মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরে নিলাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই রেলওয়ের জমি দখলের অভিযোগ ওঠেছে। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে রাতের আঁধারে স্থাপনা নির্মাণ করছেন সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু চক্র।
অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে কোন প্রজ্ঞাপন জারি না হলেও পাচ্চর রেলওয়ের দক্ষিণে ভূ-সম্পত্তিটির মালিক হিসেবে রাজশাহী জেলার স্থায়ী বাসিন্দা ভূমিদস্যু সেলিম রেজা ও প্রভাবশালী রাসেল মিয়া বর্তমানে এ সম্পত্তির নিলাম খরিদা মালিকানা দাবি করে রাতের আঁধারে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন।
অভিযোগের পর লিজটি বাতিল হলেও শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) গভীর রাতে বাণিজ্যিক টিন সেড নির্মাণ করে; যা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।
সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে সরকারি এসব জায়গা ত্রুটিপূর্ণ ভুয়া মাঠ পর্চা দেখিয়ে কৃষিকাজের জন্য বরাদ্দ নেন রাসেল মিয়া। কিন্তু, কৃষিকাজ নয় বরং ব্যস্ত হয়ে পড়েন বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণে। অথচ রেলওয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেয়া হয়নি, হয়নি কোনো লিজ প্রদানের বিজ্ঞপ্তি।
এদিকে, এসব জমির প্রকৃত মালিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মামলা-হামলা, থানা, আদালতে দৌড়-ঝাঁপে ভুক্তভোগীদের জীবন নাভিশ্বাস।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, পতিত স্বৈরাচার সরকারের সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানা ধরনের সমাজ বিরোধী অন্যায়ের সাথে যুক্ত ছিলেন রাসেল মিয়া। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর কিছু দিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকলেও বর্তমানে তিনি পুরনো রূপে ফিরেছেন।
রেলওয়ের জমি দখল করতে পাঁচ্চর রেলওয়ের ব্রীজের দক্ষিণ পার্শ্বের সরকারি জায়গায় গড়ে ওঠা ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ ও অবৈধ স্থাপনা নির্মানের চেষ্টা করছেন রাসেল মিয়া ও তার সহযোগীরা।
স্থানীয়রা জানান, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করেই ছুটির দিনে এই লিজ অনুমোদন দেয়। এই ভুয়া নিলামের সরকারি হিসেব মতে ধার্য্য কৃত নিলাম মূল্য ব্যাংকে পরিশোধ করা হয় বিকাল পাঁচটার পরে; যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
এই অনিয়মের পেছনে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা বড় ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
এদিকে, এসব ভুয়া নিলামের বদৌলতে জমির প্রকৃত মালিকরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা রেলওয়ে থানার (প্রস্তাবিত) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাফুর আহমেদ বলেন, ‘শিবচরের পাঁচ্চরে রেলওয়ের জায়গা কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দ শর্ত ভঙ্গ করায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ বাতিল করে। পরে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করলে বর্তমানে তা শুনানির জন্য রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্মাণাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান হতে পারে।’
শিবচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা শাইখা সুলতানা বলেন, ‘পাচ্চর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রেলওয়ে সেতুর নিচে বিশাল জায়গা দখল কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নির্মাণের চেষ্টা করছেন। শিবচর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুতই এর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
কেকে/এমএ