রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫,
১০ কার্তিক ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যু      ফতুল্লায় ডাইং কারখানায় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬      নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়      চরম সংকটে লবণ শিল্প       নির্বাচনের আগে বড় সংঘাতের শঙ্কা      ‘শিগগিরই’ জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ দেবে ঐকমত্য কমিশন      বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে : তারেক রহমান      
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
দেশে দেশে আন্দোলন, ভারতের জেন-জি প্রজন্ম কেন নীরব
রাফায়েল আহমেদ শামীম
প্রকাশ: রোববার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৪৮ এএম
ছবি : রাফায়েল আহমেদ শামীম

ছবি : রাফায়েল আহমেদ শামীম

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুব সমাজ রাস্তায় নেমে রাষ্ট্র, সমাজ এবং অর্থনৈতিক কাঠামোর বিরুদ্ধে সচেতন প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিচ্ছে। নেপালে যুব সমাজের আন্দোলন সরকারি নীতি পরিবর্তনে এবং প্রগতিশীল সংস্কার বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। 

মাদাগাস্কারে তরুণ আন্দোলন রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব পুনর্বিন্যস্ত করেছে। ইন্দোনেশিয়ায় যুব সমাজের চাকরি সংকটবিরোধী বিক্ষোভ সরকারের নীতি পুনর্মূল্যায়ন এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থান দেখিয়েছে যে, যুব সমাজ রাজনৈতিক সচেতনতার সঙ্গে একত্রিত হলে তা সমগ্র রাষ্ট্রের রাজনৈতিক দিগন্ত পরিবর্তন করতে পারে। এ আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট স্পষ্টভাবে প্রমাণ করছে যে, জেনারেশন জি, যারা প্রযুক্তি, সামাজিক যোগাযোগ এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে সুপ্রস্তুত, তারা রাষ্ট্র ও সমাজ পরিবর্তনের শক্তিশালী বাহন হতে সক্ষম।

ভারতে, যেখানে ২৫ বছরের নিচে প্রায় ৩৭ কোটি যুবক রয়েছে, মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশেরও বেশি, সেই প্রেক্ষাপটে এই প্রজন্মের রাজনৈতিক সক্রিয়তা তুলনামূলকভাবে নীরব। এটি শুধু ব্যক্তিগত ভয় বা অনীহার ফল নয়; বরং এটি বহুমাত্রিক সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের সমষ্টিগত ফল। ভারতীয় জেন-জি প্রজন্মের নীরবতা বিভিন্ন স্তরে প্রকাশ পায়- রাজনৈতিক দমন, সামাজিক বিভাজন, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ধর্মীয় বৈষম্য এবং পূর্বসূরিদের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা- সব মিলিয়ে।

রাজনৈতিক দমন ভারতের যুব সমাজকে সরাসরি আন্দোলনের পথে নামতে বাধা দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, মিছিল-মিটিং এবং ছাত্র সংস্থায় জারি নিষেধাজ্ঞা ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসের প্রাণকেন্দ্রকে নিরসিত করেছে। ‘ভারতে এখন প্রতিবাদ মানেই অনেকের চোখে দেশবিরোধিতা,’- এই অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন দিল্লির শিক্ষার্থী ধৈর্য চৌধুরী। সরকারি নজরদারি এবং দমনমূলক পদক্ষেপ যুব সমাজের মধ্যে একটি সংযমী নীরবতা সৃষ্টি করেছে। একসময় ছাত্ররাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রাণকেন্দ্র হলেও, আজ তা নিস্তেজ। এ শিথিল বা স্তব্ধ অবস্থার মধ্যে প্রায়শই জেন-জি প্রজন্ম কেবল পর্যবেক্ষক হিসেবে নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করে; তাদের নীরবতা প্রকৃতপক্ষে একটি সংগঠিত সংযমের প্রতিফলন।

