রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫,
১০ কার্তিক ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে বিভিন্ন পরাশক্তি ও এজেন্সি সক্রিয় হবে      আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বানিয়েছে জাতীয় পার্টি : আখতার      আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন গ্রামীণফোনের সিইও      বন্য প্রাণী রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে      যতটা পারি ব্যক্তি পর্যায়ের সিম নিবন্ধন কমিয়ে আনব      মেট্রোরেলে দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা      ট্রাম্পের উপস্থিতিতে থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়ার শান্তি চুক্তি সাক্ষর      
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
নিরপেক্ষ প্রশাসনই নির্ভরযোগ্য নির্বাচনের শর্ত
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:৪৭ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে আবারও সামনে এসেছে পুরোনো কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন নির্বাচনের সময়কার সরকারের নিরপেক্ষতা। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট করে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় যেতে হবে। তার দাবি প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ করার মধ্য দিয়েই জনগণের মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

বিএনপির এই বক্তব্য কেবল তাদের রাজনৈতিক অবস্থান হিসেবে বিবেচনা নিলে চলবে না; এটি দেশের সামগ্রিক নির্বাচনব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গত এক দশকের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো নিয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনকালীন প্রশাসনে দলীয় আনুগত্যের অভিযোগ, পুলিশি তৎপরতায় বিরোধীদের দমন, এমনকি ভোটের দিন ভোটারদের অনুপস্থিতি সব মিলিয়ে গণতন্ত্রের ভিত্তিই নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। নির্বাচন যে একটি উৎসব সেটি দেশের নাগরিকরা ভুলেই গিয়েছিল।

এ বাস্তবতায় বিএনপি প্রশাসনে ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের’ অপসারণ এবং নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি জানিয়েছে, যা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যৌক্তিক দাবি। তবে এ দাবির বাস্তবায়ন শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছায় নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং প্রধান উপদেষ্টার দৃঢ় নৈতিক অবস্থান। কারণ, নির্বাচন কমিশন কিংবা প্রশাসন উভয়কেই একযোগে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন এ ব্যবস্থার অধীনেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তুলনামূলকভাবে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক ছিল। ওই সময় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কমানো গিয়েছিল বলেই ভোটারদের আস্থা ফিরেছিল। পরবর্তী সময়ে এ ব্যবস্থা বিলুপ্তির ফলে নির্বাচনি প্রক্রিয়া পুনরায় দলীয় প্রভাবের কবলে পড়ে। ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল, ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তা বাতিল করে প্রবর্তিত হয়েছিল প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন।

এখন প্রশ্ন হলো, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে কি সেই পুরোনো আস্থা পুনরুদ্ধার সম্ভব? যদি সরকার রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থেকে প্রশাসন ও পুলিশকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে পারে, তবে জনগণ আবারও বিশ্বাস করবে যে নির্বাচন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উৎসব, এটি প্রহসন নয়।

আজ যখন দেশের রাজনৈতিক পরিসর ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে, তখন অন্তর্বর্তী  সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার দাবি কোনো দলীয় দাবি হিসেবে বিবেচনায় নিলে হবে না— এটি জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের অপরিহার্য শর্ত। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব শুধু নির্বাচনের আয়োজন নয়; বরং এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে প্রতিটি নাগরিক নিশ্চিত থাকবে যে তার ভোটের মূল্য আছে।

কেকে/ এমএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

আক্কেলপুর রেলস্টেশন মাস্টার খাদিজার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
সামিরার কোনো দোষ নেই : ডন
ধর্ম ব্যবসায়ী একটি দল ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে : ফেরদৌস মুরাদ
নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে বিভিন্ন পরাশক্তি ও এজেন্সি সক্রিয় হবে
ঘোড়াশালে ফোনে কথা বলতে বলতে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু ‎

সর্বাধিক পঠিত

মোংলা থানায় আধুনিক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট উদ্বোধন
বিএনপিকে ‘চাঁদাবাজ’ তকমা কেন দেওয়া হচ্ছে, কারা দিচ্ছে?
শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের জন্মদিন আজ
কেশবপুরে ছাত্রদল সভাপতির ওপর হামলা
নীলফামারীতে সাংবাদিকদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close