বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক দল দেশের বিদ্যমান ওয়েস্টমিনিস্টার সিস্টেম নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তে হঠাৎ করে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব উত্থাপন করেছে বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে মোটামোটি এখন বেশ সরব ও মুখরোচক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পিআর পদ্ধতি দলীয় আসন বাড়ান ছাড়া জনগণের কোনো সুবিধা দেয় না। আমি কেন পিআর চাইব? কারণ আমি পার্লামেন্টে কিছু বেশি আসন পাব, এর বাইরে কিছু নেই। কিন্তু অধিক আসনের লোভে মানুষের মৌলিক চাহিদা উপেক্ষা করা গণতন্ত্রের ভাষা নয়। পিআর মানে দলকে শক্তিশালী করে ব্যক্তিকে দুর্বল করা। মানুষ ভোট দেবে দলকে, দল নির্ধারণ করবে প্রার্থী কে হবে। এতে জনগণের সরাসরি জবাবদিহি ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায়। ব্যক্তি প্রতিনিধি দুর্বল হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দেখা গেছে, যখনই কোনো দল অতিরিক্ত শক্তিশালী হয়েছে, তখনই জনগণের জন্য দুর্যোগ নেমে এসেছে। পিআর পদ্ধতি সেই ঝুঁকিই বাড়াবে।
এদিকে, আইনের শাসন কাকে বলে নির্বাচনে দেখাতে চান বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন তার অভিমত ব্যক্ত করেন।
গত শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আসুন, একটা উদাহরণ সৃষ্টি করি এই দেশে যে আইনের শাসন কাকে বলে আমরা এই ইলেকশনে (ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) এটা দেখাতে চাই। তাতে যা হওয়ার হবে।’
‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জসমূহ নিরুপণ ও উত্তরণ’ শীর্ষক এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় নগরের আসকার দিঘি এলাকার আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণকেন্দ্র মিলনায়তনে। কর্মশালার আয়োজন করে সিবিটিইপি প্রকল্প (নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় আইসিটি ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি)।
কর্মশালায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যেদিন নির্বাচন হবে, সেদিন মনে রাখবেন, আপনি হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আইনগতভাবে সর্বময় ক্ষমতা আপনাকে দেওয়া আছে। যদি গোলমাল করে, তাহলে ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দেবেন। তিনটা করলে তিনটা। দরকার হলে পুরো সংসদীয় আসন বাতিল করে দেবেন।’
‘আমরা সহজে ছাড়ার পাত্র নই। সহজে ছাড়ব না। আপনাদের পেছনে আমরা আছি। ইলেকশন কমিশন ফুল সাপোর্ট দিয়ে যাবে আপনাদের।’ নির্বাচনের বাতাস বইতে শুরু করেছে উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘সবাই মিলে একটা সুন্দর নির্বাচন করতে হবে। এ জন্য ভোটগ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়িত করা হচ্ছে। সব ক্ষমতা দেওয়া হবে তাদের। ক্ষমতা ব্যবহার করতে হবে। যদি ক্ষমতা ব্যবহার না করেন, তাহলে অপরাধ হিসেবে ধরে নেওয়া হবে এবং যথাসময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেন, তাহলে তা ভালোভাবে নেওয়া হবে না। ক্ষমতা থাকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ক্ষমতা ব্যবহারও গুরুত্বপূর্ণ। যতক্ষণ আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করবেন, ততক্ষণ নির্বাচন কমিশন পাশে থাকবে।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিএনিপ। নানা মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করাসহ বিশ্লেষণ করা হলেও মূলত তালিকা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। তিনশ আসনের মধ্যে দুই শতাধিক আসনে প্রার্থী তালিকায় চমক আনতে পারে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে সমমনা দলগুলোর কাছে প্রার্থী তালিকা চাওয়া হয়েছে। রাজনীতির বাইরে পেশাজীবীসহ গুণিজনদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত মিত্ররা ২১৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা জমা দিয়েছে দলটির কাছে। এর মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ ১৩৮, ১২ দলীয় জোট ২১, এগারো দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ৯, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি ১৩, জাতীয় পার্টি-বিজেপি ৫. গণফোরাম ১৫, লেবার পার্টি ৬ ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ১০টি আসনে তাদের প্রার্থীর নাম দিয়েছে। তবে বিএনপি এবার মিত্রদের সর্বোচ্চ ৪০টি আসন ছাড় দিতে পারে। আর যাদের আসন ছাড় দেওয়া হবে না তাদের উচ্চকক্ষে মূল্যায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।
লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেও প্রার্থী তালিকা দিয়েছে একাধিক দল।
১৮৯৯ সালে সর্বপ্রথম ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে এই পিআর পদ্ধতি চালু হয়। তাছাড়া বিভিন্ন প্রকারের পিআর পদ্ধতির সুবিধা-অসুবিধা নিয়েও আলোচনা করতে গিয়ে তিনি কোনো কোনো সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়। ২০০৯ সালে ইসরায়েলের নেসেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল কাদিমা পার্টি সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়। তাছাড়া নেপালে ২০০৮ সাল থেকে ১৭ বছরে ১৪ জন প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হয়। সম্ভবনাময় স্বনির্ভর বাংলাদেশ বাস্তবায়নের স্বপ্নগুলোর সঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে পাওয়ার জন্য যা দরকার তা হলো একটি গতিশীল পরিবর্তন এবং নতুন মূল্যবোধের সমন্বয়ে রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর সর্বশেষ সংশোধনের ফলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল হলেই অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। রায় না হলেও অভিযোগ গৃহীত হওয়ার মুহূর্ত থেকেই এই বিধান কার্যকর হবে। আইনের ২০(সি) ধারা সংশোধন করে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) অধ্যাদেশ আকারে গেজেট প্রকাশ করেছে আইন মন্ত্রণালয়। সংশোধনী অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গৃহীত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জাতীয় সংসদসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে বা সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না, তবে ট্রাইব্যুনালে অব্যাহতি খালাসপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।
এরই মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গৃহীত হয়েছে, তারা নির্বাচনে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সাবেক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আগামী নভেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ১২ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তালিকায় রয়েছেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. মনির হোসেন।
এ ছাড়া জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, ফারুক খান, দীপু মনি, গোলাম দস্তগীর গাজী, কামাল আহমেদ মজুমদার, আব্দুর রাজ্জাক, সোলায়মান সেলিম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীসহ একাধিক সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধেও ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের প্রস্তুতি চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আগামী জানুয়ারিতে ট্রাইব্যুনালে ফরমাল চার্জ দাখিল হতে পারে বলে প্রসিকিউশন থেকে জানা যায়।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে সংবিধানের ভিত্তিতে। বর্তমান সংবিধানের ভিত্তিতেই সরকার চলছে। সুতরাং গণতান্ত্রিক অর্ডারে ফিরতে হলে বর্তমান সংবিধানের আওতায় নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচিত সরকার ও সংসদ গঠনের পরই জনগণের মতামত নেওয়া, আলোচনা করা এবং প্রয়োজনে পরিবর্তনের সুযোগ আসবে। এখন আমরা গণতান্ত্রিক অর্ডারের মধ্যে নেই। ১৪ মাস ধরে একটি সরকার চলছে, যা জনগণের নির্বাচিত নয়। তাই আগে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ গঠন করতে হবে। তারপর প্রতিটি দল তাদের বিষয় নিয়ে জনগণের কাছে যাবে। গণতন্ত্র একটি অব্যাহত প্রক্রিয়া- ডেমোক্রেসি ইজ এ কনভারসেশন প্রসেস।
গণতন্ত্র মানে সংলাপ, মতবিনিময় ও আলোচনা ঃ একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই ঐকমত্য কমিশন সবকিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারবে- এ ধারণা ভুল। যতটুকু ঐক্যমত হয়েছে, সেটি সামনে নিয়ে যেতে হবে; বাকিটা নিয়ে জনগণের কাছেই যেতে হবে ম্যান্ডেট নিতে।
