ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আত্রাইয়ে সজিনার বর্ণিল সাজ

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)
🕐 ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১

আত্রাইয়ে সজিনার বর্ণিল সাজ

ষড়ঋতুর দেশ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রঙে সেজে থাকে। আগুন ঝরা ফাগুনে রক্তিম পলাশের পাশাপাশি গ্রামের পথে পথে দেখা মিলছে সজিনার সাদা সজ্জা। নওগাঁর আত্রাইয়ের আনাচে-কানাচে সজিনা গাছের ডালপালা যেন সেজেছে সাদা শাড়িতে। তার সৌরভে মৌ মৌ করছে চারপাশ। পাতা ঝরা গাছের ডালে ডালে এমন দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে টানছে। তাই বিভিন্ন সময় সজিনার রূপ তাদের মুঠোফোনের ক্যামেরায় হচ্ছে বন্দি।

সজিনা বিশ্বের অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি বৃক্ষ। অলৌকিক গাছ বলেও অনেকে মানেন। ইংরেজিতে সজিনার নাম ‘ড্রামস্ট্রিক’ যার অর্থ ঢোলের লাঠি। নামটি অদ্ভুত হলেও এটি বিশেষ ঔষধিগুণসম্পন্ন। বর্তমানে বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। তাই অনেকেই শখে নয়, ব্যবসায়িক উদ্দেশেও পরিচর্যা করেন সজিনার।

জানা যায়, এ গাছের পাতা, ফুল, ফল, ব্যাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে। সজিনার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। আত্রাইবাসী জানান, কাঁচা সবুজ পাতা রান্না করে, ভর্তা করে ও বড়া ভেজে কিংবা সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। ফল সবজির মতো রান্না করে খাওয়া যায়। ফল পাকলে সে সব ফলের বীজ বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ৫ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ২০ হাজারেরও অধিক সজিনা গাছ আছে। প্রতি বাড়িতে কমপক্ষে ৩/৪টি গাছ রয়েছে। এসব গাছ বাড়ির পাশে ও খেতের আইলে লাগানো হয়। গাছে ফলনও বেশি হয়।

যত্ন ছাড়াই এসব গাছ বেড়ে উঠে। বাংলাদেশে ২টি জাত আছে সজিনা ও নজিনা। সজিনার ফুল আসে জানুয়ারিতে আর নজিনা ফুল আসে মার্চ মাসে। তবে সব ফুল থেকে ফল হয় না। একটি থোকায় সর্বাধিক ১৫০টি মতো ফুল ধরে। ফুল ৪০ থেকে ৮০ সেমি. পর্যন্ত লম্বা হয়। ফুল ফোটার ২ মাস পর ফল তোলা যায়। একটি বড় গাছে ৪০০ থেকে ৫০০ ফল ধরে। প্রতিটি ফলে ৩০-৪০টি বীজ হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন জানান, ঠাণ্ডা-খরা সহিষ্ণু এ গাছ দেশের সব জায়গায় জন্মায়। এ উপজেলার মাটিতে সজিনা আবাদ ভালো। উপজেলার প্রতি বাড়িতে কমবেশি ৫-৬টি সজিনা গাছ আছে। এ বছর সজিনা গাছে ব্যাপক ফুল ধরেছে। বড় ধরনের দুর্যোগ না হলে সজিনার বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই অঞ্চলে উৎপাদিত সজিনা ঢাকাসহ পুরো দেশে চালান হয়। দিন দিন পরিত্যক্ত জায়গায় সজিনা গাছ তৈরির আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই উপজেলায় সজিনা গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃষকরা সজনের উচ্চমূল্য পাওয়ায় তারা লাভবানও হচ্ছে।

 
Electronic Paper