শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫,
২৩ কার্তিক ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: দেশে বড় অঘটনের শঙ্কা      নানা হিসাব-নিকাশে মনোনয়নবঞ্চিতরা      বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত যত সিদ্ধান্ত      বিএনপি না আসলে এ দেশ ভুটান-কম্বোডিয়ার মতো হতো : প্রকৌশলী তুহিন      মানুষের গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা ও সংকট থেকে মুক্ত করেছেন জিয়াউর রহমান : রিজভী      বৃহস্পতিবারের আলোচিত সংবাদ      ৬৬ দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দিল ইসি      
খোলাকাগজ স্পেশাল
চাপে আরপিও সংশোধন
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৩০ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করেছে। যেখানে সবচেয়ে আলোচিত নতুন বিধান হলো- জোট করলেও প্রতিটি দলকে নিজ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। দলগুলো জোট করলেও একক প্রতীকে ভোটে অংশ নিতে পারবে না। প্রত্যেক দল তার নিজ প্রতীকে ভোট করতে হবে। 

এই বিধান নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে দলটি লিখিতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং একপর্যায়ে সরকার বিষয়টি বাদ দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তও নিয়েছিল বলে জানা যায়। কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এই সংশোধনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়। যা শেষ পর্যন্ত তাদের মতামতই প্রাধান্য পায় এবং নিজস্ব প্রতীকে ভোটে অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা বহাল রাখা হয়। ফলে অনেকেই মনে করছেন, জামায়াত-এনসিপির চাপে আরপিও সংশোধন করা হয়েছে। যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। 

এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিবর্তন রাজনৈতিক সমীকরণে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে জোটভিত্তিক রাজনীতিতে নতুন করে বিভাজন, প্রতিযোগিতা ও অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন সৃষ্টি হবে, যা নির্বাচনের ফলাফলেও প্রতিফলিত হতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, বড় দলগুলো তাদের জোটসঙ্গীদের আসন ছাড়লেও ছোট দলের প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীকে ভোট করে কার্যত পিছিয়ে পড়বেন। কারণ ছোট দলের প্রতীক ও প্রার্থী তৃণমূলে অচেনা, ফলে ভোটারদের বিভ্রান্তি বাড়বে। এতে সুযোগ নিতে পারে বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা।

বিষয়টি নিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক অসন্তোষ জানিয়ে বলেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই আরপিও সংশোধন করা হয়েছে। এটা কোনো বিবেচনাসম্মত কাজ হয়নি। কমিশনের সক্ষমতা ও মর্যাদা বৃদ্ধিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করা রাজনৈতিকভাবে নৈতিক সিদ্ধান্ত হতে পারে, কিন্তু হঠাৎ করে এই পরিবর্তন কার্যকর করা ঠিক হয়নি। সময় দিলে এটা পরবর্তী নির্বাচনে প্রযোজ্য করা যেত।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘প্রতীক ভাড়া দেওয়ার দিন শেষ। জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। মাঠ আর আগের মতো নেই। আগের ইকুয়েশন এবার মিলবে না। সময়মতো মিলিয়ে নিয়েন।’

প্রসঙ্গত সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে এবারের জাতীয় নির্বাচনে যুক্ত হয়েছে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন বিধান। এসব পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে ‘না ভোট’ পুনরায় চালু হওয়া থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অপব্যবহারকে নির্বাচনি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা। 

সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, আদালত ঘোষিত ফেরারি বা পলাতক আসামি আর প্রার্থী হতে পারবেন না। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় এখন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও কোস্ট গার্ড যুক্ত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি সংযোজন হলো- একক প্রার্থী থাকলে ব্যালট পেপারে ‘না ভোট’ থাকবে, তবে পুনঃনির্বাচনের ক্ষেত্রে এ বিধান কার্যকর হবে না। এ ছাড়া সমান ভোট পেলে লটারির পরিবর্তে পুনঃভোট অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়া সংশোধনে বলা হয়েছে, নির্বাচনি এজেন্ট অবশ্যই সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার হতে হবে, এবং ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিধান বাতিল করা হয়েছে। প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবী এবং দেশের অভ্যন্তরে আটক ভোটাররা এখন পোস্টাল ভোটিংয়ের আওতায় ভোট দিতে পারবেন।

গণমাধ্যমের ভূমিকা আরো শক্তিশালী করতে ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশের সুযোগ এবং ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। প্রার্থীর নির্বাচনি ব্যয় ভোটারপ্রতি ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, পাশাপাশি দলীয় অনুদান ও ব্যয়ের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের বদলির প্রক্রিয়ায় এখন থেকে উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পর্যায়ের কর্মকর্তার অনুমোদন যুক্ত থাকবে।

এআই-এর অপব্যবহার রোধে নতুনভাবে বলা হয়েছে- কোনো প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল যদি মিথ্যা তথ্য, গুজব বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার করে, তবে তা নির্বাচনি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া কোনো দলের নিবন্ধন স্থগিত হলে তার নির্বাচনি প্রতীকও স্থগিত থাকবে।

নির্বাচনে অনিয়ম প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখন থেকে শুধু কোনো কেন্দ্র নয়, প্রয়োজনে পুরো আসনের ফলাফল বাতিলের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তদুপরি, হলফনামায় মিথ্যা বা অসত্য তথ্য দিলে নির্বাচনের পরও ইসি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

দেশে বড় অঘটনের শঙ্কা
নানা হিসাব-নিকাশে মনোনয়নবঞ্চিতরা
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত যত সিদ্ধান্ত
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস শুধু বিএনপি নয়, পুরো জাতির কল্যাণ বয়ে আনে : প্রকৌশলী আহসান হাবীব
বিএনপি না আসলে এ দেশ ভুটান-কম্বোডিয়ার মতো হতো : প্রকৌশলী তুহিন

সর্বাধিক পঠিত

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি
জয়পুরহাট রেলস্টেশনে যাত্রী লাঞ্ছিতের অভিযোগ
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে
পরিচ্ছন্ন পরিবেশই একটি গন্তব্যকে পর্যটনবান্ধব করে তোলে : নুজহাত ইয়াসমিন
এনসিপি নেতার আঙ্গুল কেটে নিল সন্ত্রাসীরা!
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close