সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
খোলাকাগজ স্পেশাল
পুশইনের নেপথ্যে মুসলিম নিধন
খোলা কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৯:১৯ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশি অনুপ্রেবেশকারী দাবি করে অবৈধভাবে পুশইন চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। সব কূটনৈতিক শিষ্টাচার, আন্তর্জাতিক বিধি ও বাংলাদেশে একাধিক বার্তা সত্ত্বেও পুশইন চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। কোনোভাবেই ভারতের এ অমানবিক আগ্রাসী কর্মকাণ্ড রোধ করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে এবার খোদ ভারতের মধ্যেই প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে। দেশটির পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশি অভিযোগে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী মুসলমানদের হেনস্তা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষী ও  মুসলিম নাগরিকদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হচ্ছে। 

এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, উত্তর প্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় কাজ করতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের হিন্দি না-জানা, দরিদ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশকে ‘বাংলাদেশি’ বলে অপবাদ দেওয়া ও প্রমাণপত্র চাওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের ওপরে নির্যাতন হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে। 

দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে, গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র এবং ওড়িশা রাজ্যে গত কয়েক মাস ধরে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ সন্দেহে বহু বাংলাভাষীকে আটক করা হচ্ছে, যারা আসলে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। আবার ভারতের বেশ কয়েকজনকে বাংলাদেশে ‘পুশ’ করে দেওয়া হয়েছে এবং তারপরে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে- এমন একাধিক ঘটনাও সামনে এসেছে।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের ছয় বাসিন্দাকে হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রামে আটক করা হয়েছে। তারা মালদা জেলার চাঁচল- এক নম্বর ব্লকের বাসিন্দা বলে দাবি করেছে তাদের পরিবার। তারা সবাই মুসলমান। গত শুক্রবার রাতে সাদা পোশাকের পুলিশ তাদের ঘরে এসে পরিচয়পত্র যাচাই করতে আসে বলে জানান আটক একজনের আত্মীয় মামনি খাতুন। তিনি বলেন, ‘যাদের আটক করেছে, তার মধ্যে আমার দুই মামা আর দুই দাদা আছে। সেদিন রাতে তখন কারও খাওয়া হয়ে গিয়েছিল, কেউ খেতে বসেছিল। সাদা পোশাকের পুলিশ এসে আমাদের আধার কার্ড দেখতে চায়। এরপরে তারা বলে যে থানায় যেতে হবে আঙুলের ছাপ নেবে বলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেড়ে দেবে- এ আশ্বাস দিয়ে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে চলে যায়।’ 

পশ্চিমবঙ্গের ‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক বলেন, ‘পুলিশ আমার কাছে মেনে নিয়েছে যে ওই ছয়জনকে তারা আটক করেছে। আমি রোববার বাদশাহপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনারকে ফোন করেছিলাম। তিনি অবশ্য এটাও বলেছেন যে, ওদের গ্রেফতার করা হয়নি।’

মামনি খাতুন এবং আসিফ ফারুক দুজনেই জানিয়েছেন, ধৃতদের ওপরে শারীরিক নির্যাতন হচ্ছে। মামনি খাতুন বলেন, ‘আমার আত্মীয়দের একজনের কাছে ফোন আছে। চার্জ শেষ হয়ে বন্ধ হওয়ার আগে দু একবার কথা বলতে পেরেছি। ওদের মারধর করা হয়েছে আর দিনে একবার মাত্র খেতে দিয়েছে।’ 

এদিকে আসিফ ফারুক বলেন, ‘পুলিশ কর্মীদের পোশাক কাচা, থানা পরিষ্কার করা ইত্যাদি করা হচ্ছে। একে তো আটক করে রাখা হয়েছে বেআইনিভাবে, তার ওপরে আটক হওয়া ব্যক্তিদের দিয়ে এসব কাজ করানো তো আইনের চূড়ান্ত লঙ্ঘন। আমরা পুরো বিষয়টি মালদায় শ্রম দফতরের যুগ্ম কমিশনারকে চিঠি লিখে জানিয়েছি। এতে যাতে রাজ্য সরকার দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এবং আটকদের ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করে, সেই অনুরোধ জানিয়েছি। আমাদের সন্দেহ হচ্ছে এদেরও না বাংলাদেশে পুশইন করে দেয়।’

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের এক সমাবেশে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত সোমবার অভিযোগ করেন যে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ বলে সন্দেহ করে হেনস্তা করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের অনেক বাসিন্দাকে নানা রাজ্যে আটক করা হচ্ছে এবং বেশ কয়েকজনকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। 

তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলাটা শুধু অপমান নয়, এটা জাতীয় সংহতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। হিন্দিভাষী হলে ভারতীয়, আর বাংলাভাষী হলে বাংলাদেশি- এই মানসিকতা মেনে নেওয়া যায় না।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যারা এ দেশে কাজ করে, বাঁচে- তারা সবাই পশ্চিমবঙ্গের সন্তান। আপনি কে হবেন তা ধর্ম দিয়ে নয়, মনুষ্যত্ব দিয়ে বিচার করা উচিত। বিজেপি ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে মুসলিম-বিরোধী রাজনীতি করছে। বাঙালি মানেই হিন্দু বা মুসলিম নয়। যারা মানুষের রুটি-রুজি কেড়ে নিয়ে ধর্ম বা জন্মভূমি নিয়ে রাজনীতি করছে, তারা প্রকৃত শত্রু।’

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

মধ্যরাতে ঢাবি ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ
ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে : তানভীর হুদা
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close