ঢাকা, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সোনালী আঁশে কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
🕐 ৬:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২৩

সোনালী আঁশে কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় পাটের ভালো ফলন এবং গত বছরের তুলনায় পাট চাষ প্রায় দুইশো হেক্টর জমিতে বেশি হলেও দামের কারণে তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। তার উপর পানি সংকটে বাড়তি অর্থ গোনায় লোকসানের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

 

গতকাল বুধবার (৩০ আগস্ট) সরজমিনে দেখা যায় কৃষকেরা পাট কাঠি থেকে পাট ছড়ানো নিয়ে সংকটে আছে। তারা গ্রামের মহিলাদের বাড়ি বাড়ি পাটের আঁশ ছড়ানোর জন্য দিয়ে আসছে। মহিলারা পাট কাঠি থেকে আঁশ ছাড়িয়ে দিলে পাঠকাটি নিবে সাথে টাকাও দিতে হবে অথচ গতবার শুধু আঁশ ছাড়িয়ে পাটকাঠি দিলেই হতো।

উজানচর রিয়াজুদ্দিন পাড়ার পাট থেকে আঁশ ছড়াচ্ছে মোহনা বেগম, তিনি জানান পাট কাঠির জন্য মেয়েসহ তারা তিনজন এসেছেন পাটের আঁশ ছড়াতে। পাশেই বাড়ি হওয়ায় তিনি জালানি যোগাড় করতেই এই কাজ করছেন। তার মতো আশেপাশের অনেক বাড়ি থেকেই মহিলারা এসেছেন পাটের আঁশ ছড়াতে।

তেনাপচা থেকে গোয়ালন্দ হাটে পাট নিয়ে এসেছেন আনছার ব্যাপারী। তিনি জানান, এই সময় প্রতি বছর আমাদের মাঠে পানিতে থৈথৈ করে, অথচ এবার পানি নেই। পাট ভালোভাবে জাগ দিতে না পারায় আঁশ কালো হয়েছে। তাই মাত্র সাড়ে ষোল’শ টাকা মনে পাট বিক্রি করলাম। দুই বিঘা জমিতে সাত হাজার টাকা ক্ষতি। শুনলাম সরকারি পাটকল কয়েকটি নাকি বন্ধ রয়েছে। এভাবে আমরা বাঁচবো কেমন করে?

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, সাধারণত বছরের মার্চ মাসের শেষে বা এপ্রিল মাসের শুরুতে বাংলা ফাল্গুন মাসের শেষে বা চৈত্র মাসের শুরুতে পাটের বীজ রোপনের উপযুক্ত সময়। বীজ বোপনের পর ১১০ থেকে ১২০ দিন পর পাট কাটার উপযোগী হয়। পাট কাটার পর জাগ দিতে সাধারণত তিন থেকে চার ফুট পানি হলেই চলে। তবে আরও গভীর এবং পরিস্কার পানি হলে আরও ভালো।

গোয়ালন্দে ভারতীয় তোষা জাতের বীজের আবাদ বেশি। এ বছর গোয়ালন্দে চার হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে পাট আবদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে। দাম বেশি পাওয়ায় প্রায় ২১০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে।

উপজেলার দৌলতদিয়া তোরাপ শেখ পাড়ার কৃষক হুমায়ন আহম্মেদ বলেন, তিনি এ বছর তিনবিঘা জমিতে পাট রোপন করেছেন। পাট ভালো হলেও উৎপাদন খরচ বেশি। তার প্রতি বিঘা জমিতে পাট রোপনে খরচ হয় ১৭-১৮ হাজার টাকা। বিক্রি তেরো চৌদ্দ হাজারের বেশি উঠে নাই। এবার পাট চাষে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান বলেন, পাটের আবাদ ভালো হলেও অনাবৃষ্টি, খড়ার কারণে অনেকে পাট জাগ দিতে পারছেন না। এই কারণে বাড়তি খরচ হচ্ছে। এবার দাম কমার কারণে লোকসানের মুখোমুখি হতে হচ্ছে কৃষকদের।

 
Electronic Paper