ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় পিকনিকের কথা বলে ডেকে নিয়ে এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে গণধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) চার শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম সুমন। এর আগে, রাতেই ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—দেলোয়ার ভূঁইয়া, তাজুল ইসলাম তাজ, শ্রাবণ সাহা ও অন্তু দেওয়ান। তারা সাভারের আশুলিয়ার বেসরকারি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী তরুণী আশুলিয়ার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি পরিবারের সঙ্গে ধামরাই পৌরসভায় বসবাস করতেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে পিকনিকের কথা বলে অভিযুক্ত প্রথম তিনজন ভুক্তভোগীকে আশুলিয়ার ফুলেরটেক এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যান। যাওয়ার সময় কোমল পানীয়ের সঙ্গে অচেতন করার ওষুধ খাওয়ালে কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। বিকেল ৫টার দিকে জ্ঞান ফেরার পর তিন অভিযুক্তকে দেখতে পান এবং বুঝতে পারেন তারা জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেছে ও ভিডিও–ছবি ধারণ করেছে। তিনি প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া ও এসিড হামলার হুমকি দেন।
পরে বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৯৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। গত ৬ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে তাকে ফের আশুলিয়ার বাইশ মাইল এলাকায় আটকে ৪ নম্বর অভিযুক্তের সঙ্গেও সম্পর্কে বাধ্য করতে চান। অস্বীকৃতি জানালে প্রথম তিনজন তাকে চড়থাপ্পড় ও মারধর করেন এবং জোরপূর্বক নেশাজাতীয় পানীয় পান করান। সেখান থেকে পালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার পরিবারের এক সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। চিকিৎসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে গত ২৬ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে অভিযুক্তদের আবার দেখতে পান তিনি। এসময় তারা তাকে একটি কক্ষে নিয়ে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করেন এবং ‘নতুন জীবন শুরু’ করার চাপ দেন। সায় না দিলে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হয়।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, “এ ঘটনায় মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হবে।”
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, “এটা গত ৪ এপ্রিলের ঘটনা। ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় ১৭ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।”
কেকে/ আরআই