বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ দেয়া হবে না : ধর্ম উপদেষ্টা      ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরও সাত, হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৭      ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প      দুদকের সব কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক সম্পত্তির হিসাব দিতে হবে      প্রাথমিক শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি      নির্বাচনী জোটের আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে : রাশেদ খান      গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনের বিকল্প নেই : আমান      
খোলাকাগজ স্পেশাল
গাজায় নামমাত্র যুদ্ধবিরতি
খোলা কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:১২ এএম
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পরেও গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ১০ অক্টোবর দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চলমান থাকার পরেও ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার বাহিনীর আগ্রাসন থামছে না। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ৩৯৩ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত ২৭৯ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরো ৬৫২ জন। 

এদিকে দক্ষিণ লেবাননের একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ১৩ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। অপরদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী এক শিশু এবং আল জাজিরার এক সাংবাদিককে গুলি করেছে। 

গত মঙ্গলবার অধিকৃত পশ্চিম তীরে গাড়ি চাপা ও ছুরিকাঘাতে একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সে সময় ইসরায়েলে মোট ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। 

প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ আগ্রাসনে কমপক্ষে ৬৯ হাজার ৪৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৭০৬ জন আহত হয়েছে। 

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, গত দুই বছরের কম সময়ে ইসরায়েলি কারাগারে অন্তত ৯৪ ফিলিস্তিনি বন্দি ও আটক ব্যক্তি মারা গেছেন। সংগঠনের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব মৃত্যু পদ্ধতিগত হত্যা ও গোপন করার চেষ্টার অংশ হতে পারে। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগের ১০ বছরে ইসরায়েলি হেফাজতে প্রায় ৩০ ফিলিস্তিনি মারা যান। তাদের দাবি, সাম্প্রতিক মৃত্যুর ঘটনা মূলত শারীরিক নির্যাতন, চিকিৎসাসেবা অস্বীকার, অথবা দুইয়ের সংমিশ্রণে ঘটেছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইসরায়েলি প্রিজন সার্ভিস জানিয়েছে, তারা আইন মেনেই বন্দিদের পরিচালনা করে। 

ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের ঘোষণা নেতানিয়াহুর : অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালানো ইসরায়েলিদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকবেন বলেও জানান তিনি। 

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গত সোমবার বেথেলহেমের কাছে জাবা গ্রামে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ও যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় ইসরায়েলিরা। এর আগে পার্শ্ববর্তী সাইর গ্রামেও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা এবং সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে। 

এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গত সোমবার এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘পশ্চিম তীরে (ইসরায়েলিদের) একটি ছোট, চরমপন্থি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা ছড়ানো এবং আইন নিজেদের হাতে নেওয়ার প্রচেষ্টা আমি গভীরভাবে লক্ষ্য করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘পশ্চিম তীরের দাঙ্গাকারীদের গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে পরিপূর্ণভাবে আইনের প্রয়োগ করতে আমি ইতোমধ্যে সেখানাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি দেখব এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা এক্ষেত্রে আমাকে সহযোগিতা করবেন। শিগগিরই এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকা হবে।’ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জাবাতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং হামলাকারীদের গ্রেফতারে তল্লাশি অভিযান চলছে। 

পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, পশ্চিম তীরে সহিংসতা বন্ধে আলাদাভাবে রসদ বরাদ্দ এবং অর্থায়নের সিদ্ধান্ত নিতে পারে ইসরায়েরের সরকার। এটি সহিংসতা মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে আশা করেন তিনি। 

এদিকে সোমবার জাবায় দাঙ্গার পর জরুরি বৈঠকে ফিলিস্তিনের মন্ত্রিসভা ইসরায়েলি সরকারের সুরক্ষা ও সমর্থনে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এসব হামলা ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। 

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তরের (ওসিএইচএ) তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাসে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর রেকর্ড ২৬৪টি হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বসতি স্থাপনকারীরা, যা ২০০৬ সালের পর এক মাসে সর্বোচ্চ। 

