ক্যাশলেস সমাজ বলতে বোঝায় লেনদেনের সংস্কৃতি থেকে নগদ লেনদেন এবং প্রথার বিলুপ্তি ঘটানো। এখানে না বললেই নয় যে, গত বছরগুলোতে নগদ লেনদেন ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের বিশ্ব অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। ক্যাশলেস (নগদবিহীন) সোসাইটি বলতে কার্ড বা সরাসরি ডেবিট পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে প্রচলিত লেনদেনের বাইরেও অন্যান্য যেসব ডিজিটাল উপায়ে বিশ্বব্যাপী মানুষ তাদের লেনদেন করে আসছে বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে, সেই সবকিছুকেই বোঝায়। অনেক আগে থেকেই পেমেন্ট সিস্টেমকে আধুনিক করার জন্য, আধুনিক ব্যাংকিং শিল্পগুলো সুসংগঠিত হচ্ছে এবং বিভিন্নভাবে তারা বিভিন্ন ইনোভেশন নিয়ে এই সেক্টরে কাজ করে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান বিজ্ঞানের বিশাল এক উন্নয়ন ঘটেছে এই সেক্টরে।
তারই ফলস্বরূপ ধাপে ধাপে ক্যাশলেস সমাজের দিকে বিশ্বসমাজে আধুনিক ব্যাংকিং স্টেকহোল্ডারদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এরই ফলশ্রুতিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক ব্যাংকের এটিএম বুথ এবং স্থানীয় শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতে এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে বলতে পারি যে, ২০২৩ সালের মে মাসে, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকুয়ারি ব্যাংক (Macquarie Bank) প্রথম প্রধান অস্ট্রেলিয়ান ব্যাংক হিসেবে সম্পূর্ণ ক্যাশলেস ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করে। এবং তাদের সব লেনদেনকে শুধু ডিজিটাল পেমেন্টে রূপান্তরিত করে। এ ব্যাংকটি তাদের সব শাখায় নগদ অর্থ জমা নেওয়া বন্ধ করে দেয়, তবে গ্রাহকদের জন্য এখনো এটিএম বুথ থেকে বিনা ফিতে নগদ অর্থ উত্তোলনের সুবিধা চালু রেখেছে।
আচ্ছা যা হোক, চলুন জেনে আসা যাক, ক্যাশলেস সমাজ বলতে আমরা আসলে কি বুঝি? উইকিপিডিয়া’র মতে, ক্যাশলেস সমাজ বলতে আমরা এমন একটি সমাজের কথা বুঝি, যেখানে আর্থিক লেনদেন নগদ ব্যাংকনোট বা মুদ্রা দিয়ে পরিচালিত হয় না, বরং ডিজিটাল তথ্য দিয়ে পরিচালিত হয়। ট্রাডিশনাল আইসিটি (ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি) এবং ইন্টারনেট অবকাঠামো ব্যবহার করে, এই অর্থ লেনদেন ব্যবস্থা একটি ইলেকট্রনিক অর্থব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করে। এছাড়াও গুগল এআই জানাচ্ছে যে, একটি নগদবিহীন বা ক্যাশলেস সমাজ হলো এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, যেখানে আর্থিক লেনদেন নগদ অর্থ যেমন, ব্যাংক নোট এবং কয়েনের পরিবর্তে ডিজিটালভাবে পরিচালিত হয়। ক্যাশলেস সমাজ ব্যবস্থায়, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, মোবাইল ওয়ালেট, অনলাইন ব্যাংকিং এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে যে কোনো ধরনের পেমেন্ট এবং ফরেন এক্সচেঞ্জের মতো ব্যাপারগুলো ইলেকট্রনিকভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে।
বলা যেতে পারে, এ মুহূর্তে, পৃথিবীর কোনো দেশই সম্পূর্ণরূপে ক্যাশলেস অর্থব্যবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে না, তবে অনেক দেশই এই দিকে দ্রুত এগিয়ে চলেছে, যার মধ্যে সুইডেন অন্যতম একটি উদাহরণ। সুইডেন এরই মধ্যে ক্যাশলেস অর্থব্যবস্থা পরিচালনার মাধ্যমে বেশকিছু সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম কিছু সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা যাক। যেমন, প্রথমেই রয়েছে লেনদেন সুবিধা এবং কাজের দক্ষতা অর্জন, যেখানে ডিজিটাল পেমেন্ট নগদ লেনদেনের ঝামেলাগুলো দূর করে এবং অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সহজভাবে লেনদেনগুলো প্রিন্টেড কাগজপত্রের ব্যবহার না করেই পরিচালনা করতে সাহায্য করছে। ক্যাশলেস ব্যবস্থায় লেনদেনের কারণ সুইডেনে ডাকাতি ও চুরির মতো নগদ অর্থ-সংক্রান্ত অপরাধের ঝুঁকি অনেক কমে এসেছে। যেহেতু ইলেকট্রনিক লেনদেন একটি ডিজিটাল রেকর্ড তৈরি করে, তাই লেনদেনের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়, যা সরকারকে স্মার্ট গভর্নিংয়ের ক্ষেত্রে কর ফাঁকি এবং অর্থ পাচার মোকাবিলায় অত্যন্ত সাহায্য করছে। এ ছাড়াও সম্পূর্ণ ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা নগদ অর্থ পরিচালনা, পরিবহন, ব্যবস্থাপনা, গণনার এবং সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত খরচ কমিয়ে সরকার এবং কোম্পানিগুলোর অনেক অর্থ সাশ্রয় করছে।
