সারা দেশের সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির অংশ হিসেবে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সোমবার (১৩ অক্টোবার) সকাল থেকে উপজেলার ড. নূরুল আমিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, রিজিয়া বেগম মহিলা কলেজ, শহীদ হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, কাকৈর উচ্চ বিদ্যালয়, শিরুয়াইল উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ক্লাসে পাঠদান বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছেন।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে এবং পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে এই কর্মবিরতি পালন করা হয়।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
সোমবার সকালে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা পাঠদান বন্ধ রাখে। এ সময় কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও একাত্মতা প্রকাশ করে কলেজের মূল ফটকে মানববন্ধন করে।
ড. নুরুল আমীন কলেজের শিক্ষার্থী মনিরা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষকরা অনেক কষ্ট করে আমাদের পড়ান, বাড়িভাড়া তাদের অধিকার। তাদের প্রতি অবিচার হলে আমরা নিশ্চুপ থাকতে পারি না। সরকারের উচিত দ্রুত তাদের দাবি পূরণ করা।’
শহীদ হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইসরাত জাহান বলেন, ‘শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি (২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা ও দেড় হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা) আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর পুলিশ কর্তৃক বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে মোহাম্মদ শহীদ হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, শিবচর, মাদারীপুরের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
পূর্ব কাকইর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক কর্মবিরতি পালন করছেন।’
ড. নুরুল আমীন কলেজের সহকারী অধ্যাপক এখলাছ উদ্দিন চুন্নু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছি। কিন্তু প্রতিবারই কেবল আশ্বাস পাই, বাস্তবায়ন হয় না। এবার আমরা আশ্বাস নয়, বাস্তব পদক্ষেপ চাই।’
ড. নুরুল আমীন কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান বলেন, ‘রাজধানীতে আমাদের সহকর্মীদের ওপর পুলিশের হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপমানজনক। শিক্ষক সমাজ এ ধরনের আচরণ মেনে নিতে পারে না। তাই কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরাও ক্লাস বন্ধ রেখেছি।’
শিবচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শহিদ হোসেন বলেন, ‘শিবচরে কেউ কর্মবিরতি পালন করছে না। যদি কেউ করে থাকে, তাহলে খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেকে/ এমএ