বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫,
১৩ কার্তিক ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফেরাতে টাইগারদের প্রয়োজন ১৫০ রান      দখলবাজ-চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীরা বিএনপির সদস্য হতে পারবে না : রিজভী      সাভারে সিটি ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাল্টাপাল্টি মামলা      ১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল      নির্বাচন বানচালে বড় শক্তি কাজ করবে : প্রধান উপদেষ্টা      দুর্ঘটনার পৌনে পাঁচ ঘন্টা পর উড়লো সেই ফ্লাইট      অবৈধ মোবাইল সেট বন্ধ হচ্ছে, চালু হচ্ছে এনইআইআর সিস্টেম      
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
সেকাল ও একালের স্লোগান
ড. মো. আনোয়ার হোসেন
প্রকাশ: বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:৫৮ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

স্লোগান হলো স্মরণীয় নীতিবাক্য বা শব্দগুচ্ছের একটি ছোট রূপ, যা কোনো নিরূপিত সংস্কার, লক্ষ্য, বা ব্র্যান্ডকে (পরিচয়) তৎক্ষণাৎ প্রকাশ করার জন্য ক্রমাগত ব্যবহৃত হয়। এটি রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক বা বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত হতে পারে এবং এটি মানুষকে একাত্ম করতে, কোনো প্রসঙ্গে অনুপ্রাণিত করতে, জাগিয়ে তুলতে কিংবা বিশেষ প্রতীকের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করতে সমর্থন করে। এ সময়ে স্লোগান অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়। একটি স্লোগান সহজে মনে রাখার মতো হয়, যা কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা ব্র্যান্ডকে মানুষের মনে দীর্ঘকাল ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি একটি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, বা দেশপ্রেমের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়, যেমন স্লোগান বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম ও জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন। 

স্লোগান শব্দটি উদ্ভূত হয়েছে slogorn থেকে, যা ভূতপূর্ব স্কটিশ গেলিক এবং আইরিশ sluagh-ghairm (sluagh 'army', 'host' Ges gairm 'cry')-এর ইংরেজিকরণ। ইংরেজিভাষীরা অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে থেকে এ শব্দটি কাজে নিয়োগ করে। সেকালে এই শব্দটি বিদ্যমান ছিল ‘কোনো লোকের স্বকীয় কণ্ঠধ্বনি, শব্দগুচ্ছ বা আর্তনাদ’ হিসেবে। মধ্যযুগে সমগ্র ইউরোপ মহাদেশে স্লোগান প্রচলিত ছিল; রাতে বা যুদ্ধের বিভ্রান্তিতে ব্যক্তিদের স্বীকৃতি সুনিশ্চিত করার জন্য ঐগুলো প্রাথমিকভাবে পাসওয়ার্ড রূপে ব্যবহৃত হত।
  
এজগৎ-এ সমগ্র কত স্লোগান বিদ্যমান, তার নির্ভুল সংখ্যা বলা সম্ভব নয়, কারণ স্লোগান প্রেক্ষাপটে নির্মিত ও রূপান্তরিত হয় এবং এর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বাংলাদেশ এবং ভারতীয় উপমহাদেশ ব্যবহৃত সাড়া জাগানো কিছু স্লোগান নিম্নে সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যাখ্যাসহ প্রকাশ করা হলো- 
ইনকিলাব জিন্দাবাদ- স্লোগানের ইনকিলাব (ইংরেজিতে : Inquilab) শব্দটির তাৎপর্য ‘বিপ্লব’। ইনকিলাব জিন্দাবাদ হলো একটি বহুল চর্চিত হিন্দুস্তানি (হিন্দি-উর্দু) শব্দগুচ্ছ, যার অনুবাদ ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’। এটি প্রথম সাহিত্যে ব্যবহার করেন পাকিস্তানের জাতীয় কবি হিসেবে পরিচিত মুহাম্মদ ইকবাল। যদিও প্রাথমিকভাবে এ স্লোগানটি ব্রিটিশ রাজে বামপন্থি কম্যুনিস্টরা ব্যবহার করেন, আজ এটি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে বিক্ষোভের সময় নাগরিক সমাজের কর্মীরা এবং বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের কর্তৃক ব্যবহৃত হচ্ছে।

