রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক মতভেদ। আইনগত ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলো কখনো ঐকমত্যে পৌঁছালেও আবার কখনো মুখোমুখি অবস্থানে যাচ্ছে।
ফলে এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলো একমত না হলে অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে আসন্ন নির্বাচন।
সংশোধিত খসড়া হাতে পাওয়ার পর বিএনপি জানিয়েছে, তাতেও কিছু অসামঞ্জস্য রয়েছে। একই সঙ্গে জামায়াত ও এনসিপি জানিয়েছে তারা সনদে সন্তুষ্ট নয়। বিশ্লেষকদের মতে, এতো ভিন্নমত জুলাই সনদের মূল উদ্দেশ্যকেই ব্যাহত করতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান বলেন, ‘না তত্ত্বাবধায়ক সরকার, না উচ্চকক্ষ, না সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, কোনো ক্ষেত্রেই সুস্পষ্ট সমাধান আসছে না। সুস্পষ্ট সমাধান না এলে ভারসাম্য তৈরি করার প্রশ্ন থেকেই যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এক ব্যক্তি বা এক দলের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়া ঠেকানো যাচ্ছে কি না সেটিও প্রশ্নের বিষয়। আবার যদি আলোচনার টেবিলে সমাধান না আসে, তবে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, এমনকি আন্দোলনের পথও বেছে নিতে পারে।’
রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার মনে করেন, শুধু জুলাই সনদ নয়, গণপরিষদ গঠন ছাড়া জনআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়ায় আছি। জনগণের অভিপ্রায়কে সামষ্টিক রূপ দিতে হলে গণপরিষদ গঠন জরুরি। অথচ বারবার টালবাহানার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শাসন বহাল রাখার চেষ্টা চলছে।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জুলাই সনদ নিয়ে কাগজে-কলমে কী লেখা হলো, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর পারস্পরিক আস্থা। এ আস্থা তৈরি না হলে সামনে সংঘাত, অবিশ্বাস ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়তে পারে।
কেকে/ এএস