একজন ব্যবসায়ী ও এক প্রবাসীর শখের মাল্টা চাষ নবীগঞ্জের কৃষকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে। তাদের সফলতার গল্প প্রমাণ করে, শখের বসে হলেও সঠিক পরিশ্রম ও মনযোগ দিয়ে বড় সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের মাহমূদপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল খয়ের কায়েদ তার শখের বসে শুরু করা মাল্টা চাষে আজ তিনি সফল। রাজনীতি ও নানা ব্যবসায়ের পাশাপাশি ২০১৪ সালে বাড়ির পাশে মাত্র ৫ বিঘা জমিতে শুরু করেন মাল্টার চাষ।
ছবি খোলা কাগজ
কৃষি সপ্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে গ্রিন মাল্টা দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও প্রথম বছর ফলন মেলেনি। কিন্তু হতাশ হননি তিনি। নিয়মিত কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ও নিজের নিবিড় আগ্রহ আর পরিশ্রমে দ্বিতীয় বছরেই আসে ফলন। ফলনের সাথে সাথে বেড়ে যায় উৎসাহ, বাড়তে থাকে মাল্টা চাষের পরিধিও। বর্তমান তার মাল্টা বাগানে প্রায় ৫০০টি গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছের সঠিক পরিচর্যা ও যত্নে তিনি এ বছর প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা লাভের প্রত্যাশা করছেন।
অপর দিকে, বনগাঁও গ্রামের লন্ডন প্রবাসী দেলাওয়ার উদ্দীন ও শখের বশে মাল্টা চাষ করে সফল হয়েছেন। তার বাড়ীর আঙ্গিনায় চাষ করেছেন ৩০০ গাছ। ভালো ফলন দেখে ভবিষ্যতে ব্যবসায়িকভাবে মাল্টা চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। শুধু নিজের জীবন নয়, এসব বাগান এলাকার মানুষের জন্য এক অনুপ্রেরণা ও সম্ভাবনার চিত্রও হয়ে উঠেছে।
এই মাল্টা বাগান সুনাম কুড়িয়েছে এলাকায়। বাগানে কাজ করে পরিবার চালাচ্ছেন বহু শ্রমিক। বাণিজ্যিকভাব মাল্টা চাষ করে বেকারত্ব সমস্যা দূর করে স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্র হিসেবে সহায়ক হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। সফল উদ্যােক্তা কায়েদের মাল্টা বাগান দেখে মাল্টা চাষ করে ভাগ্য বদলাতে উৎসাহিত হচ্ছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা।
আবুল খয়ের কায়েদ বলেন, ‘আমি শখের বসে মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছি। মাটির উর্বরতা ভালা হওয়ার কারণে এই এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করলে সুফল পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।’
নবীগঞ্জ উপজলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ ফজলুল হক মনি বলেন, ‘নবীগঞ্জের জন্য মাল্টা একটি সম্ভবনাময় ফসল, কৃষি সপ্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শক্রমে কৃষকরা মাল্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।’
মাটির টান, শ্রমের বিনিময়ে এক ব্যতিক্রমী গল্প গড়েছেন আবুল খায়র কায়েদ ও দেলওয়ার উদ্দীন। নবীগঞ্জের এই মাল্টা বাগানগুলো এখন শুধু শখের নয়, এলাকার অর্থনীতিরও এক নতুন দিগন্ত।