কথিত আছে, এ স্লোগানটি ১৯২১ সালে উর্দু কবি, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা হাসরাত মোহানি দ্বারা সৃষ্ট। এটি ভগত সিং (১৯০৭-১৯৩১) দ্বারা ১৯২০ এর দশকের শেষের দিকে তার বক্তৃতা এবং লেখার মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়েছিল। এটি হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের অফিসিয়াল স্লোগানও ছিল এবং কমিউনিস্ট একত্রীকরণের স্লোগানের পাশাপাশি অল ইন্ডিয়া আজাদ মুসলিম কনফারেন্সের একটি স্লোগান। এ স্লোগান ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সামর্থ্যতে পরিণত হয়। দীর্ঘস্থায়ী ভারতীয় রাজনৈতিক উপন্যাসগুলোতে, স্বাধীনতার পক্ষের অনুভূতি প্রায়শই এ স্লোগানে চিৎকার করে চরিত্রগুলোর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। পাকিস্তানে বিশেষ করে বামপন্থি ও মৌলবাদবিরোধী আন্দোলনে এ স্লোগান ব্যবহৃত হয়। ভারতে এটি সাম্প্রদায়িকতা ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনেও ব্যবহৃত হয়।

এমনকি বাংলাদেশের ২০২৪ সালে এ স্লোগানটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এন সি পি ইনকিলাব জিন্দাবাদ কে তাদের দলীয় স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করে। 

জয় বাংলা- জয় বাংলা স্লোগান, যা বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম রাজ্যে ব্যবহৃত হয়। জয় বাংলার উৎপত্তি সম্বন্ধে আরো জানা যায় যে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা ছিলেন মাদারীপুরের স্কুল শিক্ষক পূর্ণচন্দ্র দাস। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এর জন্য জেল-জুলুম-নির্যাতনের শিকার হন তিনি। তার আত্মত্যাগ এবং স্বজাত্যবোধে মুগ্ধ হয়ে কারামুক্তি উপলক্ষে কালিপদ রায়চৌধুরীর অনুরোধে কবি নজরুল রচনা করেন ভাঙার গান কাব্যগ্রন্থের ‘পূর্ণ-অভিনন্দন’ (১৯২২) কবিতাটি। এ কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম ‘জয় বাংলা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। 

এক সূত্রে বলা হয়েছে যে ১৯ জানুয়ারি ১৯৭০-এ ঢাকা শহরের পল্টনের এক জনসভায় ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খান তার ভাষণে সর্বপ্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি উচ্চারণ করেছিলেন বলে প্রচলিত আছে। শেখ মুজিবুর রহমান নিজে প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি উচ্চারণ করেন ৭ মার্চ ১৯৭১-এ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের বিশাল জনসভার ভাষণে।

এই স্লোগান-এর উৎপত্তি সম্পর্কে আর একটি তথ্য পাওয়া যায়, তা হলো- কাজী নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় প্রকাশিত নবপর্যায় (১৯৪০) নবযুগ পত্রিকার ৩ বৈশাখ ১৩৪৯ বঙ্গাব্দ (১৯৪২) সংখ্যায় ‘বাঙালির বাঙলা’ নামে প্রকাশিত প্রবন্ধে তিনি (কাজী নজরুল ইসলাম) বলেন-
‘বাঙালিকে, বাঙালির ছেলেমেয়েকে ছেলেবেলা থেকে শুধু এই এক মন্ত্র শেখাও;
এই পবিত্র বাংলাদেশ
বাঙালির-আমাদের।
বাঙলা বাঙালির হোক। বাঙালির জয় হোক। বাঙালির জয় হোক।’
- বাঙালির বাঙলা

আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১-এর প্রদত্ত তার বিখ্যাত সাতই মার্চের ভাষণ সমাপ্ত করেছিলেন ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণ করে। এ ভাষণের পর থেকে এটি সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করে। ২৭ মার্চ ১৯৭১ সালে মেজর জিয়াউর রহমান অস্থায়ী কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে যে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন তার শেষেও তিনি ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন সময় ‘জয় বাংলা’ ব্যবহার করা হতো। এ বেতার কেন্দ্রের স্বাক্ষরসংগীত ছিল জয় বাংলা, বাংলার জয়।

