রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে অনিয়ম করে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ডকেএম মোজাফফর হোসেনের বিরুদ্ধে।
অ্যাওয়ার্ড পাওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম মোছা. সানজিদা পারভীন। তিনি বিভাগে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। তবে এক বছর গ্যাপ দিয়ে পরের সেশনের (২০১৭-১৮) সাথে পড়াশোনা চালান।
অভিযোগ রয়েছে পরীক্ষা অসাধু উপায় অবলম্বন (নকল) করায় তাকে এক বছরের জন্য সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। ফলে তিনি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে পড়াশোনা শেষ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে শাস্তিপ্রাপ্ত এবং এফ গ্রেড থাকা কেউ ডিন অ্যাওয়ার্ড পেতে পারেন না।
তবে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই বিশেষ সুবিধা দিতে এবং ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগের জন্য আস্থাভাজন শিক্ষার্থীকে অনিয়ম করে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শোভন বিশ্বাস বলেন, প্রশাসনিক বিধি অনুযায়ী যেকোনো ছাত্র ফেইল করলে অথবা রিঅ্যাড নিলে সে ডিন অ্যাওয়ার্ডের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। আমাদের ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রথমে ২০১৬-১৭ সেশনে বিভাগে ভর্তি হয় এবং পরবর্তীতে দুইবার রিঅ্যাড নিয়ে আমাদের সাথে ভর্তি হয়ে পাশ করেন। তিনি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার জন্য একবছরের শাস্তিপ্রাপ্ত। ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ উভয় সেশন থেকে দুইজনকে আগেই ডিন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। সেখানে ২০১৮-১৯ সেশন থেকে কাউকেই প্রদান করা হয়নি। আমি ২০১৮-১৯ সেশনের নিয়মিত ব্যাচ থেকে ১ম স্থান অধিকার করেছি, যা একাডেমিক মেধার ভিত্তিতে আমাকে ডিন অ্যাওয়ার্ডের, যোগ্য করে তোলে বলে আমার বিশ্বাস।
অন্যান্য ফ্যাকাল্টিতে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি যে, এই নীতিমালা অনুসরণ করেই ডিন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। তাহলে আমাদের ফ্যাকাল্টির ক্ষেত্রে ভিন্নতা কেন এটাই আমার প্রশ্ন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. ময়জুর রহমান বলেন, “আমাদের বিভাগের প্রথমবারের মতো ডিন অ্যাওয়ার্ড চালু হয়েছে। আমাদের কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। প্রথম হওয়াই তাকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।
অনুষদের ডিন প্রফেসর ডকেএম. মোজাফফর হোসেন বলেন, “প্রথমবারের মতো আমরা ডিন’স অ্যাওয়ার্ড দিয়েছি। আমাদের কোনো নীতিমালা না থাকায় বিষয়টি নজরে আসেনি। আমরা ইতিমধ্যে এটা নিয়ে রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রশাসনের সাথে বসে পুনরায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। এটা মূলত ডিন অফিসের বিষয়। রেজাল্ট প্রথম হিসাবে বিবেচনা করে অ্যাওয়ার্ড দিয়েছেন তারা। এবিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে উনারাই নির্ধারণ করবেন।”
কেকে/লআ