ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চলছে মারাত্মক জনবল সংকট। অফিসটিতে মোট পাঁচটি পদে কর্মরত থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন আবু হানিফ নামের মাত্র একজন হিসাব সহকারী। জনবল সংকটের কারণে পুরো শিক্ষা অফিস কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
অফিস সূত্রে জানা যায়, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে তিনটি এবং উচ্চমান সহকারী পদে একটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। এককভাবে সব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিসাব সহকারী আবু হানিফ চরম শারীরিক ও মানসিক চাপে ভুগছেন বলে জানা গেছে।
বর্তমানে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আওতায় রয়েছে ২১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যা ১১টি ক্লাস্টারে বিভক্ত। প্রতিটি ক্লাস্টার মনিটরিং করার জন্য যেখানে ১১ জন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা থাকার কথা, সেখানে আছেন মাত্র তিনজন। ফলে মাঠপর্যায়ের তদারকি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার গুণগত মানও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
এদিকে, প্রায় ১ হাজার ৪০০ শিক্ষক এই অফিসের উপর নির্ভরশীল। তাদের বেতন-ভাতা, পেনশন ফাইল, চিকিৎসা ছুটি, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক কার্যক্রম এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় শিক্ষকরা জানান, “জনবল সংকটের কারণে আমাদের নিয়মিত কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। জরুরি কাগজপত্র জমা বা অনুমোদনের কাজ সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে পড়ে থাকে।”
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, তবে এখনো পদগুলো পূরণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, অবিলম্বে শূন্যপদ পূরণ না করলে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষার সার্বিক অগ্রগতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাজাহারুল হুদা। তিনি বলেন, “জনবল সংকটের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি নবীনগর এসে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব চৌধুরী বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের জনবল সংকট বিষয়ে জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টি এবার আমরা লিখিতভাবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।”
কেকে/ আরআই