শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫,
১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: ৫ আগস্ট বিকালে ঘোষণা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র      জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন      গুলিস্তান সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে      গুলিস্তানে মার্কেটে আগুন, নিয়ন্ত্রণে সার্ভিসের ১১ ইউনিট      ৫ আগস্টের মধ্যেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ : তথ্য উপদেষ্টা      যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি      শেখ হাসিনার ফেরার পরিকল্পনা বানচাল      
খোলাকাগজ স্পেশাল
নিরাপদ নয় রাজধানী ঢাকা
শিপার মাহমুদ
প্রকাশ: সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫, ১১:৫১ পিএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জনমনে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে ঘনবসতি এলাকায় কীভাবে সামরিক বাহিনীর বিমান প্রশিক্ষণ চালানো হয়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারাও। অনেকের মতে, এই বিমান দুর্ঘটনা রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা যোবায়ের আহমদ বলেন, আজকের ঘটনায় রাজধানীবাসীকে আরো আতঙ্কিত করে তুলেছে। বলা-ই যায়, এ শহর নিরাপদ নয়, নিরাপদ নয় বসবাসকারী জনসাধারণ। 

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান চালানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত। গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন, তাদের দেখতে যান রুহুল কবির রিজভী। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ প্রশ্ন তোলেন। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ অন্য নেতারা ছিলেন।

রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এ এলাকার মধ্যে প্রশিক্ষণ বিমান দিয়ে উড্ডয়ন শিখবে, এটা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়। এটা বিস্তীর্ণ প্রান্তরে হতে পারে। যশোর, কক্সবাজারের মতো জায়গায় হতে পারে। সেখানে পাশে সমুদ্র আছে, বিস্তীর্ণ জায়গা আছে। কিন্তু এ ধরনের ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় প্রশিক্ষণ বিমানে প্রশিক্ষণ নেবে, এটা আমি কোনোভাবেই যেন মেনে নিতে পারছি না।’

রুহুল কবির আরো বলেন, ‘নেভিগেশন বা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আমি অবশ্যই জানব না। কিন্তু সাদা চোখে যেটা মনে হয়েছে, চারদিকে এত বাড়িঘর, মানুষ থইথই করছে, এর মধ্যে একটা প্রশিক্ষণ বিমানে প্রশিক্ষণ নিতে পারে না। এটা নিয়ে প্রশাসন, সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। দায়িত্বে অবহেলা করলে প্রতিনিয়ত মানুষের জীবন বিপন্ন হতে থাকবে।’

রিজভী বলেন, ‘বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত। আমার মনে হয়, যেসব লোকালয় গড়ে উঠেছে, তা পরিকল্পনার অংশ নয়। এত ঘনবসতি এই এলাকায় হতে পারে না।’

বিএনপির নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরা রক্তের জোগান দেওয়াসহ অন্যান্য সহযোগিতা করছে। দলের কয়েকটি কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে।

অন্যদিকে প্রশিক্ষণে বহু বছরের পুরোনো বিমান ব্যবহার করায় নিজের ক্ষোভ ঝাড়লেন বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফ। গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এতে তিনি লেখেন, ২০২৪ সালের ৯ মে একজন বীর পাইলট, স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ, প্রশিক্ষণ মিশনের সময় একটি যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ বিমানে প্রাণ হারান। শেষ মুহূর্তে তিনি নিজেকে না বাঁচিয়ে জনবহুল এলাকা থেকে বিমানের গতি ঘুরিয়ে দেন। বেঁচে যায় বহু প্রাণ। আজ আবার একই দৃশ্য। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরও প্রাণ হারালেন অন্য একটি যান্ত্রিকভাবে ব্যর্থ বিমানে। ভিন্ন নাম, ভিন্ন তারিখ, কিন্তু গল্পটা একই। একজন দক্ষ, সাহসী, ব্রিলিয়ান্ট পাইলট আর ফিরে এলেন না। তিনি লেখেন, প্রশ্ন উঠছে- ১৯৬৬ সালের চাইনিজ রেপ্লিকা বিমান দিয়ে কি আমরা এখনো পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেব? প্রতিটি প্রশিক্ষণ যদি হয় মৃত্যুর জুয়া, তবে এটা কি কেবল দুর্ঘটনা, না রাষ্ট্রীয় অবহেলা?

