে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে বলা হচ্ছে এতে দুর্নীতি হচ্ছে, আবার অন্যদিকে বলা হচ্ছে এতে আয় হচ্ছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে। এরপর হঠাৎ এক বিনিয়োগ সম্মেলনে স্বপ্ন দেখানো হলো—চট্টগ্রাম বন্দর হবে “দ্বিতীয় সিঙ্গাপুর”!
এই স্বপ্ন কতটা বাস্তবধর্মী? কেউ বলছেন না যে চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের স্ট্র্যাটেজিক স্নায়ুকেন্দ্র। এটির মালিকানা, নিয়ন্ত্রণ অন্যের হাতে তুলে দেওয়াটা আত্মঘাতী হতে পারে। বিনিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ রেখেই উন্নয়ন সম্ভব। কিন্তু এই মুহূর্তের সরকার সেই পথ নিচ্ছে না।
নারীঘটিত বিষয়ে সারোয়ার তুষারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। তিনি নিজেকে ‘জনতার প্রতিনিধি’ হিসেবে পরিচয় দিলেও, তার অবস্থান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ‘কভার ফায়ার’ হিসেবে কাজে দিচ্ছে কি না, তা এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারোয়ার তুষার বলছেন—‘আমি ভুল করেছি, কিন্তু আমাকে মব ট্রায়াল করবেন না।’ এই বক্তব্যের প্রতিধ্বনি তুলে অনেকেই বলছেন—‘রাজনৈতিক বিরোধিতাও শিষ্টাচারের মধ্যে হওয়া উচিত।’ কথাটা শুনতে ভালো। কিন্তু আমার জিজ্ঞাসা—এই শিষ্টাচারের বোধ হঠাৎ আজই কেন জাগ্রত হলো?
যখন শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রবীণ নাগরিককে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে রক্তাক্ত করা হচ্ছিল, তখন তুষার সাহেব কোথায় ছিলেন? যখন হাজার হাজার শিক্ষককে কর্মস্থল থেকে বের করে দিয়ে জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানো হচ্ছিল, তখন কি তার বিবেকে সামান্য কাঁপন হয়েছিল? তখন কি কেউ বলেছিল—‘না, না, এটা শিষ্টাচার নয়, এভাবে মানুষকে লাঞ্ছিত করা যাবে না?’ না, কেউ বলেনি। বরং তখন ‘জনতার রোষ’ বলে এক বিভীষিকাময় রাজনৈতিক হুজুগের নাম দিয়ে, এসব বর্বরতাকে গৌরব হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল। এখন, যখন সেই দানব যার জন্ম আপনি দিয়েছেন, তার থাবা আপনার শরীরেও পড়েছে—তখন আপনি আর্তনাদ করছেন ‘মব ট্রায়াল নয়’। দুঃখিত, ইতিহাস এতটা সহানুভূতিশীল নয়। দানবকে জন্ম দেওয়া যায়, কিন্তু তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
আপনার নেতারা যখন ‘একটা দুইটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল, তখন আপনি নিশ্চুপ ছিলেন। আপনার দলের ব্যানারে যখন প্রবীণ অধ্যক্ষকে রাস্তায় এনে পেটানো হচ্ছিল, তখন আপনি এটিকে ‘বিপ্লবের গর্জন’ বলেছিলেন। আজ সেই বিপ্লব আপনার দেহে আঁচ ফেললে আপনি বলছেন ‘মানব মর্যাদা রক্ষা করুন’? এমন দ্বিচারিতা রাজনৈতিক শালীনতা নয়, এটি হচ্ছে ন্যায়ের ওপর থুতু ছিটান।
বাংলাদেশে মব কালচার নতুন কিছু নয়। কিন্তু একে সাংগঠনিক রূপ দিয়ে, পরিকল্পিত সহিংসতার মাধ্যমে যেভাবে মানুষের ঘরে আগুন, শরীরে লাঠি, মুখে থুথু ছুড়েছেন আপনারা—তা নজিরবিহীন। এ দেশের জনগণ ৫০ বছর ধরে শিখেছে কীভাবে মনের ক্ষোভকে আইনের মধ্যে রাখা যায়।
আপনারা সেই শিক্ষাকে পদদলিত করে, রক্তপিপাসু জনতার নামে বর্বরতা চালিয়েছেন। যখন মানুষ গরু হয়ে ওঠে, তখন বুদ্ধির জায়গা থাকে না। আপনি নিজেই সেই পশুতার মঞ্চ নির্মাণ করেছেন। আজ আপনি কাঁদছেন। বলছেন, ‘আমাকে আঘাত করো না।’ কিন্তু প্রশ্ন হলো—আপনার নির্মিত মঞ্চে যারা পিটুনি খেয়ে রক্তাক্ত হয়েছিল, তাদের জন্য আপনি একবারও কি বিবৃতি দিয়েছেন?
