বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫,
২ শ্রাবণ ১৪৩২
বাংলা English

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম: যুবদল নেতাসহ ৮ জনকে কুপিয়ে জখম      গোপালগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ১৪      সারা দেশে এনসিপির বিক্ষোভ কর্মসূচি আজ      আন্দোলনে উত্তাল দেশ      রণক্ষেত্র গোপালগঞ্জ, নিহত ৪      শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়      কারফিউ শুরু, থমথমে রাত গোপালগঞ্জে      
খোলাকাগজ স্পেশাল
কয়েক জেলায় বন্যার পদধ্বনি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫, ১২:০৭ এএম
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ এবং মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত কয়েক দিন ধরেই টানা বৃষ্টি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে উপকূলের নিচু এলাকা। কয়েক জেলায় বন্যার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। 

বিশেষ করে ফেনীর মুহুরী-সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নোয়াখালীতে দ্রুত বাড়ছে পানি। বান্দরবান ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা ও পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে বরিশাল ও ভোলার উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যার পরিস্থিতির কারণে কুমিল্লায় গোমতী নদীর তীরবর্তী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে

ফেনী : ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৩০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ১২.৫৫ মিটার। মঙ্গলবার রাত ১০টায় সবশেষ ১৩.৯২ মিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। অর্থাৎ বিপৎসীমার ১.৩৭ মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

গত মঙ্গলবার সকাল ৭টায় নদীটির পানি প্রবাহ ছিল ৭.০০ মিটার উচ্চতায়। রাত ১০টা পর্যন্ত গত ১৫ ঘণ্টায় মুহুরী নদীর পানি বেড়েছে ৬.৯২ মিটার। অর্থাৎ ২২ ফুট ১০ ইঞ্চি বেড়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সর্বোচ্চ ফেনীতে ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। যা চলতি বর্ষা মৌসুমের সর্ব্বোচ রেকর্ড। পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি, শালধর এলাকায় একটি, ফুলগাজী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিলোনিয়া নদীর পরশুরামের গদানগর এলাকায় একটি ও ফুলগাজীর দেড়পড়া এলাকার দুটি স্থানে ভেঙেছে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, ‘জেলায় টানা দুদিন ধরে মাঝারি ও ভরী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার ও বৃহস্পতিবারও জেলাজুড়ে মাঝারি বা ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাত ১২টার পর মুহুরী নদীর পানি কিছুটা কমেছে। উজানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি প্রবাহ বাড়বে। আরো নতুন বাঁধ ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।

নোয়াখালী : টানা বর্ষণে ফের জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীসহ সদর, কবিরহাট, কোম্পানিগঞ্জ  উপজেলা। গত কয়েকদিন থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া শহরের প্রধান সড়ক, উপসড়ক, আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান ডুবে গেছে হাঁটু পানিতে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার চরম দুর্বলতায় পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ, রোগী ও সাধারণ পথচারীরা। জেলা শহরের বাসিন্দা আরিফ  বলেন, নোয়াখালী শহরে অপরিকল্পিত আবাসন ও দোকানপাট গড়ে তোলার ফলে বৃষ্টির পানি আর কোথাও যেতে পারে না। যদি এখনই টেকসই ড্রেনেজ ব্যবস্থার উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে আগামী দিনে শহর স্থায়ী জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে।

জেলা আওহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত কয়েক দিন বৃষ্টি হয়েছে। আগামী কয়েক দিনও বৃষ্টি হতে পারে। 

কুমিল্লা : কুমিলায় গোমতী নদীর দুই তীরের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। আকস্মিক বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতিতে এ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গোমতী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার প্রায় ২ দশমিক ৮ মিটার নিচে রয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় ১০ সে. মি. করে বাড়ছে এ নদীর পানি। এই নদীর পরবর্তী পরিস্থিতি নির্ভর করবে বৃষ্টিপাত ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের ওপর। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১২৯ মি. মি.। গত মঙ্গলবার বিকালে ৪টায় কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

গোমতী নদীর চরাঞ্চলের মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঠে আসছেন প্রতিরক্ষা বাঁধে। পানি আরো বৃদ্ধি পেলে ডুবে যাবে কুমিল্লার সবজি ভান্ডারখ্যাত এ নদীর চর। এতে শাকসবজির ক্ষেতগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। এদিকে শুকনো মৌসুমে এ নদীর চর থেকে মাটি কাটায় বদলে গেছে নদীর গতিপথ। এ কারণে এখন তীব্র স্রোতের মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। গোমতি নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ দিয়ে দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও বুড়িচংয়ের অন্তত ৩০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান বলেন, কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারতের অংশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় গোমতী নদীর পানি বেড়েছে। বৃষ্টি থেমে গেলে এবং উজানের ঢল বন্ধ হলে বিপদ কাটতে পারে। 

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, বন্য মোকাবিলায় ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। 

শিক্ষক ময়নাল হোসেন বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সেখানে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের কুমিল্লা অঞ্চলেও টানা কয়েকদিনের ঝুম বৃষ্টি। এ কারণে নদীর তীরের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে নদীর পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বান্দরবান : দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো পার্বত্য জেলা বান্দরবানেও গত কয়েক দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, এদিকে টানা বৃষ্টিতে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।  অতিবৃষ্টির কারণে জেলা সদরের কালাঘাটা, বালাঘাটা, বনরুপা পাড়া, সিদ্দিক নগরসহ বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আর সেইসঙ্গে কয়েকটি পয়েন্টে পাহাড় থেকে মাটি ভেঙে সড়কে জমে থাকায় পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

বৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের শঙ্কা থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। মাইকিং এ বলা হচ্ছে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের ফলে জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই যারা পাহাড়ের পাদদেশ, চূড়া, নদী তীরবর্তীসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছেন তাদের সতর্ক থাকাসহ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের বান্দরবান কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বিকাল ৩টা পর্যন্ত) বান্দরবানে ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সবাই দুর্যোগ নিয়ে সচেতন রয়েছি এবং বান্দরবানের সাংগু ও মাতামুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে এবং আমরা প্রতিনিয়ত সবকিছু মনিটরিং করছি। 

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে কর্মজীবী এবং শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টির পরিমাণ আরো বেড়ে যাওয়ায় পাহাড় ধসের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। কখনো অঝোর ধারায়, আবার কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের এলাকায়। এতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে সড়ক ডুবে গেছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে নগরীর আগ্রাবাদ, জিইসি মোড়, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, কেবি আনাম আলী রোড়, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, রাহাত্তারপুল, বহদ্দারহাট এলাকায় কোথাও কোথাও সড়ক ও অলিগলির রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। এদিকে ভারী বর্ষণের ফলে পাহাড়ধসের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। পরিবেশ অধিদফতরের নির্দেশনা না মেনে কাটা পাহাড়াগুলোতে ধস হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে।’

ভোলা : ভোলার মনপুরা উপজেলার প্রায় সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া, তজুমদ্দিন ও দৌলতখানেও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ভোলা জেলা প্রশাসন। ভোলায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ইন্সপেক্টর মো. জসিম উদ্দিন জানান, উপকূলীয় এলাকায় চলাচলকারী সব লঞ্চ, বিশেষ করে হাতিয়া, লক্ষ্মীপুর, দৌলতখান ও বেতুয়াসহ দশটি রুটের ১৩টি সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান জানান, জেলার নিম্নাঞ্চল, বিশেষ করে বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন ও মনপুরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ‘তবে আমরা ভাটার জন্য অপেক্ষা করছি, এসব পানির অধিকাংশ নেমে যাবে বলেও প্রত্যাশা করছি। এখন পর্যন্ত উপদ্রুত অবস্থায় নেই, আমরা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছি’, বলেন তিনি। প্রবল বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি ঢুকে ভোলা সদরের ৯ নম্বর চরনাবাদ মাঝি বাড়ি এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘর নিমজ্জিত হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

বরিশাল : বরিশাল নগরীর অধিকাংশ নিচু এলাকাও দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে বটতলা রোড, গোরস্থান রোড কলেজে অ্যাভিনিউ ও আমানতগঞ্জ এলাকা পানিতে ডুবে আছে বলে জানান স্থানীয়রা। নগরীর প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষ করে সরকারি বিএম কলেজ প্রবল বর্ষণে পুরোপুরি ডুবে আছে। এ ছাড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ও পানিতে তলিয়ে আছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বরিশালে ১৪২ মিলিমিটার ও বরগুনায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. তাজুল ইসলাম জানান, বিভাগের নদ-নদীর পানি আগের তুলনায় বেড়েছে। প্রবল বর্ষণ ছাড়াও জোয়ার ও পূর্ণিমার কারণে মূলত এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মেঘনা নদী তজুমদ্দিন পয়েন্টে বিপৎসীমার চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

কাউখালী (পিরোজপুর) : পিরোজপুরের কাউখালীতে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে প্রায় বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে যাননি তেমন একটা।  উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙ্গিনায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। টানা বর্ষণের ফলে সড়কে যানবাহন চলাচল ছিল খুবই কম। এতে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে মহাবিপাকে। বৃষ্টির কারণে মানুষ কাজে যেতে না পারায় ঘরে বসে অলস সময় কাটিয়েছেন।
  
স্থানীয় শওকত, আলমগীর, সোহেল, জাহিদ, সবুজ জানান, গত রোববার দিবাগত রাত থেকে ভারী বৃষ্টি হয়। এরপর বৃষ্টির বেগ কিছুটা কমে এলেও  সোমবার সন্ধ্যা থেকে বিরামহীনভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে উপজেলা শহরের সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়। যে ড্রেন রয়েছে তাও পরিষ্কার না থাকায় জলাবদ্ধতা এখানকার নিত্যদিনের সঙ্গী। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। শহরের আশপাশের খালগুলো খনন না করা হলে এ জলাবদ্ধতা থেকে তাদের নিস্তার নেই। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোমা রানী দাস বলেন, গত তিন দিন ধরে চলা বৃষ্টি যদি আরো ২/১ দিন স্থায়ী হয় তাহলে সবজি ও পান বরজের অনেক ক্ষতি হবে।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  বন্যা   বঙ্গোপসাগর   লঘুচাপ   মৌসুমি বায়ু  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সাটুরিয়ায় সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
পরিবেশ রক্ষায় কালীগঞ্জ কল্যাণ সংস্থার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
বিপিএমসিএ’র প্রথম সভাপতি হলেন ডা. মহিউদ্দিন
তারেক রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
ইরাকে শপিংমলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৫০

সর্বাধিক পঠিত

‘মানুষ মরলে আমার কি’
সুদের লেনদেনের স্ট্যাম্প ফেরত না দেওয়ায় হত্যা
‘দেশে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে তা কখনোই কাম্য নয়’
গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি
দশমিনায় নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close