সামাজিক ও ধর্মীয় বিভাজন যুব সমাজের আন্দোলনকে সীমিত করেছে। বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ যুব সমাজকে একত্রিত আন্দোলনে বাধাগ্রস্ত করছে। মুসলিম সম্প্রদায়কে সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর বাইরে স্থাপন এবং বৈষম্যমূলক নীতি প্রবর্তন যুব সমাজের নৈতিক ও সামাজিক সচেতনতা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কেউ বেকারত্ব নিয়ে, কেউ আঞ্চলিক স্বার্থে প্রতিবাদ গড়ে তুলছে, কেউ সামাজিক অসাম্য বা মুসলিম বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা প্রকাশ করছে। কিন্তু অভিন্ন দাবিতে সংহতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই বৈচিত্র্য বাধ হিসেবে কাজ করছে।

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা যুব সমাজকে নীরব রাখছে। ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, অনিশ্চিত কর্মসংস্থান এবং বিদেশমুখী আকাক্সক্ষা- এসব সামাজিক ও ব্যক্তিগত প্রেক্ষাপট যুব সমাজকে রাজনৈতিক অংশগ্রহণ থেকে দূরে রেখেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ১৮ বছর বয়সি ভোটারের মধ্যে মাত্র ৩৮ শতাংশ নিবন্ধিত হয়েছেন; জরিপ অনুযায়ী প্রায় ৩০ শতাংশ তরুণ রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চাইছেন। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ছাড়া আন্দোলন স্থায়ী হওয়া প্রায় অসম্ভব।

পূর্বসূরির আন্দোলনের অভিজ্ঞতা যুব সমাজকে সতর্ক করেছে। আন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন, ২০১২ সালের দিল্লি ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ এবং ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব আইন ও কৃষি আইনবিরোধী আন্দোলন যুব সমাজকে রাজনৈতিক সচেতন করেছে। তবে পুলিশি দমন, গ্রেফতার এবং ‘দেশবিরোধী’ তকমা তাদের সতর্ক করেছে। ফলে, তারা আপাতদৃষ্টিতে নীরব, কিন্তু তাদের নীরবতা সতর্ক পর্যবেক্ষণ, ন্যায্যতার আকাক্সক্ষা এবং অপেক্ষমাণ শক্তির প্রমাণ। লাদাখে সাম্প্রতিক আন্দোলনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, ক্ষোভ এখনো বিদ্যমান। রাজ্যের মর্যাদা দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালীন সহিংসতা লক্ষ্য করা গেছে। অধিকারকর্মী সোনম ওয়াংচুকের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি ছিল ‘জেন-জি প্রজন্মের চাপা ক্ষোভের বিস্ফোরণ’। কিন্তু দেশের অন্যান্য অঞ্চলে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব এবং সামাজিকভাবে বৈষম্যমূলক পরিবেশ এ ক্ষোভকে স্থায়ী আন্দোলনে রূপান্তরিত হতে দেয় না।

সংগঠনের অভাব যুব সমাজকে বিচ্ছিন্ন ও নীরব রেখেছে। নেপাল বা বাংলাদেশের মতো সংগঠিত নেতৃত্ব না থাকায় ক্ষোভ বিচ্ছিন্ন এবং আংশিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকে। ধর্ম, ভাষা, জাতি এবং আঞ্চলিক স্বার্থের বিভাজন একত্রিত আন্দোলনের পথে বাধা সৃষ্টি করে। কেউ বেকারত্ব নিয়ে, কেউ আঞ্চলিক স্বার্থ নিয়ে, কেউ মুসলিম বৈষম্য বা সামাজিক অসাম্যের বিরুদ্ধে সচেতন- ফলে অভিন্ন দাবিতে ঐক্য গড়ে ওঠে না।

ভারতীয় সমাজবিজ্ঞানী দীপঙ্কর গুপ্তের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যুবশক্তি সব সময় সাময়িক। প্রতিটি প্রজন্ম তার প্রাসঙ্গিক ইস্যুতে জাগে, পূর্বসূরিদের লড়াই বহন করে না। আজকের ভারতের জেন-জি প্রজন্ম আপাতদৃষ্টিতে নীরব হলেও, তাদের নীরবতার ভেতরে রয়েছে তীক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ, ন্যায্যতার আকাক্সক্ষা এবং অপেক্ষমাণ শক্তি।

