আজ যেই রাজনৈতিক সংগঠনের বিষয়ে লিখতে বসেছি সেটির বয়স প্রায় অর্ধশতাব্দী ছুঁইছুঁই করছে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকা ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল’ নামের সংগঠনটি তার ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে গত ২৭ অক্টোবর ২০২৫ইং তারিখে। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির অঙ্গ সংগঠন হিসেবে ১৯৭৮ সালের ২৭ অক্টোবর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল’ প্রতিষ্ঠা করেন।
দীর্ঘ ৪৭ বছরের পথপরিক্রমায় স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে যুবদলের রাজনীতির একটি নির্মোহ বিশ্লেষণ জরুরি কারণ বাংলাদেশ বর্তমানে এক ঐতিহাসিক যুগ সন্ধিক্ষণ পার করছে যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রাস্বরূপ। আমরা আলোচনা শুরু করতে চাই স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থান-কালে কেন ও কীভাবে জাতীয়তাবাদী শক্তির উত্থান হলো এবং এর জরুরত দিয়ে। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে সফল একটি জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভ করে কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী লীগের রাজনীতি এবং তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ বাঙালি জাতীয়তাবাদ রাষ্ট্র ও সমাজে স্পষ্ট বিভাজন তৈরি করে।
তাদের সামন্ততান্ত্রিক শাসন ও ব্রাহ্মণ্যবাদী রাজনীতি বাংলাদেশকে একটি নিপীড়নমূলক অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে। ফলে ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের একদলীয় বাকশালী সরকার উৎখাত পরবর্তী নানা ঘটনাপ্রবাহে ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পান মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম। শহীদ জিয়া রাষ্ট্র ক্ষমতা অনুশীলনের সুযোগ পেয়েই বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথে পরিচালিত করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। আওয়ামী লীগের ব্রাহ্মণ্যবাদী রাজনৈতিক মতাদর্শ বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিপরীতে বাংলাদেশের সমাজ-রাষ্ট্র কাঠামোতে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ স্থাপন করে বাংলাদেশকে জণগণের রাষ্ট্র বানানোর ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন স্বাধীনতার এই বীর সেনানি।
‘সিপাহী-জনতার বিপ্লব’ গত শতাব্দীর অন্যতম সেরা সামরবিদ জিয়াউর রহমানকে একজন দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতায় রূপান্তরিত করে। জিয়াউর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে জণগণের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা গেলেই কেবলমাত্র সব ধরনের আধিপত্যবাদী ওয়াসওয়াসা অকার্যকর হয়ে পড়বে এ জন্য তিনি দেশের সব শ্রেণি-গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে একটি ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তায় উন্নীত করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত হন। একটি দেশের উৎপাদন ও প্রতিরক্ষার সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ সেই দেশের যুবসমাজ এই দর্শনকে ধারণ করেই উৎপাদনমুখী রাজনীতি, গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে যুব নেতৃত্ব গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদল প্রতিষ্ঠা করেন জিয়াউর রহমান। যুব-ঐক্য-প্রগতি এই স্লোগানকে সামনে রেখে উৎপাদনমুখী রাজনীতি, মুক্তবাজার অর্থনীতি ও গণতন্ত্রের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, মানবকল্যাণমুখী অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জনে প্রত্যেক স্তরে সৎ, যোগ্য, মেধাবী ও নিঃস্বার্থ যুবকদের সমন্বয়ে আদর্শবান নেতৃত্ব গড়ে তোলাই সংগঠটির গঠনতন্ত্রে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জাতীয়তাবাদী যুবদল যুবসমাজকে সংগঠিত করা, গণতান্ত্রিক-সংগ্রামী রাজনীতিতে অংশগ্রহণ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও স্বাধিকার রক্ষা মূলত এই তিনটি ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। বিএনপির যুব শাখা হিসেবে জাতীয়তাবাদী মূল্যবোধ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে যুবদল।
বিএনপির নীতি নির্ধারণী ফোরাম এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী যুবদলকে নেতৃত্ব দেওয়া বেশ কয়েকজন নেতা জায়গা পেয়েছেন যা থেকে এটা সহজেই অনুমেয় যে বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনগুলোর মধ্যে যুবদলের রাজনৈতিক অনুশীলন ও সাংগঠনিক কাঠামো বেশ শক্তিশালী।
