প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশে বা বাইরে যে কোনো সংস্করণে সিরিজ জিতলেও
শ্রীলঙ্কার মাটিতে কখনো তা করতে পারেনি। শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট ও ওডিআই
সিরিজ হারার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিল লিটন দাসের দল।
বুধবার ( ১৬ জুলাই) সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান অধিনায়ক আসালঙ্কা।
সিরিজে শ্রীলঙ্কাকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক এ জয়ে ব্যাটিং-বোলিং দুই ইউনিটেই ভূমিকা রাখেন টাইগাররা। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে শ্রীলংকাকে ১৩২ রানে থামিয়ে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ। দলের জয়ে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান খরচ করে ৪ উইকেট শিকার করেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান। ম্যাচ সেরাও হন মেহেদি। ১৩৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তানজিদ হাসান তামিমের ৪৭ বলে এক চার আর ৬টি ছক্কার সাহায্যে গড়া ৭৩ রানের অনবদ্য ইনিংসে ভর করে ২১ বল হাতে রেখেই জয় পায় বাংলাদেশ। তামিমের সঙ্গে লিটন দাসের ৩২ রানের ইনিংস এবং শেষে হৃদয়ের ২৭ রানে সহজেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচটি ৮৩ রানের ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। ১-১ সমতায় প্রথম দুই ম্যাচ শেষ হওয়ায়, তৃতীয় ম্যাচটি পরিণত হয়েছে অলিখিত ফাইনালে। যেখানে বল হাতে দাপট দেখিয়েছে টাইগাররা। শুরুটা করেছিলেন পেসার শরিফুল ইসলাম। তার করা প্রথম ওভারের শেষ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪ বলে ৬ রান করা কুশল মেন্ডিস।
বাকি গল্পটা শেখ মেহেদীর। ৪ ওভার বল করে ১ মেডেন দিয়ে ১১ রান খরচায় ৪ উইকেট। এ স্পেল-ই বলে দেয় ২২ গজে বল হাতে কতটা আধিপত্য করেছেন টাইগার স্পিনার। শেখ মেহেদী শুরুটা করেন কুশল পেরারাকে দিয়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে প্রথম ৪ বলে ৫ রান দেওয়ার পর তার করা পঞ্চম বলে স্লিপে দাঁড়ানো তানজিদ হাসান তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফেরেন কুশল পেরেরা।
এরপর নিজের দ্বিতীয় আর ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসে সাজঘরে ফেরান দিনেশ চান্ডিমালকে। তার করা তৃতীয় বলটি তুলে মারতে গিয়ে টপ এজ হয়ে জাকের আলীর হাতে ধরা পড়েন ৫ বলে ৪ রান করা চান্ডিমাল। ইনিংসের অষ্টম আর নিজের তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে মেহেদী তুলে নেন লঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কার উইকেট। টাইগার স্পিনারের ওভারের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে পড়ে টার্ন করে ভেতরে ঢুকে। ৮ বলে ৩ রান করে ফেরেন আসালাঙ্কা। মেহেদীর ঘূর্ণিতে একপ্রান্তে একের পর এক উইকেট পড়লেও অপরপ্রান্ত আগলে রেখে শ্রীলঙ্কাকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। তিনি এগোচ্ছিলেন ফিফটির পথে। তবে সুযোগ দেননি মেহেদী।
ইনিংসের ১১তম আর নিজের স্পেলের করা শেষ ওভারে এসে সাজঘরে পাঠান নিশাঙ্কাকে। তার বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩৯ বলে ৪৬ রান করা লঙ্কান ওপেনার। এরপর ক্রিজে আধিপত্য নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস। তাকে সাজঘরে ফেরান পার্ট টাইম স্পিনার শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ১৫ বলে ১ ছক্কা ও ১ চারের মারে ২১ রান করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরা পড়েন কামিন্দু। শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হচ্ছিল ১২০ রানের মধ্যেই। তবে শেষ ওভারে বল করতে এসে সব এলোমেলো করে দেন শরিফুল। তাকে তুলোধুনো করে দুই ছক্কা ও দুই চারের মারে ২২ রান তুলে নেন শানাকা। অপরপ্রান্তে ৯ বলে ৬ রান করে তাকে সঙ্গ দিয়ে যান মহিশ থিকশানা।
কেকে/এজে