কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের গোলাপাড়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চরম গাফিলতির কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন কৃষক করুণ মৃত্যুবরণ করেছেন। নিহতের নাম মো. সুমন মিয়া (৪০)। তিনি পেশায় একজন কৃষক এবং এলাকার একজন শান্তিপ্রিয় মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে সুমন মিয়া বাড়ির পাশের খালের পানিতে মাছ ধরতে নামেন। সেখানে একটি বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পানিতে পড়ে ছিল, যা দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সেই তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এ কৃষকের। তার মৃত্যুর পরপরই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও যশোদল এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইনের ঝুঁকিপূর্ণ তারগুলো ঠিক করেনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো কর্ণপাত করা হয়নি।
প্রতিবেশী মনির হোসেন বলেন, ‘মানুষ মরলে তবেই কি তাদের টনক নড়ে? এ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা কি শুধু বিল আদায়ের জন্য বসে আছেন? মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই তাদের কাছে!’
এলাকাবাসীর প্রশ্ন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেন নিয়মিত লাইন পরীক্ষা করে না? কেন পুরোনো ও ঝুলন্ত তার সরানো হয় না? কেন কেবল দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করে দায় ঢাকার চেষ্টা চলে?
এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা গোলাপাড়া এলাকায় বিক্ষোভ করেন এবং কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির কথা বলেন।
নিহত সুমন মিয়ার পরিবার এখন সম্পূর্ণ দিশেহারা। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার চলত। এমন একটি মৃত্যু শুধু পরিবার নয়, পুরো সমাজের জন্যই একটি ভয়ংকর বার্তা এ দেশে গাফিলতির দায় কেউ নেয় না, কিন্তু তার খেসারত দিতে হয় সাধারণ মানুষকে।
দাবি উঠেছে এই মৃত্যুর দায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস এড়াতে পারে না। অবহেলার জন্য দায়ীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, নতুবা এ মৃত্যুর মিছিল থামবে না।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আতিকুজ্জামান চৌধুরী দোষ স্বীকার করে বলেন মারা গেছে শুনছি আমি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি এর বেশি কিছু বলতে পারবো না, মানুষ মরলে আমার কি করার আছে।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন মিয়া বলেন, পরিবারের কাছ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি, লাশ থানায় আছে ময়নাতদন্তের পরে যদি পরিবারের কেউ অভিযোগ দেয় তাহলে আইনি কার্যক্রম শুরু করবো।
কেকে/ এমএস