বিবৃতিতে আরো লেখেন, এটা কি কেবল যান্ত্রিক ত্রুটি? নাকি বাজেট প্রণয়ন ও বরাদ্দে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের দায়? নাকি প্রতিবার ক্যামেরার সামনে গিয়ে কিছু সহানুভূতিপূর্ণ কথা বলেই দায় সেরে ফেলার সংস্কৃতি?

এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের আকাশে এখনো উড়ছে সত্তর দশকের প্লেন। যেগুলো আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে অচল তো বটেই, প্রশিক্ষণেও অযোগ্য। বিশ্বের অনেক দেশ এসব বিমান ২০-৩০ বছর আগেই রিসাইক্লিং কারখানায় পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমরা? আমরা এখনো আমাদের প্রতিভাবান, অনুপ্রাণিত, উদ্যমী তরুণ পাইলটদের হাতে তুলে দিচ্ছি সেই ভাঙারি প্লেন। এর নাম উন্নয়ন নয়। এর নাম আত্মঘাতী অবহেলা।

বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির এই নেতা লেখেন, একজন পাইলট তৈরি করতে লাগে কোটি কোটি টাকা, বছর বছর সময়, শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তা এবং জাতির সেরা মেধা। আর আপনি সেই প্রাণটা ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছেন স্রেফ বাজেটের কারসাজি আর দায় এড়ানোর সংস্কৃতির কারণে? এই মৃত্যুর দায় কোনো ‘মেইনটেন্যান্স টিম’ বা ‘মরিচা ধরা যন্ত্রাংশের’ নয়। এই দায় সেসব মানুষের, যারা সিদ্ধান্ত নেন, বরাদ্দ দেন, তদারকি করেন আর প্রতিবার চুপ থাকেন।

আমরা জানি, আজও আপনারা হাসপাতালে যাবেন। কিছু সহানুভূতি জানাবেন, ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বলবেন ‘ব্যথিত’, ‘গভীরভাবে শোকাহত’, পরিবারকে সামান্য অনুদান দেওয়া হবে। তারপর? সব আগের মতো চলবে। আরো একটি টেন্ডার হবে, পুরোনো প্লেন কেনার নামে আরো কিছু জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হবে।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, এই যে ‘প্রশিক্ষণ’ চালিয়ে যাওয়া, এই যে ‘আধুনিকায়ন’ নামের প্রহসন সবই এক একটি পরিকল্পিত অবহেলার নামান্তর। এই মুহূর্তে আমাদের দরকার সত্যিকারের জবাবদিহি। প্রতিরক্ষা বাজেটের বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতার পূর্ণ অডিট। সবচেয়ে বড় কথা- প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রকৃত উন্নয়নে অবিলম্বে বিনিয়োগ।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  নিরাপদ   রাজধানী   ঢাকা  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

জুলাই পুনর্জাগরণে কুলিয়ারচরে ‘মা সমাবেশ’
সালথায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন গ্রেফতার
৫ আগস্ট বিকালে ঘোষণা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র
বৈরী আবহাওয়ায় মাছ শিকারে যেতে পারছে না জেলেরা
জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন

সর্বাধিক পঠিত

‘হেফাজতের সাথে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নাই’
‘শুধু নির্বাচনের জন্য জুলাই অভ্যুত্থান হয়নি’
‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
একমণ চালের দামেও মিলছে না এক কেজি ইলিশ
শেখ হাসিনার ফেরার পরিকল্পনা বানচাল

খোলাকাগজ স্পেশাল- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close