১৯৭৮ সালে আবুল কাশেমকে আহ্বায়ক করে জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রথম কমিটি গঠন হলেও পরে আবুল কাশেমকে সভাপতি এবং সাইফুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেওয়া হয়।
১৯৮৭ সালের ২৩ মার্চ কাউন্সিলের মাধ্যমে হওয়া যুবদলের দ্বিতীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন যথাক্রমে মির্জা আব্বাস এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এই সময়ে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে সমগ্র দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার পুরস্কার হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া দেশনেত্রী উপাধি লাভ করেন এবং রাজপথের লড়াই-সংগ্রামে আব্বাস-গয়েশ্বরের জাতীয়তাবাদী যুবদল অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সফল ভূমিকার জন্য ১৯৯৩ সালের ৮ অক্টোবর হওয়া তৃতীয় কাউন্সিলেও আব্বাস-গয়েশ্বর আবারো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আজ তারা দুজনই বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। যুবদলের চতুর্থ কাউন্সিলে বরকত উল্লাহ বুলুকে সভাপতি, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে সাধারণ সম্পাদক এবং খায়রুল কবির খোকনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয় ২০০২ সালে যখন বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনায়। এই কমিটি যুবদলকে তৃণমূল পর্যায়ে সুসংগঠিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে যেখানে ওয়ার্ড পর্যায়ে যুবদলের কমিটি দেওয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী সাংগঠনিক কাঠামোর মজবুত ভিত্তি রচিত হয়।
বর্তমানে বরকত উল্লাহ বুলু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যুগ্মমহাসচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উৎকর্ষ সাধনে তৎপর আছেন। পরের যুবদলের কমিটিগুলো প্রত্যেকটি গঠিত হয় আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে যখন রাষ্ট্রীয় দমনপীড়নের শিকার হয়ে সাংগঠনিক রাজনীতি একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে। যুবদলের পরের আলাল-নীরব কমিটি, নীরব-টুকু কমিটি এবং সর্বশেষ আবদুল মোনায়েম মুন্নাকে সভাপতি ও নুরুল ইসলাম নয়নকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত কমিটি চলমান রয়েছে। শত জেল জুলুম ও নির্যাতনের মধ্যেও জাতীয়তাবাদী যুবদল রাজপথে আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ফ্রন্টলাইনার ছিল।
জুলাই-আগস্ট-২৪ গণঅভ্যুত্থানে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ভূমিকা ছিল প্রণিধানযোগ্য। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার আওয়ামী রেজিমের পতন পরবর্তী বাংলাদেশের নতুন সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সামনে বিভিন্ন ফ্রন্টে নতুন চ্যালেঞ্জ হাজির হয়েছে। নতুন অনেক রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব, দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজ, বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যুবকদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা পাঠ করার সক্ষমতা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের রাজনীতির নতুন ফ্রন্ট হয়ে উঠা, তথ্যপ্রযুক্তি মোটাদাগে এই উপাদানগুলো সামনের রাজনীতিকে আকার দেবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপির অন্যতম শক্তিশালী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদলের পুরোনো প্রণালিতে আবদ্ধ না থেকে নতুন সময়কে ধারণ করতে হবে। রাজনীতিকে শুধু রাজপথের মিছিল, সভা-সমাবেশ, আন্দোলনে সীমাবদ্ধ না রেখে বিশ্লেষণ, গবেষণা, মূলনীতিগত চিন্তার অনুশীলনের মাধ্যমে নতুন দিনের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা, সাংগঠনিক স্থিতিশীলতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করার নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে যুবদলের এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে বুদ্ধিবৃত্তিক সরঞ্জাম তৈরি হয়নি বলেই মনে করেন বোদ্ধারা। বর্তমান সময়ের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, আন্দোলন-সংগ্রামের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সক্ষমতা, সাংগঠনিক অন্তর্নিহিত স্থিতিশীলতা একটি সংগঠনের সামগ্রিক কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে।