২০২০ সালের ১০ মার্চ জয় বাংলা স্লোগানকে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে গ্রহণের জন্য হাইকোর্ট রায় প্রদান করেন। অর্থাৎ এটি বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান ছিল, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমলে ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর তা স্থগিত করা হয়। ‘জয় বাংলা’ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরও আনুষ্ঠানিক স্লোগান। যে কোনো বক্তৃতা ও বার্তা শেষে দলটির সদস্যরা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথমবারের জন্য বাঙালির জাতীয় সংগঠন ‘বাংলা পক্ষ’ জয় বাংলা স্লোগান দেয়। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে, বিজেপির স্লোগান জয় শ্রীরাম স্লোগানের বিকল্প হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেস জয় বাংলা স্লোগানটি ব্যবহার শুরু করে। নির্বাচনে বিজয়ের পর তিনি এ স্লোগান জয়ে সাহায্য করেছে বলে কৃতিত্বও দেন।

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ-বাংলাদেশ জিন্দাবাদ ব্যবহার বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে থেকেই শুরু হয়েছিল, সংযুক্ত পাকিস্তানের সময়কালে এ স্লোগানটি ফার্সি বংশোদ্ভূত স্ট্যান্ডার্ড বাংলা প্রত্যয় ; জিন্দাবাদ (দীর্ঘজীবী হও), যা কোনো ব্যক্তি বা দেশের নামের পরে স্থাপন করা হয়। এটি বিজয় বা দেশপ্রেম প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ দেশপ্রেমের প্রকাশ হিসাবে বাংলাদেশিদের ও দ্বারা ব্যবহৃত একটি স্লোগান এবং প্রায়ই রাজনৈতিক বক্তৃতায় ব্যবহৃত হয়। এটির ব্যবহার বাংলাদেশ সৃষ্টির আগেই শুরু হয়েছিল। 

২৩ নভেম্বর ১৯৭০ সালে আবদুল হামিদ খান ভাসানী ঢাকার পল্টন ময়দানে পাকিস্তান জিন্দাবাদের পরিবর্তে পূর্ব পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে বক্তৃতা শেষ করেন। 

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ এবং ‘শেখ মুজিব জিন্দাবাদ’ একটি সাধারণ শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৭৫ সালে খন্দকার মোশতাক আহমদের রাষ্ট্রপতিত্বকালে, জয় বাংলার পরিবর্তে বাংলাদেশ জিন্দাবাদকে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান করা হয়। জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রপতির সময়ও এ স্লোগানটি ব্যবহার করা হয়েছিল। বিশেষ করে, তার বক্তৃতার সমাপনী বক্তব্য হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়েছিল। এ স্লোগানটি এখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির দলীয় স্লোগান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।   
                 
নারায়ে তাকবীর- নারায়ে তাকবীর  (Naraye Takbir) একটি ইসলামি স্লোগান, যার অর্থ ‘আল্লাহু আকবার’ (আল্লাহ মহান) এর ঘোষণা। এটি সাধারণত ওয়াজ মাহফিল, ইসলামি জলসা এবং রাজনৈতিক সমাবেশে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়। ‘নারায়ে’ শব্দটি ফারসি শব্দ ‘নারা’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘স্বর’ বা ‘আওয়াজ’ এবং ‘তাকবীর’ শব্দটি আরবি শব্দ, যার অর্থ ‘আল্লাহু আকবার’ বলা বা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা। 

‘নারায়ে তাকবীর স্লোগানটি মুসলিম বিশ্বে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে ওয়াজ মাহফিল, ইসলামী জলসা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশে এ স্লোগান শোনা যায়। এটি মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতি এবং ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। 

‘স্বাধীন বাংলা জিন্দাবাদ’, ‘আযাদ বাংলা জিন্দাবাদ’- তৎকালীন বর্ষীয়ান জননেতা মওলানা ভাসানী ১৯৭১-এর শুরু থেকে ‘স্বাধীন বাংলা জিন্দাবাদ’, ‘আযাদ বাংলা জিন্দাবাদ’ প্রভৃতি স্লোগান ব্যবহার করতেন।    

স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক- স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক স্লোগান । নূর হোসেন ঢাকা শহরের একটি স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করেন এবং ওই দিন পুলিশের গুলিতে তিনি শহীদ হন। তার বুকে লেখা ছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এবং পিঠে লেখা ছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। সেই স্লোগানটি মুহূর্তেই গোটা আন্দোলনের প্রতীক ও প্রতিবাদের ভাষা হয়ে ওঠে। ১০ নভেম্বর দিনটি আজও বাংলাদেশে শহীদ নূর হোসেন দিবস হিসেবে পালিত হয়।

