সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ইসরায়েলে ট্রাম্পের ভাষণে বাধা, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির দাবি      কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি      শিক্ষা ভবনের সামনে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ      হামাস-ইসরায়েল বন্দি বিনিময় শুরু, প্রথম দফায় ৭ জিম্মি হস্তান্তর      ভারী বর্ষণ-বন্যায় মেক্সিকোতে নিহত ৪৪, নিখোঁজ ২৭      ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      
ধর্ম
ইসলামে মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ যে কারণে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:৫৬ এএম আপডেট: ০৭.১২.২০২৪ ৯:০৯ এএম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মাদক সমাজ ও সভ্যতাকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। মাদক ও নেশাদ্রব্য জাতির যুবশক্তি ও আর্থিক সামর্থ্য ধ্বংস করে। মাদকাসক্তি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ বহু অপরাধের জন্ম দেয়, যা মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। ইসলাম সব ধরনের মাদক ও নেশাদ্রব্য হারাম করেছে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্যই মদ আর যাবতীয় মদ হারাম।’(সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৫৫৮৬)

মাদকের ভয়াবহতা

মাদকের পার্থিব ও অপার্থিব ক্ষতির পরিমাণ অনেক। যেমন—

১. সব অকল্যাণের চাবি : মাদক নানা ধরনের অকল্যাণ ও মন্দের দুয়ার খুলে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মদ পান কোরো না। কেননা তা সব অকল্যাণের চাবিকাঠি।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৭১)

২. অশ্লীলতার উৎস : মাদক মানুষকে বিভিন্ন প্রকার অশ্লীল কাজে প্রলুব্ধ করে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা মদ থেকে বেঁচে থাকো। কেননা তা অশ্লীল কাজের মূল।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৫৬৬৭)

৩. জান্নাত থেকে বঞ্চিত হওয়া : মাদক গ্রহণকারী ব্যক্তি জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সর্বদা মদ পানকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৭৬)

৪. অভিশাপ্ত হওয়ার কারণ : মদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের প্রতি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অভিশাপ রয়েছে। মদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে এমন ১০ শ্রেণির লোকের প্রতি রাসুল (সা.) অভিশাপ করেছেন : ১. যে লোক মদের নির্যাস বের করে, ২. প্রস্তুতকারক, ৩. মদপানকারী, ৪. যে পান করায়, ৫. মদের আমদানিকারক, ৬. যার জন্য আমদানি করা হয়, ৭. বিক্রেতা, ৮. ক্রেতা, ৯. সরবরাহকারী, ১০. এর লভ্যাংশ ভোগকারী। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ২৭৭) 

মদ নিষিদ্ধের ক্রমধারা

জাহেলি যুগে আরবরা মদ পানের জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলে।

তাদের মাদকতার আসক্তির কোনো সীমা ছিল না। তাদের ভাষায় মদের প্রায় ১০০টি নাম রাখা হয়েছিল।
তাদের কাব্য ও কবিতায় মদের বিভিন্ন প্রকারের উল্লেখ আছে। ইসলাম তাদের সুনির্দিষ্ট ও সুস্থ পথে পরিচালিত করে। এ জন্য মদ পান নিষিদ্ধ করার জন্য ক্রমিক নীতি অবলম্বিত হয়েছে। ইসলাম প্রথমে মদের মন্দ দিকগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরেছে। মদের অপকারিতা ও পাপ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করেছে। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন! এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্য উপকারিতাও রয়েছে, তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২১৯)

দ্বিতীয় পর্যায়ে নামাজের সময় মদ পান হারাম করা হয়। আল্লাহ নির্দেশ দেন—‘হে মুমিনরা! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাকো, তখন নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না। যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪৩)

চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে মদ পুরোপুরি হারাম করা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্যনির্ধারক শরগুলো শয়তানের কাজ ছাড়া কিছু নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাকো, যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। শয়তান তো চায় মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ থেকে তোমাদের বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন কি নিবৃত্ত হবে?’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৯০-৯১)

সাহাবিদের ভেতরে মদ নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়া

রাসুল (সা.)-এর ঘোষক যখন মদিনার অলিগলিতে প্রচার করতে লাগল যে মদ পান হারাম করা হয়েছে, তখন যার হাতে মদের যে পাত্র ছিল, তা তারা সেখানেই ফেলে দিয়েছিল। যার কাছে মদের কলস বা মটকা ছিল, তা ঘর থেকে তত্ক্ষণাৎ বের করে ভেঙে ফেলেছিল। আনাস (রা.) এক মজলিসে মদ পরিবেশন করছিলেন। আবু তালহা, আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ, উবাই বিন কাব, সুহাইল (রা.) প্রমুখ নেতৃস্থানীয় সাহাবিরা সে মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। প্রচারকের ঘোষণা কানে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে সবাই সমস্বরে বলে উঠলেন, এবার সব মদ ফেলে দাও। এর পেয়ালা, মটকা, হাঁড়ি ভেঙে ফেল। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৬৬২; সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৭১২)

মাদকের প্রসার কিয়ামতের নিদর্শন

কিয়ামতের আগে মাদক এমন বিস্তার লাভ করবে যে মাদক সেবনকারী সাব্যস্ত করাকে অপরাধ মনে করবে না। আনাস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে ‘কিয়ামতের আলামতগুলোর মধ্যে রয়েছে ইলম উঠে যাবে, মূর্খতা, ব্যভিচার ও মদ পান বেড়ে যাবে। পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাবে এবং নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। এমনকি ৫০ জন নারীর পরিচালক হবে একজন পুরুষ।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৮৪)

কেকে/এআর
আরও সংবাদ   বিষয়:  মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ   আর্থিক সামর্থ্য ধ্বংস   ইসলাম  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

নাগেশ্বরীতে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন
জালিয়াতি মামলায় ভারতীয় নাগরিক গ্রেফতার
ইসরায়েলে ট্রাম্পের ভাষণে বাধা, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির দাবি
কুমিল্লা সীমান্তে ৩ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি জব্দ
ওজন বাড়াতে চিংড়িতে জেলি, সরাইলে ব্যবসায়ীকে লাখ টাকা জরিমানা

সর্বাধিক পঠিত

অসুস্থ নাতনিকে দেখতে এসে লাশ হলেন নানা-নানি
মানবিক পদক্ষেপে প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস
টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহে যুক্ত করার প্রস্তাবের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
শিবচরে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন
বাঞ্ছারামপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

ধর্ম- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close