সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
খোলাকাগজ স্পেশাল
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি
চ্যালেঞ্জ শুরু ইসির
শরীফ আহম্মেদ ইমন
প্রকাশ: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৪০ পিএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে অনুষ্ঠিত বিগত তিনটি নির্বাচন ছিল ত্রুটিপূর্ণ ও বিতর্কিত। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভোট ডাকাতির দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এ তিনটি নির্বাচন। এ তিন নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিতর্কিত হয়েছে নির্বাচন কমিশনও। 

গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এ নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। 

তিনি বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকলেও ইসি তার প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে। 

বুধবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি জানান, যেদিন ভোট গ্রহণ করা হবে, তার মাস দুয়েক আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ এম এম নাসির উদ্দিন নির্বাচনের চলমান প্রস্তুতির অগ্রগতিও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা সৃষ্টি করা, ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা, এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করা এগুলোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন। তবে তারা আশা করছেন, আগামী নির্বাচন আয়নার মতো স্বচ্ছ হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আরো কয়েক মাস সময় আছে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন।

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন আরো জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক বড় কাজগুলোর মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ পর্যায়ে, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কাজ চলছে, কেনাকাটাও চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বড় প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো শেষ হয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন। 

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়, ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণ চায়। 

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এমন একটি নির্বাচন করতে চাই, যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। উল্লেখ্য, গত তিনটি প্রহসনমূলক নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেননি; বিশেষ করে ২০০৮ সালের পর যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তারা এ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের নির্বাচনটি হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক, যাতে প্রান্তিক ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীসহ সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।’ 

ভাষণে সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে এ দেশের সব নাগরিক যেন একটি ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার কাজে সফলভাবে এগিয়ে যেতে পারে, সে জন্য সবার দোয়া চান প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখরভাবে সম্পন্ন করা যায়, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করা হবে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এবারের নির্বাচন যেন আনন্দ উৎসবের দিক থেকে, শান্তি-শৃঙ্খলার দিক থেকে, ভোটার উপস্থিতির দিক থেকে, সৌহার্দ ও আন্তরিকতার দিক থেকে দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে, সে জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করতে তারা সবার মানসিক প্রস্তুতি ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন শুরু করবেন। 

প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার আয়োজন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ যে আবার দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তার বড় কারণ হলো, আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ঐতিহাসিক অবদান। নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে।’ 

এর আগে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান হলে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে। এবার প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করেই বলেছেন, রোজার আগে নির্বাচন হবে। 

এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে পুলিশ সুপার (এসপি) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) লটারির মাধ্যমে বদলি ও পদায়ন করা হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে উপলক্ষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৮ লাখ সদস্য কাজ করবে। নির্বাচন জাতীয় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য যা যা করার দরকার তা করা হবে। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন সে অনুযায়ী আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।’ 

নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখতে ঢাকায় আসছে ইইউ দল : 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল ঢাকা সফরে আসছে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইইউর এই পর্যবেক্ষক দলে তিনজন বিদেশি এবং চারজন স্থানীয় মিলিয়ে সাতজন থাকবেন এবং দলটি আগামী ৭ অক্টোবর বাংলাদেশে তাদের প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষণ মিশন শেষ করবে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা যায়, ইইউর পর্যবেক্ষক দলটি বাংলাদেশ সফরকালে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ পরিবেশ রয়েছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবে। আর এ অনুসন্ধানী সফরের ভিত্তিতে ইইউ সিদ্ধান্ত নেবে, তারা বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে কি না। সফরকালে দলটি নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে। 

গত সোমবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রি-ইলেকশন অবজারভার টিম সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আসবে। সাত সদস্যের এ দলে তিনজন বিদেশি ও চারজন স্থানীয় পর্যবেক্ষক থাকবেন। সচিব আরো জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আজ এ তথ্য তারা পেয়েছেন।

দলটি আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি ও সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনো নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌঁছায়নি।

বিগত তিন সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেটদের তথ্য চেয়েছে ইসি : ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবং সব জেলা প্রশাসকদের কাছে বিগত ৩ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ম্যাজিস্ট্রেটদের তথ্য চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত সোমবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে ইসি জানায়, ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানার মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পক্ষ থেকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল জেলা/মেট্রোর নির্বাচনি এলাকার নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটদের নাম, পিতা-মাতার নাম, স্থায়ী/বর্তমান ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও মোবাইল নম্বরের তথ্য সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়। তাই এসব কর্মকর্তার তথ্য পাঠানোর জন্য বলা হলো। 

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  ফেব্রুয়ারি   নির্বাচন   প্রস্তুতি   চ্যালেঞ্জ   ইসি  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি
জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে : তানভীর হুদা
মৌলভীবাজারে জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের স্মারকলিপি
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close