কৃষি পরিবারের সন্তান নুরুল হক। কৃষি ফসল উৎপাদন করেই মৌলিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে আবাদ করেছেন পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল ড্রাগনের। টানা চার বছর ধরে এ ফল বিক্রি করে ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা। প্রতি মৌসুমে এখান থেকে আয় করছেন লাখ-লাখ টাকা। এখন সংসারে ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা।    

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরের দিকে সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আরাজী জামালপুর মৌজায় গিয়ে দেখা গেছে- ড্রাগন ফুল-ফলের সমাহার। এ ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিলেন কৃষক নুরুল হক।

জানা যায়, জামালপুর ইউনিয়নের বড় জামালপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ মণ্ডলের ছেলে নুরুল হক। কৃষি পরিবারই তার জন্ম। তাই কৃষি কাজই নেশা ও পেশা। যুগ যুগ ধরে নানা ফসল উৎপাদনে সাংসারিক চাহিদা পূরণ করে চলছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত চার বছর আগে অধিক লাভের আশায় আবাদ করেছে বিদেশি জাতের ড্রাগন। সেই সময়ে ময়মনসিংহের মধুপুর এলাকা থেকে এই চারাগুলো সংগ্রহ করা হয়। তার নিজস্ব ২৬ শতক জমিতে সাড়ে ৩ হাজার ড্রাগন চারা রোপণ করেছেন তিনি। অধিক ফলনও পাচ্ছেন। বাজারে চাহিদা ও দাম রয়েছে ভালো। এর ফলে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরেছে তার সংসারে। চলতি মৌসুমেও রয়েছে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন নুরুল হক।  

ড্রাগন চাষ সম্পর্কে কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, উঁচু ও মাঝারি উঁচু উর্বর জমিতে ড্রাগন চাষাবাদ উপযোগী। মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য অক্টোবর পর্যন্ত ড্রাগন ফলের কাটিং চারা রোপণ করতে হয়। এ সময় থেকে এক-দেড় বছরের মধ্যে ফল আসা শুরু করে। একবার চারা রোপণ থেকে টানা ১২ বছর ফল নেওয়া যায়।    

কৃষক নুরুল হক জানান, প্রাথমিকভাবে ২৬ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ফল সংগ্রহ ও বিক্রি শুরু করা হচ্ছে। গত চার বছরে ৮ লক্ষাধিক টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছেন। চলতি মৌসুমে ২ লক্ষাধিক টাকা ড্রাগন বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে টানা ১২ বছর ফল সংগ্রহ করা যাবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহীনুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ড্রাগন ফলে অত্যন্ত পুষ্টিগুণ রয়েছে। এতে ভিটামিন সি মিনারেলসহ অন্যান্য গুণ পাওয়া যায়।

সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, ড্রাগন চাষ অত্যন্ত লাভজনক। পরিকল্পিতভাবে যে কেউ আবাদ করলে অনায়াসে লাভবান হবেন। সেই সঙ্গে কৃষক নুরুল হককে লাভবান করতে সার্বিক সহযোগীতা অব্যাহত রয়েছে।

কেকে/ এমএস