রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫,
১৯ শ্রাবণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: এনসিপি-ছাত্রদলের সমাবেশ আজ      নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কাটেনি      এক দফা ঘোষণা      চব্বিশের স্মরণে ২৪ দফা ইশতেহার দেবে এনসিপি      রোববার শাহবাগ এলাকা এড়িয়ে চলার অনুরোধ      ৫ আগস্ট বিকালে ঘোষণা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র      জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন      
খোলাকাগজ স্পেশাল
ইতিবাচক ধারায় অর্থনীতি
সাজেদ রোমেল
প্রকাশ: শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:১৩ এএম
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

স্থবিরতা কাটিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছুটা আশার আলো উঁকি দিচ্ছে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতির চাকা কিছুটা সচল হয়েছে। শিল্প উৎপাদন, রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক দিক নির্দেশ করছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, সীমিত হলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি এবং বৈদেশিক বাণিজ্যে ইতিবাচক ধারা ফিরেছে। সরকারি পরিসংখ্যান, রফতানি আয়ের ঊর্ধ্বগতি, প্রবাসী আয়ের রেকর্ড এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা মিলিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতির গতি কিছুটা সঞ্চার হচ্ছে। যদিও চ্যালেঞ্জ এখনো কাটেনি।

তারা বলছেন, অর্থনীতিতে পূর্ণ উদ্যমে ফিরতে এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির চাপ, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হুমকি এবং কৃষি ও সেবা খাতের দুর্বলতা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি  বেড়েছে অনেকটাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪.৪৮ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ হার ছিল মাত্র ১.৮১ শতাংশ। তিনটি প্রধান খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি এসেছে শিল্প খাতে (৭.১০ শতাংশ), যা অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর মূল চালিকাশক্তি। এ ছাড়া সেবা খাতে (৩.৭৮ শতাংশ) এবং কৃষি খাতেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে (১.২৫ শতাংশ)।

রফতানিতে গতি, পোশাক খাতের নেতৃত্ব

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রফতানি করেছে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক, যা আগের বছরের তুলনায় ১০.৮৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নিটওয়্যার ১৬.১৫ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেনওয়্যার ১৪.১০ বিলিয়ন ডলার।

একক মাস হিসেবে মার্চে রফতানি হয়েছে ৩.৪৫ বিলিয়ন ডলার, যেখানে প্রবৃদ্ধির হার ১২.৪ শতাংশ। এটি প্রমাণ করে, বৈশ্বিক বাণিজ্য চিত্রে অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের পোশাক খাত তার সক্ষমতা ধরে রেখেছে।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পোশাক রফতানি ২৬.৬৪ শতাংশ বেড়ে ১.৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা এ বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ও মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।

রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবাহ

২০২৫ সালের মার্চে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক মাসে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ৩২৯ কোটি ডলার, যা গত বছরের মার্চের তুলনায় ৬৪.৭ শতাংশ বেশি। অর্থপাচার কমে যাওয়া, বিনিয়োগ আস্থা ফিরে আসা ও বৈধপথে পাঠানোতে উৎসাহিত হওয়া এর পেছনে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২১.৭৭ বিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধি ২৭.৬ শতাংশ। রিজার্ভে ফিরছে ঊর্ধ্বমুখিতা। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫.৬২ বিলিয়ন ডলার।

তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, ব্যালান্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম৬) পদ্ধতিতে পরিমাপ করলে এ রিজার্ভের প্রকৃত পরিমাণ দাঁড়ায় ২০.৪৬ বিলিয়ন ডলারে। আইএমএফের এ পদ্ধতিতে স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক দেনা ও অন্যান্য দায় পরিশোধের পর যে অংশটি দেশে ব্যবহারযোগ্য থাকে, সেটাকেই প্রকৃত রিজার্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
 
কমলো বাণিজ্য ঘাটতি

২০২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি ও চলতি হিসাবের নেতিবাচক প্রবণতা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রফতানি ও রেমিট্যান্স আয়ের ইতিবাচক প্রবাহ এবং আমদানি ব্যয়ে স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির বহিঃখাত কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে মোট পণ্য রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩০.৩৭ বিলিয়ন ডলার এবং আমদানি ব্যয় হয়েছে ৪৩.৭৩ বিলিয়ন ডলার। ফলে এ সময় বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩.৭০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৪১ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৪.৩৩ বিলিয়ন ডলার।

