রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় সিনথিয়া নামে এক গৃহবধূকে মারধর করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তিনি হাজারীবাগ চরকঘাটা আব্রার টাওয়ার গলিতে স্বামী ইব্রাহিমের সঙ্গে বসবাস করতেন। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে স্বামী ইব্রাহিম।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হাজারীবাগ চরকঘাটা আব্রার টাওয়ার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ তাকে মৃত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে মর্গে পেয়েছে স্বজনরা।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে ইব্রাহিম চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয় নিহত সিনথিয়ার। সে থেকেই মেয়েটিকে মারধর করতো। ১৪ সেপ্টেম্বর রাতেও পরিবারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেছে সিনথিয়া। সকালে তিনি মারা যান, এরপর স্বামী ইব্রাহিম তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে বলে জানান মেয়েটির পরিবার।
পরিবারের দাবি— তার স্বামী হত্যা করে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে গেছে। নিহতের বোন জানান, গত এক বছর আগে তার বোনকে একধরনের জোর করে বিয়ে করে ইব্রাহিম, এরপর থেকেই মারধরের শিকার হন সিনথিয়া।
পরিবার জানায়, ইব্রাহিম এর আগে কয়েকবার মেয়েটিকে আটকে রেখেছিল। কয়েকদিন আগে মেয়েটি তার বাবার বাড়ি গেলে ইব্রাহিম তার বন্ধু শাওনকে দিয়ে ডাকিয়ে এনে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
জানা যায়, রায়েরবাজার এলাকায় সন্ত্রাসী ইব্রাহিম নামে পরিচিত রয়েছে ইব্রাহিমের। গত কয়েকবছর আগে এই ইব্রাহিম রায়েরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এক এসআইকে ওপেন গুলি করে। তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। তা থেকেই ধারণা তার স্ত্রীকেও নিজেই হত্যা করতে পারে বলে জানান নিহতের পরিবার। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতিও চলছে বলে জানা গেছে।
পরিবার আরো অভিযোগ করে, আজ ১৫ সেপ্টেম্বর অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে সকাল ১০টায় ফোন আসে যে, সিনথিয়া মারা গেছে। ঢাকা মেডিকেলের তার লাশ রয়েছে। এরপর পরিবার ঢাকা মেডিকেল গেলে সিনথিয়ার লাশ দেখতে পায়। এই ঘটনার পর থেকে মেয়েটির স্বামী ইব্রাহিম পলাতক রয়েছে বলেও জানান পরিবার। এতেই তারা ধরে নিয়েছে তাকে হত্যা করে পালিয়েছে ইব্রাহিম।
সিনথিয়া নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার শিবির গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের মেয়ে। হাজারীবাগের চরকঘাটা আব্রার টাওয়ার গলিতে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতো।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।
এই ঘটনায় আরো জানা গেছে, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকে সিনথিয়া আক্তারের স্বামী ইব্রাহিম চৌধুরী পলাতক বলে জানা গেছে। নিহতের ভাই মো. রুবেল জানান, তারা সকালে খবর পান সিনথিয়া খুব অসুস্থ। তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। পরে তারা ঢামেকের জরুরি বিভাগে এসে দেখেন সিনথিয়া মারা গেছেন এবং তার স্বামী ইব্রাহিম পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামের সঙ্গে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কেকে/এজে