সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
ফিচার
কালাইয়ে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নকশি কাঁথা
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫, ৬:০১ পিএম
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নকশি কাঁথা। ছবি : প্রতিনিধি

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নকশি কাঁথা। ছবি : প্রতিনিধি

কালাইয়ে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে কুটির শিল্প। এক সময় উপজেলার খেটে খাওয়া পরিবারের দলবদ্ধ হয়ে গৃহবধু ও কিশোরীদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরী হচ্ছে এসব গ্রামীন নকশি কাঁথা। এবং কাঁথায় সুই আর সুতা দিয়ে সেলাই করা তাদের হাতের ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলা হতো নানা রঙের নকশা। 

জানা যায় যে, প্রযুক্তির বদলৌতে এখন গ্রামের নকশি কাঁথার কদর কমে গেছে। ফলে গ্রামের দরিদ্র নারীদের সেলাই করে বাড়তি আয়ের উৎস এখন আর নেই। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যে মিশে আছে প্রাচীন শিল্পকলার নিদর্শন এই সুচ শিল্প। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল গ্রামের আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড। গ্রামীণ কাঁথা আধুনিকতার স্পর্শে আজ বিলুপ্তীর পথে যেতে বসেছে।

মেয়েদের বিয়ের পর বাবার বাড়িতে থেকে পাঠানো হতো গ্রামীন ঐতিহ্য নকশি কাঁথা। এখন আর গ্রামের মহিলাদের কাঁথা সেলাইয়ে ব্যস্ত সময় পার করতে এখন আর দেখা যায় না। পুরনো কাপড়, নতুন কাপড়ও সুতা দিয়ে সুনিপুণ হাতে তৈরি করা হতো এই নকশি কাঁথা। গ্রামের মহিলা মনের মাধুরী মিশিয়ে হাতে সুচ আর লাল, নীল, সবুজ,বেগুনি, হলুদসহ কয়েক রঙের সুতায় নান্দনিকতার বৈচিত্র্যে সেলাই করে থাকেন কাঁথা। শীত মৌসুমে লেপের নিচে ব্যবহারও করা হতো এই কাঁথা। এছাড়াও শিশুদের প্রতিপালনের জন্য ধনী ও দরিদ্র পরিবারের সকলেই কাঁথা ব্যবহার করতো। যা নিত্যদিনই পুকুরে পরিস্কার করে রোদে বাঁশের খুঁটিতে ঝুলিয়ে শুকানো হতো। এখন দেশি-বিদেশি কম্বল, লেপ-তোশক আসায় এসব হারিয়ে গেছে।

সমাজসেবা অফিসের তথ্যমতে জেলায় সাড়ে সাত হাজার সুই সুতার নারী কারিগর রয়েছেন। 

এ উপজেলার কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এখনো তৈরি করছে নিত্য নতুন নকশি কাঁথা। এ কাঁথা তৈরি করতে যে পরিমাণে পরিশ্রম করতে হয় সে পরিমাণে মজুরি তারা পায় না। ফলে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তারা। গ্রামের এ দরিদ্র মহিলারা জানাই তাদের যদি সরকারিভাবে নানা রকম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং আর্থিক সহায়তা করা হয় তাহলে তারা এ নকশি কাঁথা থেকে আমাদের দেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন।

 এ উপজেলার নারী উদ্যোক্তা ফরিদা পারভীন বলেন, কাঁথা শুধু বাড়ির জন্যই তৈরি করি তা নয়। আমরা অনেকে মজুরি হিসেবেও কাঁথা সেলাই করে দিই। এবং নকশী কাঁথা তৈরী করে যে মজুরি পাই তা দিয়ে পরিবারের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংসারিক কাজে ব্যয় করা হতো।

এ মেহেরুননেছা বলেন ,আগে আমরা সবসময় নতুন বা পুরনো কাপড় দিয়ে কাঁথা সেলাই করতাম। এখন দেশি-বিদেশি কম্বল, লেপ আসায় এসব হারিয়ে গেছে। সংসারের কাজের ফাঁকে কাঁথা সেলাই করে আয়রোজগার হতো, এখন তা আর হয় না। এখন মানুষ কাঁথা সেলাই করে নিতে চায় না, মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুঁজে একটা কাঁথা নিয়ে এসে সেলাই করি ৫শ' থেকে ১ হাজার টাকা পাই। সেই টাকা দিয়ে সংসারের বাড়তি আয়ের উৎস। তাও আগের মতো পারি না।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা আক্তার জাহান, বলেন,এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ছিল নকশি কাঁথা। এটি এখন কালের বিবর্তনে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। নকশী কাঁথাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত গ্রামীণ নারীদের সহযোগিতার জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা দরকার। তাহলে এই হারনোর ঐতিহ্য ধরে রাখা যাবে।  

কেকে/ এমএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

মধ্যরাতে ঢাবি ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ
ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে : তানভীর হুদা
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার

ফিচার- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close