চলতি হিসাবের (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট) লেনদেনেও ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে চলতি হিসাবের ঘাটতি নেমে এসেছে মাত্র ১.২৭ বিলিয়ন ডলারে, যেখানে আগের অর্থবছরে এটি ছিল ৪.০৭ বিলিয়ন ডলার। সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারওয়াল ব্যালান্স) ঘাটতিও কমেছে। চলতি অর্থবছরের এ সময় ওভারওয়াল ব্যালান্সে ঘাটতি ছিল ১.১০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের ৪.৪৪ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এটি তো পরিষ্কার অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। জুলাইয়ের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আগস্টের বন্যায় কৃষি, কলকারখানা এবং সেবা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অক্টোবর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হয়। কৃষি ও উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়ে, যার প্রভাব পড়ে রফতানি ও রেমিট্যান্সে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রায় ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ২২ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয় প্রান্তিকে কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতি আরও ভালো করেছে। রফতানি ও রেমিট্যান্স চাঙা হওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য এবং সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল হয়েছে।’

মূল্যস্ফীতির চাপ, তবে আশার বার্তা

মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৩৫ শতাংশ, তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাস দিয়েছে জুনের মধ্যেই তা ৮.৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ এ হ্রাসে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন তারা।

তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সতর্ক করেছে যে, চলতি অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হতে পারে ১০.২ শতাংশ। আমদানি ব্যয় ও বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতা এ চাপের জন্য দায়ী।

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক স্থগিত, তবে উদ্বেগ থাকছেই

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। এতে বাংলাদেশি রফতানিকারকরা কিছুটা স্বস্তি পেলেও, এই ‘মোরাটোরিয়াম’ শেষ হলে বড় সংকট তৈরি হতে পারে।

বিজিএমইএ নেতা মহিউদ্দিন রুবেল বলছেন, ‘এ বিরতি প্রস্তুতির জন্য সময় দেবে।’ তবে এক শীর্ষ রফতানিকারক বলেন, ‘ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, এ সময় বাংলাদেশ কতটা কার্যকরভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষি করতে পারে তার ওপর।’

শুল্ক কার্যকর হলে বাংলাদেশি পোশাকে ৫৩.৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হতে পারে, যা ৪০ বিলিয়ন ডলারের শিল্পের জন্য মারাত্মক হুমকি।

কৃষি ও পাট খাত নিয়ে উদ্বেগ

কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি দ্বিতীয় প্রান্তিকে মাত্র ১.২৫ শতাংশ এবং পাট খাত প্রায় স্থবির। কৃষিপণ্যের রফতানি কমেছে ২৫.৭২ শতাংশ। ইপিবি বলছে, কৃষি ও পাট খাতে পুনরুজ্জীবন ঘটাতে বিশেষ উদ্যোগ দরকার।

বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি

দেশে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ২১ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ, যা ২০০৪ সালের পর সর্বনিম্ন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, গত সাত মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে ঋণ প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং বিশেষ করে গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে এ প্রবণতা আরও গভীর হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.১৫ শতাংশ এবং গত ডিসেম্বর মাসে ছিল ৭.২৮ শতাংশ। ২০২২ সালের শেষ দিক থেকেই এই সূচকে নিম্নগতি দেখা গেলেও ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের গতি কমে গেছে। ফলে শিল্প, ব্যবসা ও উৎপাদন খাতেও ধীরগতি দেখা দিতে পারে।

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, ঋণ প্রবৃদ্ধির এ নিম্নগতি অব্যাহত থাকলে সামগ্রিক অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়বে। বিনিয়োগ কমে যাবে, কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে এবং প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হয়ে উঠবে।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  ইতিবাচক   অর্থনীতি   অর্থবছর  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

এনসিপি-ছাত্রদলের সমাবেশ আজ
নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কাটেনি
এক দফা ঘোষণা
ভেড়ামারায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মা—ছেলের মৃত্যু
‘জনগণই খুনি হাসিনাকে গণভবন থেকে নামিয়ে এনেছে’

সর্বাধিক পঠিত

বাঞ্ছারামপুরের প্রভাবশালী আ.লীগ নেতা পঁচা দেলু গ্রেফতার
উখিয়ায় জামায়াতের পথসভায় জনস্রোত
মৌলভীবাজারে পৃথক দুর্ঘটনায় ২জনের মৃত্যু
‘শিল্পীর দূরদৃষ্টিতে ফেলনা বলতে কিছু নেই’
চাটমোহরে ভাঙা রাস্তা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close