কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর দুর্গম চরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে জড়িত না এমন সাধারণ মানুষকে মামলার আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে নিহত মণ্ডল গ্রুপের পক্ষ থেকে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
এর আগে গত সোমবার সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মণ্ডল গ্রুপ ও দৌলতপুরের প্রকৌশলী কাকন বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গোলাগুলিতে দুই পক্ষের তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন— মণ্ডল গ্রুপের আমান মণ্ডল (৩৬), নাজমুল মণ্ডল এবং কাকন বাহিনীর লিটন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শতাধিক সদস্য অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পদ্মার চরে অভিযান শুরু করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনায় জড়িত নয় এমন কয়েকজন ব্যক্তির নাম-পরিচয় মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা হাটখুলা পাড়া এলাকার মৃত আলিম সরদারের ছেলে উজ্জ্বল সরদার ও তার ভাই রফিকুল সরদারকে মামলার দুই ও তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে।
কাকন বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই এমন একটি পরিবারের সদস্যদের মামলায় আসামি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উজ্জ্বল সরদার দৌলতপুরে নদী ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি তিনি মরিচা এলাকায় ভাঙনরোধে কাজ করছেন। ওই কাজ বন্ধ বা অন্যের হাতে না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে ও তার ভাইকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
মামলার দুই নম্বর আসামি উজ্জ্বল সরদার বলেন, “সংঘর্ষের সময় আমি আমার বাড়িতে ছিলাম। তার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। অথচ আমাদের দুই ভাইকে মামলার আসামি করা হয়েছে। কাকন বাহিনীর সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।”
তিনি আরও বলেন, আমি একজন ঠিকাদার। দৌলতপুরে নদী ভাঙন এলাকায় আমার জিওব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। স্থানীয় এক সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সেই কাজ বন্ধ করতে বাদী পক্ষকে দিয়ে আমাদের আসামি করিয়েছেন।”
এ বিষয়ে মামলার বাদী নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনহাজ মণ্ডল বলেন, নিহত দুইজনের মধ্যে একজন আমার ছেলে অন্যজন ভাগ্নে। তবে জড়িত নয় এমন কয়েকজনকে আসামি করার অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, “মামলার তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হবে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে। আর যারা নির্দোষ তারা অবশ্যই অব্যাহতি পাবেন। অপরাধীদের ধরতে সকাল থেকে পদ্মা নদীতে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।”
কেকে/ আরআই