বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক এমপি মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান এর সাথে প্রথমে যদি এদেশের কেউ বেঈমানি করে থাকে তবে সে ছিল শেখ হাসিনা। আপনারা জানেন, ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট থাকাকালে দেশের সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন, প্রতিষ্ঠিত করলেন একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল। তিনি পার্লামেন্টে ঘোষণা করলেন দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল দল ছাড়া আর কোন দল কেউ করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, সরকার নিয়ন্ত্রিত চারটি সংবাদপত্র ছাড়া দেশের সকল সংবাদপত্র নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। শেখ মুজিবের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে দেশের সাংবাদিক, রাজনৈতিক অর্থনীতিবীদ দেশের সামরিক বেসমারিক ব্যাক্তিদের কিছু বলার থাকল না। সর্বত্র নিস্তবদ্ধতা। তাহলে সেই বাকশালকে উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা তার পিতার গড়া বাকশালকে বিলুপ্তি ঘোষণা করে আবার আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করল। তাহলে বলতে হয় শেখ হাসিনাই তার পিতার সাথে প্রথম বেঈমানি করেছিল।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে বেনাপোল দিঘিরপাড় ঈদগাহ ময়দানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি একথাগুলো বলেন।
সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতাম। সেখান থেকে আমি ছাত্রদল থেকে রাজনীতি শুরু করি। এরপর আমি দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্বও নিষ্ঠার সাথে পালন করি। আমার এলাকায় আমি কেন্দ্রীয় বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না হয়েও অনেক কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজের উন্নয়ন করি। আমি এলাকার অনেক বেকার ছেলে-মেয়েদের সরকারী চাকুরী দিতে সহযোগিতা করেছি। তার বিনিময়ে তাদের নিকট থেকে একটি পয়সাও নেই নাই। আমরা সঠিকভাবে বিগত ১৫টি বছর রাজনীতি করার সুযোগ পাইনি। আমাদের খুন-গুম করার সুযোগ খুঁজেছে ফ্যাসিবাদি আওয়ামী সরকার। আমাকে মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে ওই ফ্যাসিবাদি হাসিনা সরকার। এখন আমি মাঠে নামলে লোকজন দৌড়ে চলে আসছে, বলছে তৃপ্তি ভাই এসেছে। আমি এমপি হলে আগে যারা নানা মামলা হামলার শিকার হয়েছে তাদের পাশে থাকব। পতিত সরকারের আমলে আমাদের এই সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালান বৃদ্ধি পেয়েছে। এটাও আগে রোধ করব।
মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, সিরাজ শিকদার ছিলেন বামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতা। তিনি ছিলেন একজন মেধাবী শিক্ষিত রাজনৈতিক নেতা। শেখ মুজিবের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সিরাজ সিকদার যখন গর্জে উঠল, দিনকে দিন সব কিছু অচল করে দিতে লাগল তখন তাকে গ্রেফতার করে শেখ মুজিবের নির্দেশে পাঁচ পাঁচটি গুলি করে হত্যা করা হলো। আর পবিত্র জাতীয় সংসদে অট্রহাসি দিয়ে শেখ মুজিব বক্তব্য দিল সিরাজ সিকদাররা কোথায়? জাতীয় সংসদে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া শেখ মুজিবের মরোনোত্তর বিচার ও ফাঁসি হওয়া উচিত। সিরাজ সিকদার নিপিড়ীত নির্যাতিত মানুষের অধিকার আদায়ের জন্যে নিজ সংসার, আত্নীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন আরাম-আয়েস ত্যাগ করে সমাজ বিপ্লবে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তখন এদেশের মানুষ বলাবালি শুরু করল শেখ মুজিব যদি মহান নেতা হন, দেশ প্রেমিক নেতা হন তাহলে কি করে আর একজন দেশ প্রেমীক স্বর্বত্যাগী নেতাকে বন্দী অবস্থায় বিনা বিচারে গুলি করে হত্যা করল?
এর আগে তিনি বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘিরপাড় ৫নং ওয়ার্ডের ঈদগাহ ময়দানে বেসরকারী টিভি চ্যানেল ডিবিসি টেলিভিশনে ত্রায়োদশ নির্বাচন উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে একটি সাক্ষাৎকার দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তাজ উদ্দিন তাজ, আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান, তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, শার্শা উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আল মামুন বাবলু, শার্শা উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ইমদাদুল হক ইমদা, বেনাপোল পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আশরাফুজ্জামান মির্জা, সদস্য সাইফুল ইসলাম আসাদ, মফিজুর রহমান পিন্টুসহ স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী প্রমুখ।
কেকে/ আরআই