উল্লেখ্য, প্রায় ২৭ লাখ ফিলিস্তিনির আবাসস্থল পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের পাশে ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে এ ভূমির সঙ্গে বাইবেলের সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলি সরকার পশ্চিম তীরে ব্যাপকভাবে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে। বর্তমানে পশ্চিম তীরে প্রায় পাঁচ লাখ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী বাস করে এবং প্রায় সেখানকার ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায় ও তাদের সম্পদ নষ্ট করে। জাতিসংঘ, ফিলিস্তিনি সরকার এবং বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে এসব বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছে। 

নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলেই গ্রেফতার হবে : ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্ক সফরে এলে তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন শহরটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন আগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামদানি এ ঘোষণা দিয়েছেন। 

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ী মেয়র এরিক অ্যাডামসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মামদানি এ কথা বলেন। এ সময় তাকে মেয়র পদে অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানান মামদানি। 

এরিক অ্যাডামসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এবিসি৭-এ সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠানে যোগ দেন মামদানি। এ সময় তিনি নিউইয়র্ক শহরকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের শহর’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এখানে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে আইসিসির জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা বহাল থাকবে। ওই পরোয়ানায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা এবং যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ক্ষুধাকে ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। 

নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি যে আমি বিশ্বাস করি, এটি আন্তর্জাতিক আইনের শহর। আন্তর্জাতিক আইনের শহর হওয়ার মানে সেই আইনকে রক্ষা করা। আর তার মানে হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল রাখা। সেটি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য হোক কিংবা ভøাদিমির পুতিনের জন্য।’ 

মেয়র নির্বাচনে জয়ের আগে গত অক্টোবর মাসে ফক্স নিউজের দ্য স্টোরি অনুষ্ঠানে মার্থা ম্যাককালামের সঙ্গে আলাপচারিতায় মামদানি বলেছিলেন, আইনগত অনুমতি থাকলে তিনি নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করবেন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক এ ধরনের ‘নীতিকে সমুন্নত ও সংরক্ষণ করতে চায়’। 

মামদানি বলেন, নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে তিনি কোনো নতুন আইনের আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এ সময় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নই। আমি এমন একজন, যে বিদ্যমান আইনের মধ্যেই থাকতে চায়। তাই আমি নিজে থেকে কোনো আইন বানাব না। বরং বিদ্যমান আইনের ভেতরে থেকে সব ধরনের আইনগত সম্ভাবনা খুঁজে দেখব।’ উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। 

এদিকে সিবিএসের খবরে বলা হয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণের সময় ‘ট্রানজিশন’ দলের খরচের জন্য সমর্থকদের কাছে অনুদান চেয়েছেন মামদানি। গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি এ অনুদান চান। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তার প্রচারণা দল খরচের জন্য ১০ লাখ ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছে। তবে তাদের আরো ৪০ লাখ ডলার প্রয়োজন।


কেকে/ আরআই
আরও সংবাদ   বিষয়:  গাজা   যুদ্ধবিরতি  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় বীজ বিক্রিতে অনিয়মের দায়ে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
শ্রীপুরে ইভটিজিং ইস্যুকে কেন্দ্র করে স্কুলছাত্রের ছুরিকাঘাত, আহত ৬
শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে না লড়ার সিদ্ধান্ত জেডআই খান পান্নার
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে ১২.৫ ডিগ্রি
মোহনপুরে বিএসটিআই লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

সর্বাধিক পঠিত

ইয়ুথ ফোরামের নবনির্বাচিত কমিটিকে ব্যারিস্টার খোকনের বরণ
পাটগ্রাম উপজেলায় সীমান্ত সুরক্ষা জোরদারে 'চতুরবাড়ী বিওপি'র যাত্রা
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প
নাগেশ্বরীতে ১০ টাকার স্বাস্থ্য সেবা চালু
দুই ট্রলারসহ সেন্টমার্টিনে ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close