আজ আপনার সহকর্মী নারীদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে—এটা নিন্দনীয়, অবশ্যই। কিন্তু স্মরণ রাখবেন, আপনার রাজনীতির হাত ধরেই নারী শিক্ষককে সবার সামনে টানাহেঁচড়া করে লাঞ্ছিত করা হয়েছিল। তখন আপনি আনন্দে সেলফি তুলছিলেন, পোস্ট দিচ্ছিলেন—‘জয় জনতার।’
কোনো সমাজে দানব জন্মালে, দানব একা কাউকে ছেড়ে কথা বলে না। সে লাফিয়ে বেড়ায়। কখনো শত্রুর দিকে, কখনো মিত্রের দিকেও। আপনারা যে আগুন জ্বালিয়েছেন, সেটাই এখন আপনার ঘর ছুঁয়ে যাচ্ছে। এ আগুন আপনার কাছে শুধু পোড়ার অনুভূতি এনেছে, কিন্তু জনগণের ঘরে এনেছে ছাই, শূন্যতা ও দীর্ঘশ্বাস।
বক্তব্য একটাই—মব ট্রায়াল বন্ধ হোক, অবশ্যই। কিন্তু ইতিহাসের দায় এড়িয়ে নয়। মব ট্রায়াল এক ধরনের দানবীয় জনতা-মনস্তত্ত্ব। এটি যে কোনো প্রান্তিক, দুর্বল বা মতবিরোধী মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আপনি যদি সত্যিকারের রাজনৈতিক নেতা হয়ে উঠতে চান, তবে আপনাকে প্রথমে নিজের দানবগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই হবে।
সম্প্রতি ড. ইউনূস বলেছেন—“বাংলাদেশের মানুষ সরকারকে শত্রু ভাবে”। এই বক্তব্য শুধু ভুলই নয়, বিপজ্জনকও। এটি যেন কোনো নির্বাচিত সরকার নয়, বরং এক ধরনের ‘ডিপ স্টেট’ প্রশাসনের স্বীকৃতি, যারা জনগণকে না প্রতিনিধিত্ব করে, না ভয় পায়।
জনগণের পক্ষে কথা না বলে, বরং জনগণকে অবিশ্বস্ত ও শত্রুভাবাপন্ন বলে চিহ্নিত করা, এটি এক ধরনের আত্মঘাতী বয়ান। এটি যেন প্রতিষ্ঠা করতে চায়, ক্ষমতা জনগণের জন্য নয়—জনগণ যদি ভালো না বোঝে, তাহলে তাদের উপরে ক্ষমতা চাপিয়ে দাও। এই মনোভাবই জনগণের বিচ্ছিন্নতার জন্ম দেয়।
বর্তমান স্বল্পকালীন সরকার হঠাৎ করে নানা সংস্কারের কথা বলছেন। ই-গভর্ন্যান্স, সংস্কার, দ্রুত আইন—সব কিছু এখনই করতে চাওয়া হচ্ছে। যদিও তাদের মূল দায়িত্ব ছিল কেবল নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন। এই সরকার একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন, যার মূল বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত ছিল নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং সংযম।
সুশীল সমাজ ও এনজিও উপদেষ্টাদের দিয়ে রূপকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এই কাজ নির্বাচিত সরকারের, যারা থাকবে জনগণের ম্যান্ডেট ও জবাবদিহিতার আওতায়, যাদের কাজ হবে স্বচ্ছতা ও বিরোধী দলের চেক এন্ড ব্যালেন্স বজায় রাখা। এই সব পদক্ষেপ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, লুকোচুরি পরিকল্পনা আসলে শাসনের একটা বিকল্প কাঠামো তৈরি করছে, যেখানে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু নির্বাচন জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী নয়, বরং বিদেশি চাপ, অন্তরালের রাজনীতি আর স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সুবিধা অনুযায়ী।
এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় বিপদ হবে তখন, যখন সাম্রাজ্যবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে, ক্ষমতার সংযোগস্থলে নিজেদের প্রবেশ ঘটাবে, আমাদের ভেতরে-বাইরে সব জায়গায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। তখন গণতন্ত্র, অংশগ্রহণ, প্রতিনিধিত্ব—সব হবে কাগুজে শব্দ। এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো, জনগণের ম্যান্ডেটযুক্ত একটি নির্বাচিত সরকার গঠন। আর এ সরকারের অধীনেই হবে দরকারি সংস্কার, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও শাসন কাঠামোর পর্যালোচনা। স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা; গালভরা কথার ফুলঝুরি নয়, জবাবদিহির কাঠামো—এটাই চাই। তাই বলব, কম হোক, কিন্তু ভালো হোক। এবং তা হতে হবে, নির্বাচনের মাধ্যমেই।
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন
কেকে/ এএম