দেশের কিছু রাজনৈতিক দল বিদ্যমান ওয়েস্ট মিনিস্টার সিস্টেমে গণতন্ত্র বিকাশের অন্যতম পূর্বশর্ত একটি নিখুঁত, ত্রুটিমুক্ত, বিশ্বাসযোগ্য, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক, প্রতিযোগিতামূলক, শান্তিপূর্ণ, অহিংস, গ্রহণযোগ্য, সম্পূর্ণ পক্ষপাতহীন নির্বাচন অনুষ্ঠান। অথচ এই নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে আম্বার এবং আশা-নিরাশার দোলাচালে ভয়াবহ সংকটের। দেশের আপামর বিবেকবান মানুষের প্রত্যাশা একটি সম্ভাবনাময় স্বনির্ভর বাংলাদেশ। এই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিখুঁত, ত্রুটিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ, অহিংস, গ্রহণযোগ্য, সম্পূর্ণ পক্ষপাতহীন করার জন্য দরকার আইনগত ও সাংবিধানিক ব্যবস্থা।
এটা অনুধাবন করেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘গণতন্ত্র’ (চ) অনুচ্ছেদ এবং ১১ অনুচ্ছেদে ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’-এর বিধান সন্নিবেশন করা হয়েছে। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিবেদনের অনুচ্ছেদ ২১-এ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আবশ্যকতা ঘোষিত হয়েছে। তাছাড়া আবহমান বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহ্য হচ্ছে ব্যক্তিস্বাধীনতা, যা যুগে যুগে পরীক্ষিত ও প্রমাণিত। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব অথবা দেখে-শুনে বুঝে দেব। এ হচ্ছে আপামর জনগণের সুপ্ত হৃদয়ের প্রচ্ছন্ন অভিব্যক্তি। এ মানসিকতার সামান্যতম ব্যত্যয় জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে এবং প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরে বিপ্লবী সুর তোলে।
দেশে যখন নির্বাচন হয়, তখন বড় কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। যেমন প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ, নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ, আইনগত চ্যালেঞ্জ, প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ। তবে ভোটগ্রহণের জন্য নিরাপত্তা বা সিকিউরিটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। এটি বিশাল আকারে দেখা দিয়েছে এবং এটা নিয়ে সবাই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছে। এটি মোকাবিলা করা আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়াবে।
জাতীয় নির্বাচন করা শুধু একা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নয়, জাতীয় নির্বাচন জাতীয়ভাবেই করতে হবে। এটি নির্বাচন কমিশনের একার কাজ নয়। প্রশাসন, পুলিশসহ সবাই মিলে করতে হবে। সবার সহযোগিতা ও সমন্বয় দরকার। সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের জন্য সমন্বয় দরকার। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে উপজেলা পর্যন্ত ইমার্জেন্সি সেল থাকতে হবে। বেশির ভাগ প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হচ্ছেন শিক্ষক। তাদের অনেকেই ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে পরিচিত নন। তাই এ রকম মুহূর্ত তৈরি হলে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তা প্রশিক্ষণ দিতে হবে। গত ১৫ বছরে পুলিশকে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট মোকাবিলায় নিয়োজিত করা হয়নি। বিশেষ বিশেষ বাহিনী দিয়ে ক্রাইসিস ম্যানেজ করা হতো। সুতরাং পুলিশের মধ্যেও ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে যে সমস্যা রয়েছে তা নির্বাচনের আগেই সমাধান করতে হবে।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে পাওয়ার একটি অন্যতম উপাদান হলো নির্বাচন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ সাড়ে চার যুগ অর্থাৎ চুয়ান্ন বছরেরও অধিককাল পার হলেও এ দেশ আজও এক মহাসঙ্কটাপন্ন অবস্থার সম্মুখীন। শত-সহস্র প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দেশে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তা আজ এক অপরিণামদর্শী, অসহিঞ্চু রাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও অর্থনীতি করাল গ্রাসে বিপন্ন। তাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে একটি নিখুঁত জাতীয় সংসদ নির্বাচন জরুরি।
লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক
কেকে/ এমএস