রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক কিশোরী শিক্ষার্থীকে বিয়ে না করেই দুই বছর ধরে গোপনে সংসার করার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান কুঠিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদের মাষ্টার। তিনি পাইকান কুঠিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা গঙ্গাচড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ডে আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার কিশোরী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক দুই বছর আগে ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ে করেন আব্দুল কাদের। তবে মেয়ের বয়স কম হওয়ায় কাবিন রেজিস্ট্রি করা হয়নি। মেয়ের বাবার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই আব্দুল কাদের ও তার দুই ছেলে মেয়েটির সঙ্গে অমানবিক আচরণ শুরু করেন। তাকে সঠিকভাবে ভরণপোষণ দেওয়া হয়নি এবং বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। কাবিননামা রেজিস্ট্রির জন্য চাপ দিলে কাদের তা এড়িয়ে যান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শনিবার সকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা কাবিননামা রেজিস্ট্রির বিষয়ে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করেন। কিন্তু আব্দুল কাদের ও তার পরিবার সেখানে উপস্থিত না হয়ে উল্টো মেয়েটিকে জোর করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শয়নকক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে মেয়েকে উদ্ধার করতে গেলে তারা ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে মেয়ের বাবা ও স্থানীয় লোকজনকে প্রাণনাশ এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, ওই কিশোরী চতুর্থ শ্রেণীতে অধ্যায়নকালীন সময়েই তার সাথে প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদেরের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় দুই বছর আগে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লে প্রধান শিক্ষক তখন ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন।
অপর এক অভিভাবক জানান, ওই স্কুলের শিক্ষার্থী থাকাকালে তার মেয়েকেও ওই প্রধান শিক্ষক কু-প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখন তার মেয়ে ঝাড়ু নিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল কাদেরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিয়ে রেজিষ্ট্রির দাবিতে মেয়েপক্ষ থানায় অভিযোগ করেছে। এর বাইরে আর কিছু বলতে পারবো না।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান বলেন, অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/ আরআই