‘মাতৃজাতি, মাতৃভূমি, এবং জনগণ’- যথাক্রমে ‘মাতৃজাতি, মাতৃভূমি এবং জনগণ’ ছিল তিনটি শক্তিশালী আবেগপূর্ণ অনুভূতি। ভারতীয় সংবাদপত্র ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ স্লোগানটি ‘তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ও পৌরসভা নির্বাচনে শাসক বামফ্রন্ট সরকারের পতনে পরোক্ষভাবে’ সাহায্য করেছিল। 

জয় শ্রীরাম- জয় শ্রীরাম একটি সংস্কৃত অভিব্যক্তি যার মানে ‘ভগবানের রামের গরিমা’ কিংবা ‘ভগবান রামের বিজয়’ বোঝানো হয়ে থাকে। এ অভিব্যক্তি বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) হিন্দু জাতীয়তাবাদী স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করলে অভিব্যক্তিটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়া শুরু করে। এ অভিব্যক্তিটি উত্তর ভারতে লৌকিক সম্ভাষণের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ ছাড়া অভিব্যক্তিটি হিন্দু বিশ্বাস ধারণ করার নিদর্শন হিসেবেও ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। 

তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার- ‘স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’ এবং ‘চেয়েছিলাম/চাইতে গেলাম অধিকার; হয়ে গেলাম রাজাকার’ স্লোগান দেয় এবং তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার স্লোগানও দেওয়া হয়েছিল। স্বৈরাচার স্বৈরাচার হলো ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই থেকে বাংলাদেশ কোটা সংস্কার আন্দোলনে ব্যবহৃত একটি স্লোগান, যা শেখ হাসিনা প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের নাতি-নাতনি’ বলার দ্বারা কারণে প্রতিবাদস্বরূপ ব্যবহৃত হয়েছে।

সেকাল বা অতীতের স্লোগান গুলি আমাদের উদ্দীপ্ত করত। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অশ্লীল স্লোগান বাংলাদেশের রাজপথে আবির্ভাব হয়েছে। এতটাই অশ্লীল যে ভদ্রসমাজে তা মুখে আনা যায় না। বাংলাদেশে অশ্লীল স্লোগান আগের জেনারেশনের জন্য বিষয়টা অবশ্যই অস্বস্তিকর। এ সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঘনঘন অশ্লীল স্লোগান ব্যবহার হতে দেখা যাচ্ছে। প্রসঙ্গটি আর লুকিয়ে রাখা মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে নেই; বরং তা অস্বস্তিকর থেকে বিরক্তিকর বিষয়ে উপনীত হয়েছে।

শিক্ষণীয় স্লোগান মানুষের আচরণ ও মনোভাব গঠনে সহায়তা করে, শিক্ষামূলক বার্তা ছড়িয়ে দেয় এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন করে। এটি জ্ঞান, শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস প্রদান করে, যা ভবিষ্যতের নেতা তৈরি করে এবং দেশকে শক্তিশালী করে তোলে। স্লোগানগুলো শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে এবং মানুষকে সচেতন ও শিক্ষিত হতে উৎসাহিত করে। 

স্বমতের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা করতে হবে। আমাদের  নৈতিক শিক্ষা ও ধর্মের দীক্ষা দিতে হবে। সব ক্ষেত্রে যুগ যুগ ধরে চলে আসা মূল্যবোধগুলো সমুন্নত রাখতে হবে। সর্বোপরি অপরকে তথা নতুন প্রজন্মকে সুবচন শেখাতে হবে।

লেখক : প্রাবন্ধিক, কথা সাহিত্যিক

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

মতলবের সাবেক চেয়ারম্যান গ্রেফতার
মহানগর বিএনপির আহবায়ককে হুকুমের আসামী করে মামলা
‘বিগত সময়ে বিদ্যুৎ বিভাগের দপ্তরগুলোতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে’
টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফেরাতে টাইগারদের প্রয়োজন ১৫০ রান
শেখ হাসিনার বিচার শুরু, ফাঁসি হবে : আমান উল্লাহ

সর্বাধিক পঠিত

নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেবে হাবিপ্রবি
শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসআইসিআইপি-বিজিএমইএ’র মতবিনিময় সভা
টানা পাঁচ দিন ভারি বর্ষণের আভাস
গলাচিপায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষ বাশার চাকরি করেন হাইকোর্টে
মাদ্রাসা শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১৫

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close