ইতিহাস বলে, বার্টার (Barter) এবং বিনিময়ের অন্যান্য পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে মানব সমাজে মুদ্রার প্রচলন শুরু হয়। এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ধাতব মুদ্রা, কাগজের নোট থেকে এখন ক্যাশলেস অর্থব্যবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে। আধুনিক সময়ে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, মোবাইল পেমেন্ট এবং বিটকয়েনের মতো ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী মানুষ ক্যাশলেস লেনদেন করে ব্যবসাদি চালাচ্ছে। এই ধারণাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং দৈনন্দিন জীবনে অর্থ রেকর্ড, পরিচালনা এবং বিনিময়ের জন্য ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার দ্রুত এবং ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে নগদ অর্থ দিয়ে যে লেনদেনগুলো করা হতো, তার বেশিরভাগই এখন ইলেকট্রনিকভাবে সম্পন্ন করা হয়।
ক্যাশলেস অর্থব্যবস্থার বেশ কিছু সুবিধা থাকা সত্ত্বেও অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা এই আধুনিক ইলেকট্রনিক লেনদেন সিস্টেমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মতামত পোষণ করে আসছেন। এই পদক্ষেপ অনেক মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে যে, তারা আর কতদিন তাদের নিজের ব্যাংকের সঙ্গে আসল নগদ অর্থ দিয়ে লেনদেন করতে পারবে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোও ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় ক্যাশলেস হয়ে যাচ্ছে। যেমন, বিশ্ববিখ্যাত কফিশপ চেইন গ্লোরিয়া জিন্স (Gloria Jeans) ঘোষণা করেছে যে তারা তাদের কিছু স্টোরকে নগদ-মুক্ত করতে ম্যাকডোনাল্ডস এবং কেএফসি-এর মতো প্রতিষ্ঠানের দলে যোগ দিচ্ছে।
ক্যাশলেস অর্থব্যবস্থার যেসব সমস্যাগুলো মানুষ অনেক বেশি আলোচনা করছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু অসুবিধা নিয়ে চলুন আলোচনা করা যাক। প্রথমেই রয়েছে আর্থিক বর্জন বা Financial exclusion জনিত সমস্যা যেখানে দুর্বল জনগোষ্ঠী, যার মধ্যে বেশিরভাগই বয়স্ক ব্যক্তি, নিম্ন আয়ের মানুষ এবং যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট নেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করার কারণে, তারা ক্যাশলেস অর্থনীতিতে সম্পূর্ণরূপে অংশগ্রহণ করতে খুবই কষ্টের সম্মুখীন হবে। কিন্তু যদি সরকারিভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সহজলভ্যভাবে ইলেকট্রনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু এবং সমন্বয় করা যায় তাহলে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে আমাদের দেশে গ্রাম-গঞ্জে এবং ছোটছোট হাটবাজারে বেশকিছু ব্যাংক এই উদ্যোগ চালু করেছে। অন্য আরেকটি সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে যে, মানুষ তাদের গোপনীয়তা (Privacy concerns) নিয়ে অত্যাধিক উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে। তারা মনে করতে পারে, প্রতিটি ডিজিটাল লেনদেন একটি ডেটা ট্রেইল তৈরি করে যা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেশন এবং সরকার দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে, যেটি কিনা ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সম্ভাব্যভাবে ক্ষুণ্ন করে থাকে। কিন্তু আধুনিক হিউমান এথিক্স এবং প্রাইভেসী পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক (human ethics and privacy framework) তৈরি করে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
