ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ১৫৫ নম্বর কালিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট তৈরি হয়েছে। এতে পাঠদান কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৬০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত থাকলেও শিক্ষক আছেন মাত্র দুইজন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য অন্তত পাঁচজন শিক্ষক থাকা প্রয়োজন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে যোগ দেন শিক্ষক ইমরান হোসেন। যোগ দিলেও তিনি এখনও বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না। তিনি নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অফিস সহায়ক (কম্পিউটার অপারেটর) হিসেবে কাজ করেন।
বর্তমানে বিদ্যালয়ে মাত্র দুইজন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মিন্টু মিয়াকে অফিসের প্রয়োজনে প্রায়ই উপজেলা শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। ফলে একজন শিক্ষককে একাই তিনটি শ্রেণির পাঠদান সামলাতে হচ্ছে। এতে শ্রেণিকক্ষের শৃঙ্খলা ও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
এ নিয়ে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উদাসীনতার কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
মো. মিন্টু মিয়া বলেন, ‘বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট এখন চরম পর্যায়ে। একদিকে শিক্ষক কম, অন্যদিকে বদলিকৃত শিক্ষক যোগ দিয়েও স্কুলে আসছেন না। অভিভাবক ও স্থানীয়দের চাপের মুখে আছি। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে।’
অভিভাবক আব্দুল করিম বলেন, ‘শুনেছি একজন নতুন শিক্ষক যোগদান করেছেন। কিন্তু তিনি এখনও স্কুলে আসেননি। এতে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, ‘মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়ে ১৬০ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা চালানো অসম্ভব। একজন শিক্ষক অফিসে গেলে অন্যজনকে একাই সব শ্রেণির দায়িত্ব নিতে হয়। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বদলিকৃত শিক্ষক ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশে অফিসে কাজ করছি।’
নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জনবল সংকট রয়েছে। সেই কারণে সাময়িকভাবে ঐ শিক্ষককে অফিসে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেকে/ এমএ