কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্র ও অফিস আদেশ অমান্য করে কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার কথা থাকলেও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি বিএনপি নেতা আবুল হাশেম মাস্টার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আব্দুস ছামাদ খাঁনের যোগসাজশে গোপনে নিয়োগের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
জানা গেছে, ল্যাব সহকারী (পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও কম্পিউটার) পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন আবুল হাশেম ও আব্দুস ছামাদ খাঁন। এই নিয়োগে আগামী ১৮ অক্টোবর অংশগ্রহণের জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের ইন্টারভিউ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোমদেল হোসেন অবসরে গেলে সহকারী অধ্যাপক (বাংলা) সিরাজুল ইসলামকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলামের উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেন আবুল হাশেম।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার পরও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি নিয়োগের বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। নীতিমালা বর্হিভূত কাজে অপরাগত প্রকাশ করলে শুরু হয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র। এরই ধারাবাহিকতায় দুর্গাপূজার ছুটিকালীন আবুল হাশেমের প্রত্যক্ষ মদদে শিক্ষা নীতিমালা ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজি) ও আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আব্দুস ছামাদ খাঁনকে অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ইসলামের ইতিহাস) আব্দুল কাদের জ্যেষ্ঠতায় আব্দুস ছামাদ খাঁনের চেয়েও সিনিয়র। তা সত্ত্বেও নীতিমালা লঙ্ঘন করে দায়িত্ব দেওয়া হয় আব্দুস ছামাদ খাঁনকে। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আবুল হাশেমের সঙ্গে যোগসাজশে আগামী ১৮ অক্টোবরে নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যক্রম শেষ করার জন্য চক্রান্ত চলছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ায় শিক্ষকমণ্ডলী, অভিভাবক ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
আবুল হাশেমের ভাষ্য, ‘আমাদের কলেজটি হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। নিয়োগ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নিয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে তা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য প্রযোজ্য; স্নাতক পর্যায়ে কর্মচারী নিয়োগে বাঁধা নেই।’
আব্দুস ছামাদ খাঁন বলেন, ‘কমিটি আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সভাপতি সব কার্যক্রম চালাচ্চেন।’
কেকে/ এমএ