কক্সবাজারের চকরিয়ার উপকূলীয় চিংড়ি জোনে একটি ঘেরের দখল-বেদখলের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দিনব্যাপী গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে সিরাজুল ইসলাম (৩৮) নামের এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত সিরাজুল ইসলাম চিরিঙ্গা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম সওদাগর ঘোনা গ্রামের মো. ওমর আলীর ছেলে। এছাড়াও অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গতকাল শনিবার সন্ধ্যার আগে উপজেলার চিংড়ি জোনের চিরিঙ্গা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সওদাগর ঘোনা এলাকায় সর্বশেষ গোলাগুলি ও হতাহতের ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান- চিংড়ি জোনের সওদাগর ঘোনা এলাকায় লিজবিহীন থাকা বিশালায়তনের একটি চিংড়ি ঘেরের দখল-বেদখলসহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম ও নেজাম উদ্দিন বাহিনীর মধ্যে শনিবার দুপুর থেকে থেমে থেমে গোলাগুলির ঘটনা শুরু হয়। দুই বাহিনীর এই বন্দুকযুদ্ধ চলে সন্ধ্যার আগপর্যন্ত। এ সময় নেজাম উদ্দিনের পক্ষে থাকা সিরাজুল ইসলাম নামের একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
স্থানীয়রা আরো জানান- দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে সারাদিন থেমে থেমে বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তবে নানা কারণে আহতদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ বা স্থানীয়রা।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শতে জানিয়েছেন- লিজবিহীন থাকা চিরিঙ্গা ইউনিয়নের সওদাগর ঘোনা মৌজার বিশালায়তনের একটি চিংড়ি ঘেরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন আলী আহমদ নামের এক ব্যক্তি। মূলত আলী আহমদ তার নিয়ন্ত্রিত ডাকাত-সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর আলম ও তার সশস্ত্র বাহিনীকে দিয়ে ওই চিংড়ি ঘেরের নিয়ন্ত্রণ নিতে পাঠায় শনিবার দুপুরে। এ সময় আরেক সশস্ত্র বাহিনী নেজাম উদ্দিনও সশস্ত্র দলবল নিয়ে একই চিংড়ি ঘেরের নিয়ন্ত্রণ নিতে যায়। তখন থেকেই উভয়পক্ষে থেমে থেমে চলে বন্দুকযুদ্ধ।
সর্বশেষ সন্ধ্যার আগে জাহাঙ্গীর আলম বাহিনীর ছোড়া গুলিতে ঘের এলাকায় প্রাণ হারান নেজাম উদ্দিন বাহিনীর সদস্য সিরাজুল ইসলাম। এ সময় উভয় পক্ষের আরো অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন এবং উভয়পক্ষে দিনব্যাপী বন্দুকযুদ্ধে অন্তত শতাধিক রাউন্ড গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে মুহূর্মুহু গুলির বিকট শব্দে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয় বলে তাদের দাবি।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন- এই ঘটনার পর দুর্গম চিংড়ি জোন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল মাঠে রয়েছে।
ওসি-চকরিয়া আরো বলেন, ‘নিহতের লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এআর