আন্তর্জাতিক তুলনায় দেখা যায়, ভারতের তরুণরা অনেক ক্ষেত্রে নীরব। নেপালে, মাদাগাস্কারে, ইন্দোনেশিয়ায় এবং বাংলাদেশে যুব সমাজ রাস্তায় নেমে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছে। এসব দেশে সংগঠিত নেতৃত্ব, সামাজিক ঐক্য এবং স্বচ্ছ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যুব সমাজকে আন্দোলনে সক্রিয় করেছে। ভারতের যুব সমাজের ক্ষেত্রে ধর্ম, ভাষা, জাতি এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ কার্যকর আন্দোলনকে সীমিত করছে। ভারতের তরুণরা শিক্ষিত, সচেতন এবং প্রযুক্তিতে দক্ষ। তারা নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয়। রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিবাদের ক্ষেত্রে তাদের নীরবতা একটি রাজনৈতিক সংযম এবং সম্ভাব্য বিপর্যয়ের প্রতি সচেতনতার প্রতিফলন। মুসলিম বিদ্বেষের পরিবেশে তারা সরাসরি আন্দোলন থেকে দূরে থাকে, fearing marginalization, communal backlash এবং সামাজিক দমন।

অপরদিকে, এশিয়ার অন্যান্য দেশ যুব সমাজকে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। নেপালে জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বে সরকার পতনের ঘটনা, মাদাগাস্কারে তরুণ আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নীতি পুনর্বিন্যাস এবং ইন্দোনেশিয়ায় চাকরি সংকটবিরোধী বিক্ষোভ- এসব আন্তর্জাতিক উদাহরণ ভারতীয় যুব সমাজের সম্ভাব্য শক্তিকে প্রতিফলিত করে। কিন্তু ভারতে ধর্ম, জাতি, আঞ্চলিক স্বার্থ এবং মুসলিম বিদ্বেষের কারণে এমন সমন্বিত আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। ভারতের যুব সমাজের নীরবতা কেবল রাজনৈতিক সংযম নয়; এটি সামাজিক, ধর্মীয় এবং অর্থনৈতিক চাপের সঙ্গে সম্পর্কিত। মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ, বৈষম্যমূলক নীতি, সামাজিক বিভাজন এবং অনিশ্চিত কর্মসংস্থানÑএসব যৌথভাবে তাদের নীরব রাখছে। তবুও, এই নীরবতা তাদের রাজনৈতিক চেতনা, ন্যায্যতার আকাক্সক্ষা এবং অপেক্ষমাণ ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে নিস্তেজ করে না।

ভারতের জেন জি প্রজন্মের নীরবতার মধ্যে লুকিয়ে আছে এক তীক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ শক্তি। তারা সমাজের ত্রুটি, বৈষম্য এবং দমনমূলক কাঠামো পর্যবেক্ষণ করছে এবং এক সময় এ শক্তি সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের রূপ নিতে সক্ষম। লাদাখের বিক্ষোভ, নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলন এবং কৃষি আইনবিরোধী আন্দোলনের সময় যুব সমাজের অংশগ্রহণ সীমিত হলেও সচেতনতা ছিল স্পষ্ট। এই নীরবতা ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষমাণ ক্ষমতা, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভারতের যুব সমাজ সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতার দিক থেকে অত্যন্ত তীক্ষ্ম। তারা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক অমর্যাদা এবং মুসলিম বিদ্বেষ- এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং বিপর্যয় এড়িয়ে চলার কৌশল বের করছে। এ নীরবতা কেবল নিষ্ক্রিয়তার প্রতীক নয়; বরং এটি একটি সমন্বিত প্রতিক্রিয়া, যা একদিন রাজনৈতিক চেতনা ও সামাজিক আন্দোলনে রূপান্তরিত হতে পারে। লাদাখের বিক্ষোভ, নাগরিকত্ব আইনবিরোধী আন্দোলন এবং কৃষি আইনবিরোধী প্রতিবাদ- এসব ঘটনায় যুব সমাজের উপস্থিতি সীমিত হলেও, তাদের পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন এবং প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা গেছে।

ভারতের জেন-জি প্রজন্মের নীরবতা একটি কৌশলগত ধৈর্যের পরিচয় বহন করে। তারা জানে যে, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভাজন, মুসলিম বিদ্বেষ এবং বৈষম্য- এসব পরিস্থিতিতে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ডেকে আনতে পারে। তারা অপেক্ষা করছে, পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে, শক্তি ও একতা গড়ে তুলছে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, একই প্রজন্ম নেপাল, বাংলাদেশ, মাদাগাস্কার বা ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থান গ্রহণের মাধ্যমে সরকারের নীতি পরিবর্তনে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছে। ভারতের প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় বিভাজন এবং বৈষম্যমূলক নীতি এ সম্ভাবনাকে আপাতত সীমিত করেছে, কিন্তু নীরবতার ভেতরে লুকিয়ে থাকা শক্তি কখনোই নিস্তেজ নয়।

মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ, সামাজিক অমর্যাদা, আঞ্চলিক বৈষম্য, বেকারত্ব এবং শিক্ষাগত অনিশ্চয়তা- এসব চাপের মধ্যে ভারতীয় যুব সমাজের নীরবতা একটি পর্যবেক্ষণমূলক চেতনা, যা ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষমাণ ক্ষমতা হিসেবে কাজ করবে। তারা সামাজিক ন্যায়, নৈতিক দায়িত্ব এবং প্রগতিশীল সংস্কারের জন্য সতর্কভাবে নিজেদের প্রস্তুত করছে। এ প্রজন্ম একদিন ভারতীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে সেই রূপান্তর ঘটাবে, যা দেশের নীতি, সমাজ এবং সংস্কৃতিকে নতুন দিশা দেখাবে।

শেষ পর্যন্ত বলা যায়, ভারতের জেন-জি প্রজন্ম এখনো নীরব, কিন্তু এ নীরবতা ক্ষয় নয়। এটি একটি সংযমী, বিশ্লেষণধর্মী এবং অপেক্ষমাণ শক্তির প্রতিফলন। মুসলিম বিদ্বেষ, সামাজিক বিভাজন এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে তারা একদিন সামাজিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাবশালী শক্তি হয়ে উঠবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তরুণ সমাজ যেভাবে তাদের শক্তি আন্দোলনে প্রয়োগ করছে, ভারতের যুব সমাজও তার নিজস্ব পথে, সাবধান এবং সংযমীভাবে, সেই শক্তি সংরক্ষণ করছে।

এ নীরবতা, পর্যবেক্ষণ এবং শিক্ষিত সতর্কতা-এগুলো ভবিষ্যতের ভারতীয় সমাজে নতুন দিশা, ন্যায্যতার উদাহরণ এবং প্রগতিশীল শক্তির প্রকাশ ঘটাবে। জেন-জি প্রজন্মের এ অপেক্ষমাণ ক্ষমতা একদিন দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর জন্য উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। যুব সমাজের এ নিঃশব্দ চেতনা, মুসলিম বিদ্বেষ এবং সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতন অবস্থান, এক সময় ভারতের গণতান্ত্রিক ও সামাজিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অতএব, ভারতের যুব সমাজ আপাতদৃষ্টিতে নীরব হলেও, তাদের নীরবতা প্রকৃতপক্ষে শক্তিশালী রাজনৈতিক সচেতনতা, ন্যায্যতার আকাক্সক্ষা এবং সামাজিক পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষমাণ শক্তির প্রতিফলন। আন্তর্জাতিক তুলনা এবং অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায়, তারা প্রস্তুত- একদিন তাদের শক্তি প্রকাশ হবে এবং ভারতের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে সেই পরিবর্তন যুগান্তকারী হবে।

রাফায়েল আহমেদ শামীম অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কলাম লেখক গোবিন্দগঞ্জ গাইবান্ধা।

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ইবিতে সাজিদ হত্যার বিচারের দাবিতে 'অন্ধের তদন্ত যাত্রা' নামক প্রতীকী লাশ মিছিল
ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যু
ফতুল্লায় ডাইং কারখানায় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গেঞ্জি পাচারের সময় পাচারকারী আটক
নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সর্বাধিক পঠিত

বাগাতিপাড়ায় অপপ্রচারের প্রতিবাদ সাংবাদিক নেতা কামরুল ইসলামের
শ্রীমঙ্গলে অপহৃত কিশোরী সিলেট থেকে উদ্ধার, গ্রেফতার দুই
মোংলা থানায় আধুনিক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট উদ্বোধন
বিএনপিকে ‘চাঁদাবাজ’ তকমা কেন দেওয়া হচ্ছে, কারা দিচ্ছে?
কেশবপুরে ছাত্রদল সভাপতির ওপর হামলা

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close