যুবদল দীর্ঘসময় ধরে সাংগঠনিকভাবে তৎপর ফলে সংগঠন বড় হয়েছে, সাংগঠনিক রাজনীতির পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক অনুশীলনেও পারদর্শীতা অর্জন করতে পারাটাই হবে তরুণ ও যুব সমাজের রাজনৈতিক চাহিদা পূরণে একমাত্র চ্যালেঞ্জ কারণ দেশের যুব সমাজ এখন অনেক বেশি তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর, ডিজিটাল মননশীল ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। এক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদী যুবদলকে সাংগঠনিক রাজনীতিতে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক, নীতিগত ও প্রযুক্তিপ্রভাবী হতেই হবে। সমসাময়িক যুবকদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য ডিজিটাল প্লাটফর্ম, অনলাইন প্রশিক্ষণ ও চিন্তার ফোরাম তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে, অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক কাঠামো নতুনভাবে পর্যালোচনা করে অধিক প্রতিযোগিতামূলক, জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ করতে হবে।
রাজনীতি, সুশাসন, আইনি অধিকার, নেতৃত্ব উন্নয়নসহ স্থানীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে কর্মী-প্রশিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। নেতাকর্মীদের মধ্যে ন্যায়, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের বিষয়ে ধারাবাহিক শিক্ষামূলক কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। শুধু বক্তব্য সর্বস্ব না হয়ে কর্মসূচিতে ও জনসাধারনের সঙ্গে সংস্পর্শে এসে ‘দেশপ্রেম+দায়িত্ববোধ’ - এক করে প্রচারণা চালাতে হবে। প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মতো গৎবাঁধা পদ্ধতিতে আবদ্ধ না থেকে যুবদের কর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা তৈরি ও প্রযুক্তি শিক্ষার মতো সমাধানমুখী প্রস্তাব নিয়ে আসতে হবে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কিত রাজনৈতিক বোঝাপড়া, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, ডিজিটাল-সাইবার সিকিউরিটিসহ নতুন চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে যুবদলকে। জাতীয়তাবাদী যুবদলকে দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শুধু প্রতিরোধমূলক নয় বরং সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক কৌশল নিতে হবে। দেশের বাইরে অবস্থান করা প্রবাসীদের নিয়ে রাজনৈতিক সম্প্রদায় (চড়ষরঃরপধষ উরধংঢ়ড়ৎধ) তৈরি করতে হবে, যেমন ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যে যুবদলের শাখা গঠন করা। নিজেদের আলাদা সাহিত্য তৈরি করতে হবে, লেখা ও প্রকাশনার জন্য যুবদলের নিজস্ব ওয়েবসাইট, পত্রিকা, ব্লগ, ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুলে কার্যক্রম, চিন্তা ও আদর্শ রিয়েল টাইমে তুলে ধরতে হবে। দুর্নীতি-চাঁদাবাজি, নেতৃত্বের বিকেন্দ্রীকরণ ও নেতৃত্বহীনতা রোধে অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতা অত্যাবশ্যক। বাংলাদেশ আজ এক গভীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নেতৃত্ব সংকটের মুখোমুখি।
গণতন্ত্রের সংকোচন, আইনের শাসনের অভাব, দুর্নীতি, বেকারত্ব ও সামাজিক বৈষম্য আমাদের জাতীয় জীবনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। বিগত প্রায় দেড় যুগব্যাপী চলা গণতন্ত্রহীনতা ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি ভিত্তিমূলকেই ধ্বংস করেছে, রাষ্ট্র কাঠামো আজ বিধ্বস্ত। এমন সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের যে ৩১ দফা কর্মসূচি উপস্থাপন করেছেন তা শুধু রাজনৈতিক রূপান্তরের রূপরেখাই নয় বরং একটি নতুন জবাবদিহিমূলক ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র নির্মাণের কৌশলপত্র। এই ঐতিহাসিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে জাতীয়তাবাদী যুবদলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ, অগ্রণী ও প্রেরণাদায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে হবে।
৪৭ বছরের রাজনৈতিক পথচলায় যুবদল অনেক চড়াই-উৎরাই পার করেছে কিন্তু বর্তমান সময়ে শুধু আন্দোলন-প্রতিবাদ যথেষ্ট নয়, দেশ নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি-গ্লোবালাইজেশন, ডিজিটাল রূপান্তর, যুবপ্রধান জনসংখ্যা, রাজনৈতিক সংস্কার, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় যুবদলকে নতুন যুগের রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে নিজেদের পুনরায় ঢেলে সাজাতে হবে। যুবদল যদি সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করার পাশাপাশি বুদ্ধিভিত্তিক অনুশীলন, জনসাধারণের অধিকার ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সৎ, সাহসী ও মেধাবী নেতৃত্ব তৈরি করতে পারে তাহলে আগামীদিনে বাংলাদেশে যুবদলের নেতৃত্বের মান এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
লেখক: জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক নেতা ও কলামিস্ট
কেকে/এআর