চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে বদলে গেছে কৃষির চিত্র। আধুনিক ও প্রশস্ত সড়ক নির্মাণের ফলে এখন মাঠের ফসল সহজেই বাজারে পৌঁছানো যাচ্ছে। এতে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হওয়া ছাড়াও গ্রামীণ অর্থনীতিতে এসেছে নতুন গতি।
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা কাঞ্চননগর ইউনিয়ন কৃষিপ্রধান এলাকা। ধুরুং খালের দুই তীরে বিস্তীর্ণ চরে সারা বছর চাষ হয় নানা জাতের সবজি, ধান, মরিচ ও তরমুজ। আগে রাস্তা ভাঙাচোরা থাকায় ফসল পরিবহন ছিল কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। বর্ষায় রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত হয়ে পড়ত, ফলে অনেক ফসল সময়মতো বাজারে বিক্রি করা যেত না।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৩ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ কাঞ্চননগর সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার হয়েছিল ২০০৯ সালে। দীর্ঘদিন পর ‘লক্ষীছড়ি হেডকোয়ার্টার টু ফটিকছড়ি উপজেলা হেডকোয়ার্টার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় ৪ হাজার ৪০০ মিটার সড়ক সংস্কার ও প্রশস্তকরণ সম্পন্ন হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
স্থানীয় কৃষক এখলাস উদ্দিন বলেন, “আগে ফসল বাজারে নিতে অনেক কষ্ট হতো। এখন রাস্তাটা ভালো হওয়ায় সহজে ফসল নিয়ে যেতে পারছি। খরচ কমেছে, আয় বেড়েছে।”
আরেক কৃষক আবদুল গফুর জানান, “রাস্তাটা পাকা হওয়ার পর আমাদের জীবনে বড় পরিবর্তন এসেছে। এখন ফসল পচে যাওয়ার ভয় নেই, সময়মতো বিক্রি করতে পারি।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আবছার বলেন, “নতুন এই সড়কটি ফটিকছড়ির কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চার করেছে। এতে কৃষক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী—সবাই উপকৃত হচ্ছেন।”
এদিকে, ধুরুং খালের চর ও আশপাশের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসল এখন সহজেই বাজারে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এতে কৃষির পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাণিজ্যক্ষেত্রেও এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন।
সড়কটির নির্মাণ করেছে মেজদা কনস্ট্রাকশন ও রুবেল কনস্ট্রাকশন। রুবেল কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মো. রুবেল বলেন, “আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি চালু হলে কাঞ্চননগর ও লক্ষীছড়ি উপজেলার মানুষের যাতায়াত সহজ হবে, কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণে গতি আসবে।”
ফটিকছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, “কৃষিনির্ভর কাঞ্চননগরে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন হলে কৃষি উৎপাদন আরও বাড়বে। সড়কটি চালু হলে কৃষকরা সময় ও খরচ বাঁচিয়ে লাভবান হবেন, এতে স্থানীয় অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।”
কেকে/ আরআই