রোববার, ২ নভেম্বর ২০২৫,
১৮ কার্তিক ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

রোববার, ২ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: সরকারের টাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ছেন আসিফ      আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম      আজকের আলোচিত ছয় সংবাদ      গাজা থেকে ফেরত পাওয়া তিন মরদেহ জিম্মিদের নয় : ইসরায়েল      জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে বিএনপি আমাদের বিরোধিতা করেছিল      প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ      জুলাই সনদের প্রয়োজন নেই : মেজর হাফিজ      
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট নয়
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫০ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারো দেখা যাচ্ছে সেই পুরোনো পদ্ধতিতে নির্বাচনকে বানচাল করতে সময়ক্ষেপণ, বিতর্ক তৈরি এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া। এবার সেই কৌশলের অংশ হিসেবে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনের আগে “গণভোটের” দাবি। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অজুহাতে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব তুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই দাবিকে কেন্দ্র করে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংশয়ের আবহ তৈরি হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচন যদি আগামী ফেব্রুয়ারিতে হয়, তাহলে তিন মাসের মধ্যে গণভোটের  আয়োজন করা কতটা বাস্তবসম্মত? দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা, প্রশাসনিক দুর্বলতা, এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির এহেন পরিস্থিতিতে এমন একটি উদ্যোগ কেবল নতুন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, পেছাবে জাতীয় নির্বাচনকে। গণভোট আয়োজনের প্রস্তুতি, প্রচারণা, তদারকি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে যে সময় ও স্থিতিশীলতা প্রয়োজন, তা এই মুহূর্তে দেশের নেই। উপরন্তু, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণভোট প্রসঙ্গে মতবিরোধ স্পষ্ট- যা জাতীয় ঐক্যের বদলে আরো বিভাজন ডেকে আনবে।

জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের সাম্প্রতিক বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে যে, তারা জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি পেছানোর দিকেই ঝুঁকছেন। তারা বলছেন, “গণভোট আগে দিতে হবে” এবং “তারিখ ঘোষণায় যত দেরি হবে, নির্বাচন তত সংকটে পড়বে।” বাস্তবে এই বক্তব্যগুলো গণভোটের পক্ষে নয়, বরং নির্বাচনের বিপক্ষে এক ধরনের পরোক্ষ অবস্থান। এটি সরাসরি নির্বাচনের গতি রুদ্ধ করার রাজনৈতিক অপ কৌশল।

জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব জমা দিয়েছে, তাতে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যেই মতভিন্নতা রয়েছে। বিএনপিসহ বেশ কিছু দল সনদের কিছু ধারা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ফলে এখনই গণভোটের আয়োজন মানে হবে এই মতভেদের আগুনে আরো ঘি ঢালা। রাজনৈতিকভাবে একটি অচলাবস্থা সৃষ্টি করে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করে তোলা।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক বক্তব্যেও এই আশঙ্কার প্রতিধ্বনি শোনা গেছে। তিনি সতর্ক করেছেন, “নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে।” তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জামায়াত ও এনসিপির আচরণ সেই “ভেতরের শক্তি”রই প্রতিফলন কিনা- এ প্রশ্ন উঠতেই পারে।

যদি সত্যিই জনগণের মতামত যাচাই করতে হয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে সময়, অর্থ ও প্রশাসনিক জটিলতা কমবে; একই সঙ্গে জনগণের ইচ্ছাও সরাসরি প্রতিফলিত হবে। কিন্তু নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের দাবি স্পষ্টতই নির্বাচনের গতি রুদ্ধ করার অজুহাত মাত্র।

বাংলাদেশ এখন এমন এক অস্থিতিশীল সময় পার করছে, যেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক পদক্ষেপের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। গণভোটকে কেন্দ্র করে যদি নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টায় কেউ লিপ্ত হয়, তবে তা গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল হবে। তাই সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং সব রাজনৈতিক দলকে এখনই সতর্ক হতে হবে যাতে কোনো শক্তি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বানচাল করতে না পারে।

দেশের মানুষ নির্বাচন চায়, অজুহাত নয়। এখন সময় একটাই- সিদ্ধান্তে একমত হওয়ার, গণভোটের ছলচাতুরী নয়, নির্ধারিত সময়েই একটি অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন।

কেকে/এমএ
আরও সংবাদ   বিষয়:  রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা   জাতীয় নির্বাচন   গণভোট নয়   
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সরকারের টাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ছেন আসিফ
আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম
চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
একাত্তরে এই দেশের মানুষ জামায়াতকে দেখেছে : আমিনুল হক
আজকের আলোচিত ছয় সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

বাঞ্ছারামপুরে বেড়েছে ছিঁচকে চোরের উৎপাত, আতঙ্কে শহরবাসী
আঁওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে স্বামী-স্ত্রীসহ তিনজনের নিয়োগ জালিয়াতি ফাঁস
যারা রাজনীতিতে ধর্মকে ব্যবহার করতে চায় তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে
ফটিকছড়িতে বন্দুক উদ্ধার করে প্রশংসায় ভাসছেন গ্রাম পুলিশ
সরকারের টাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ছেন আসিফ

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close