রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেছেন, নকশা বহির্ভূত ও অননুমোদিত রেস্টুরেন্ট এবং আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করছে রাজউক। নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে পরিচালিত রেস্টুরেন্টে অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। এ লক্ষ্যে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ অন্যান্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ভবন দুর্ঘটনা হ্রাসের লক্ষ্যে আন্তঃসংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডে বহুতল ভবনে অননুমোদিত রেস্টুরেন্ট পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসিসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো জানান, একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তুলতে রাজউক সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাসে রাজউক অন্যান্য সরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে। ঝুঁঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ পরিদর্শন করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিদর্শনের সময় রাজউক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল দেখতে পান— ১৩ তলা অনুমোদিত ভবনের ওপর আরো এক তলা নির্মাণ করে রেস্টুরেন্ট পরিচালিত হচ্ছে। ফরেস্ট লাউঞ্জ নামক রেস্টুরেন্টটি ১৪তম তলা হিসেবে নির্মিত অংশে চলছে। বিভিন্ন তলায় রেস্টুরেন্ট থাকলেও অধিকাংশ জায়গায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল অপ্রতুল। কোথাও কোথাও অগ্নি নিরোধক দরজা ও জরুরি বহির্গমনের ফায়ার সিঁড়িও ছিল না।
নিরাপত্তার জন্য নির্ধারিত করিডর বন্ধ করে স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, একটি জরুরি গেট ছিল কলাপসিবল গেট দিয়ে বন্ধ। এমনকি কিচেনে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় দুর্যোগকালে তা ব্যবহার অনুপযোগী বলেও মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভবনের নকশা অনুযায়ী যেসব তলায় অফিস থাকার কথা ছিল, সেখানে রেস্টুরেন্ট পরিচালনার বিষয়ে ভবন মালিক পক্ষ কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি।
পরিদর্শন শেষে রাজউক চেয়ারম্যান উপস্থিত শিক্ষার্থী ও অতিথিদের ভবন ব্যবহারে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
ভবনটির বিদ্যমান ব্যত্যয় এবং ঝুঁকির বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিক মৌখিকভাবে অবহিত করেন এবং ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সব ত্রুটি সংশোধনের নির্দেশ দেন।
পরবর্তীতে ভবন মালিকের পক্ষে ইম্পেরিয়াল কনসালটেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শামীম রেজা একটি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন, যেখানে উল্লিখিত ত্রুটিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
রাজউক চেয়ারম্যান আরো জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলোর সমাধান না হলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এ কাজে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো রাজউকের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন— রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) শেখ মতিয়ার রহমান, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) মোহা. হারুন-অর-রশীদ, প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, প্রধান নগর স্থপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও সহযোগী সংস্থাগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ।
কেকে/এএম