চেষ্টা, অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম বদলে দিয়েছে এক তরুণের জীবন। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ইলিয়াসদী গ্রামের ছেলে আরিফ হোসেন এখন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিত নাম।
মাত্র ১৬ বছর বয়সেই স্বপ্ন বুনেছিলেন অনলাইনে কাজ করার। মামার উপহার দেওয়া একটি স্মার্টফোনে ইউটিউব থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানেন। প্রথমে চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি। বরং ব্যর্থতাকে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে টিউশনি ও বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করে টাকা জমিয়ে ৪০ হাজার টাকায় একটি কম্পিউটার কেনেন। সেখান থেকেই শুরু হয় তার নতুন যাত্রা।
নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা আরিফের পথচলা সহজ ছিল না। বাবার সামান্য আয়ে সংসার চলত কষ্টে। সেই অভাবের ভেতর থেকেই বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে গ্রাফিক ডিজাইন শিখে যাত্রা শুরু করেন আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস ফাইভার ও আপওয়ার্কে। প্রথমে ৫ ডলারের একটি অর্ডার দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে তিনি ফাইভারের টপ রেটেড সেলার। প্রতি মাসে গড়ে ৫০০-৬০০ মার্কিন ডলার আয় করছেন, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা।
আরিফ বলেন, ‘আমার এই সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা আল্লাহর সাহায্য। এ জন্য আল্লাহর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
এখন পর্যন্ত ১০-১৫টি দেশের ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। এতে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখছেন। নিজের সাফল্যকে দেশের গর্ব হিসেবে দেখেন আরিফ।
সোনারগাঁও সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে বর্তমানে তিনি ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে আরিফ বলেন, ‘আমি চাই বেকার তরুণদের ফ্রিল্যান্সিংয়ে দক্ষ করে তুলতে। প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের এই সেক্টরে যুক্ত হওয়া খুবই জরুরি।’
ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী তরুণদের উদ্দেশ্যে তার পরামর্শ, ‘হাল ছাড়বেন না। চেষ্টা চালিয়ে যান। স্কিল বাড়ান, মেধা খাটান, পরিশ্রম করুন। খারাপ সময় আসবে, অপমান আসবে, কিন্তু লেগে থাকলে সফলতা আসবেই।”
কেকে/ এমএ