আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির লালমনিরহাট জেলা শাখায় তীব্র অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দিয়েছে। এই বিভেদ জেলার লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলা) সংসদীয় আসনের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ‘বিরোধ ও বিভেদ’ সৃষ্টির আশঙ্কায় জেলা বিএনপির দুই শীর্ষ নেতাকে সভা-সমাবেশ আয়োজন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে জেলা কমিটি।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) লালমনিরহাট জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক জয়নাল আবেদীন স্বপন স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
চিঠি দুটি পাঠানো হয়েছে লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. রোকন উদ্দিন বাবুল এবং কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- এই দুই নেতাই সম্পর্কে ভাই, যা স্থানীয় রাজনীতিতে ‘ভাইয়ে-ভাইয়ে দ্বন্দ্ব’ হিসেবে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
উভয় চিঠিতেই উল্লেখ করা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তারা যে ধরনের সভা-সমাবেশ আয়োজন করছেন, তার ফলে ‘তৃণমূল রাজনীতিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে চরমভাবে বিরোধ ও বিভেদের সৃষ্টি হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘বিএনপি কর্তৃক মনোনয়ন সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগত জনসংযোগ ব্যতীত বিরোধ ও বিভেদের সৃষ্টি হয়—এমন ধরনের সভা সমাবেশ না করার জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এদিকে লালমনিরহাট-২ সংসদীয় আসনটি জেলার কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলা নিয়ে গঠিত। আগে আওয়ামী লীগের দখলে রেখেছিল সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজামান আহমেদ। অতীতে এই আসনটি জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আসনটিতে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যায়। এই আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক সাংসদ সালেহ উদ্দিন আহমেদ হেলালসহ চারজন প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাশা এবং তার জের ধরে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি হওয়া স্থানীয় রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। মনোনয়ন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দুই সহোদর নেতার সভা-সমাবেশ বন্ধের নির্দেশনা এই অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও আলোচনায় এনেছে।
এ বিষয়ে জয়নাল আবেদীন স্বপন বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দলের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের পৃথক সভা-সমাবেশ আয়োজনের ফলেই এই অভ্যন্তরীণ বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এই বিভাজন থামাতে জেলা বিএনপি সাংগঠনিক পদক্ষেপ নিয়েছে এরপরেও যদি তারা সভা-সমাবেশ করে থাকেন, তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেকে/ এমএ