বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫,
২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: আন্দোলনরত শিক্ষকরা কাজে না ফিরলে আইনি ব্যবস্থা      রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ইসিকে তফসিল দেওয়ার আহ্বান নাহিদের      খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে প্রধান উপদেষ্টা      অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে জিরো টলারেন্স নিশ্চিত করতে হবে : উপদেষ্টা ফরিদা      প্রবাসীরা ৬০ দিনের বেশি দেশে থাকলে ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে      এভারকেয়ারের পাশে সেনা-বিমান বাহিনীর মহড়ায় বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ      শীত নিয়ে দুঃসংবাদ দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর      
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
মাদকের প্রবাহ রোধে চাই রাষ্ট্রীয় জিরো টলারেন্স
খোলা কাগজ
প্রকাশ: সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৭ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পর্যটন জেলা কক্সবাজার এখন মাদকের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে। শুধু শহর নয়- গ্রাম, পাহাড়, চর, ইউনিয়ন, এমনকি প্রতিটি জনপদেই মাদকের থাবা দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, থিমছড়ি ও উখিয়ার বিভিন্ন এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই মাদক প্রবাহের ‘হাই রিস্ক জোন’। এলাকার একসময়ের দরিদ্রতম মানুষটিও মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে আজ কোটি টাকার মালিক। এভাবে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠার প্রবণতা কক্সবাজার অঞ্চলে মাদক চোরাচালানকে উৎসাহিত করছে। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযানেও মাদক প্রবাহ থামছে না। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ইয়াবা ধরা পড়ছে, আবার শোনা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যও এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। গত ২৮ নভেম্বর রাতে রামুর রাবারবাগান এলাকায় ডিবির অভিযানে ৯০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার এবং বাস হেল্পার আবু বক্কর সিদ্দিকের গ্রেফতার এ বাস্তবতার আরেকটি প্রমাণ। তার পূর্বের দিন উখিয়ার ফারির বিল সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবির হাতে জব্দ হয় আরও ৩ লাখ ৬০ হাজার ইয়াবা। যদিও কাউকে আটক করা যায়নি, তবে উদ্ধারকৃত মাদকের সংখ্যা উদ্বেগজনকই নয় অভিযানের ফাঁকফোকর, পাহারাব্যবস্থার দুর্বলতা এবং পাচারকারীদের প্রভাবশালী নেটওয়ার্কের দিকেও আঙুল তোলে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে  মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই ছোট-বড় পার্সেল আকারে দেশে ঢুকছে মরণ নেশা ইয়াবা। 

স্থানীয়রা বলেন, গরু পাচারের ফাঁকে ইয়াবা ঢোকানো এখন নিয়মিত কৌশল। আবার হিমছড়ির ‘ডাকাত রহিম’ নামে পরিচিত রহিম উল্লাহর মতো স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বিশাল বাহিনী নিয়ে পাহাড়ি রুট নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। হত্যা, অপহরণ, দস্যুতা ও চোরাচালানের ডজনখানেক মামলার আসামি এসব ব্যক্তিই এখন মাদক প্রবাহের ‘স্থানীয় গডফাদার’। তাদের রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত প্রভাব এমনভাবে বিস্তৃত যে, সাধারণ প্রশাসনিক তৎপরতা দিয়ে আটকানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কক্সবাজারের পর্যটন অর্থনীতি আজ বড় হুমকির মুখে। যেখানে বিদেশি পর্যটক আনার জন্য সরকারি-বেসরকারি খাত কাজ করছে, সেখানে মাদকবাণিজ্যের বড় নেটওয়ার্ক জেলার ইমেজকে ধ্বংস করছে। হোটেল-মোটেল জোনেও ইয়াবা বিক্রির অভিযোগ নতুন নয়। একটি শহরের পর্যটন নিরাপত্তা দুর্বল হলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, বিনিয়োগ কমে এবং অপরাধচক্র শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এখন প্রশ্ন- সমস্যা কি এতটাই অমোচনীয়? না। যদি রাষ্ট্রীয় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে মাদকের এ ছোবল থামানো সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সীমান্তে আরও উন্নত নজরদারি বাড়ানো

ড্রোন, থার্মাল স্ক্যানার, হাইটেক সারভেইলেন্স ব্যবহারের সময় এসেছে। শুধু টহল নয়, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে হবে। স্থানীয় গডফাদারদের বিচারের আওতায় আনা ম্যানেজড অপারেশন নয়, সরাসরি টাস্কফোর্স গঠন করে বড় চক্রগুলোকে ধরতে হবে। ছোট ক্যারিয়ার ধরা দিয়ে মূল সমস্যার সমাধান হবে না। প্রশাসনের অভ্যন্তরের দুর্নীতি দমনে মনযোগ দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া জনগণের আস্থা ফিরে আসবে না। জেলার পর্যটন এলাকায় ‘স্পেশাল সেফটি জোন’ তৈরি

এলাকাভিত্তিক বিশেষ নজরদারিতে হোটেল-মোটেল জোনকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব। স্থানীয় যুবকদের পুনর্বাসন ও সচেতনতা কর্মসূচি বাড়াতে হবে। যাদের হাতে কাজ নেই, শিক্ষা নেই, তাদের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম হলো দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।

কক্সবাজার দেশের মুখ। অথচ এ জেলায় প্রতিদিন লাখ লাখ ইয়াবা ঢুকে পড়ছে- এ বাস্তবতা শুধু স্থানীয় সমস্যা নয়, জাতীয় নিরাপত্তারও বড় চ্যালেঞ্জ। এখনই কঠোর সিদ্ধান্ত না নিলে এ জেলা ধীরে ধীরে মাদক-অর্থনীতির অন্ধকারে ডুবে যাবে। সময় এসেছে- রাষ্ট্রযন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব মিলে এ যুদ্ধে একাত্ম হওয়ার। কারণ ইয়াবার আগ্রাসন সহনশীলতার জায়গায় নেই।

কেকে/এমএ
আরও সংবাদ   বিষয়:  মাদকের প্রবাহ   রোধ   রাষ্ট্রীয় জিরো টলারেন্স  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

হামজা-শমিতদের ম্যাচ থেকে ৪ কোটির বেশি আয় বাফুফের
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে যোগ দিলেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার
চিরিরবন্দরে বাস–ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ২
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ৩
দশমিনায় মৎস্য মেরিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সর্বাধিক পঠিত

বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বান্দরবানে প্রার্থনা সভা
সাভারে টিভি সাংবাদিকদের সংগঠন টিআরসি'র আত্মপ্রকাশ
ফটিকছড়িতে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান
চিরিরবন্দরে বাস–ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ২
বিএনপি নেতার পুকুরে বিষপ্রয়োগ

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close