এরপর আসছে সিস্টেমের দুর্বলতা বা System uvlnerability যা একটি ক্যাশলেস সমাজের ডিজিটাল পরিকাঠামো তৈরিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুর্ঘটনাবশত : একটি বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ইন্টারনেট ব্যর্থতা, বা সাইবার আক্রমণ প্রয়োজনীয় ডিজিটাল লেনদেনকে ব্যাহত করতে পারে। এ সমস্যাগুলো খুব সহজেই সমাধান করা সম্ভব যদি আমরা যথাযথ শক্তিশালী অবকাঠামো, অবিরাম বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনা এবং সাইবার সিকিউরিটি টেকনোলোজি ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে পারি। সর্বোপরি মানুষ তাদের খরচ বৃদ্ধি (Increased spending) নিয়েও শংকিত হতে পারে। তবে গবেষণা থেকে দেখা যায়, যারা নগদ অর্থ ব্যবহারের তুলনায় ক্যাশলেস ব্যবস্থায় বেশি খরচের সম্ভাবনা দেখে তাদের জন্যও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমাধান। এই যুগে অনেক সফটওয়্যার এবং মোবাইল এপ্লিকেশন রয়েছে যা কিনা বিভিন্ন এলার্ট এবং কন্ট্রোল নোটিফিকেশনের মাধ্যমে মানুষকে তাদের ব্যয় বা খরচ কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে। এখানে বলে রাখা ভালো যে, এসব সফটওয়্যারগুলো পূর্বের ব্যয়ের সঙ্গে বর্তমানের ব্যয়কে তুলনা করে মানুষকে অতিরিক্ত খরচ বাঁচাতে সাহায্য করে। বর্তমান যুগে ব্লকচেইনসহ অনেক ক্রিপ্টোগ্রাফিক লেনদেন সিস্টেম রয়েছে যেগুলো কিনা বর্তমানে প্রচলিত সব ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার থেকে অত্যাধিক শক্তিশালী, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে সক্ষম।
আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এবং ব্যবসাগুলোকে ক্যাশলেস ব্যবস্থার ভেতরে নিয়ে আসব। এর মাধ্যমে দেশের অর্থ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী হবে, বৈদেশিক বাণিজ্যের উন্নতি সাধন হবে, বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হবে, দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে এবং সর্বোপরি আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে। তারই সঙ্গে বাংলাদেশের আধুনিক আইটি ব্যবস্থার শক্তিশালী অবকাঠামো তৈরির পাশাপাশি লাখ লাখ তরুণ সমাজ দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হবে এবং আমি মনে করি ক্যাশলেস ব্যবস্থা প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের আইসিটি থেকে আয় মোট জিডিপির বর্তমান অবস্থান প্রায় ৫% থেকে ১০% এ উন্নীত করা সম্ভব হবে।
বিএনপির ৩১ দফার ৩০তম দফাটি এই সকল কাজের এবং কাজের প্রক্রিয়ায় সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা তরুণ সমাজকে কিভাবে ইতিবাচক কারিগরি শিক্ষা এবং আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের মাধ্যমে সহযোগিতা করা যায় এবং তাদের কর্মজীবনকে এই সেক্টরে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য যা যা করা দরকার, তা করব। ক্যাশলেস ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং পৃথিবীর বুকে তরুণ সমাজকে এই বুদ্ধিবৃত্ত্বিক সমাজ ব্যবস্থায় তাদের প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করাই আমাদের অন্যতম দায়িত্ব।
এ দায়িত্বের অংশ হিসেবে সরকারি বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং, কর্মশালা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের শর্ট কোর্স এবং কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে তাদেরকে শিক্ষা দেয়া খুবই অন্যতম এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরিশেষে বলা যেতে পারে, বিএনপির ৩১ দফা মোটের উপরে একটি সার্বজনীন বাংলাদেশের উন্নয়নের সর্বগ্রহণীয় রোডম্যাপ। যার প্রতিটি দফায় লক্ষ্য ধার্য এবং অর্জনে পথপ্রদর্শক হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। ৩১ দফার ৩০তম দফাটির সঙ্গে তথ্য ও প্রযুক্তিবিজ্ঞাননির্ভর ক্যাশলেস সমাজব্যবস্থা সম্পর্কিত। বর্তমান বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় ক্যাশলেস ব্যবস্থাপনা আমাদেরকে একটি আধুনিক এবং যুগোপোযুগী ব্যবসার সংস্কৃতি এবং সমৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে সক্ষম। যেখানে আমাদের তরুণ সমাজই হবে এ সেক্টরের অন্যতম সাফল্য অর্জনের বাতিঘর। তরুণ প্রজন্মকে জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করে ক্যাশলেস সমাজব্যবস্থা প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সার্বিক লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট হব ইনশাল্লাহ। আজকে নিবন্ধটি এখানেই শেষ করছি। আবারো অন্য কোনো কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত লেখা নিয়ে সামনে আসব। সবাইকে ধন্যবাদ।
লেখক : প্রফেসর অফ বিজনেস এনালিটিক্স এন্ড অ্যাপ্লাইড এআই,
উপপরিচালক, সেন্টার ফর অ্যাপ্লাইড অ্যান্ড রেস্পন্সিবল এআই,
নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটি, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
কেকে/এআর