ফরিদপুরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ২০ বছর পর চারজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শফিউদ্দীন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের শিরগ্রামের আনোয়ার হোসেন (৫৩), বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের গুনবহা গ্রামের কামরুল হাসান ওরফে কামরুজ্জামান (৪৫), ধোপাপাড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান ওরফে মনির (৪০) এবং চর ধোপাপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ (৬০)।
তবে রায় ঘোষণার সময় চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তারা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে তিননটার মধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চর ধোপাপাড়া গ্রামের ভাড়াবাসায় প্রবেশ করে খ্রিস্টন সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তি তপন রায় (৩০) ও নিকলাল মাঝিকে (৩৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পর দিন নিহতদের বাড়ির মালিক বিপুল কুমার বাকচী বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে বোয়ালমারী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুলতান মাহমুদ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রায়ের পর ফরিদপুর বিশেষ জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তারা টাকার লোভে ওই দুই খ্রিস্টান ব্যক্তির ওপর হামলা চালায়। গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে গিয়ে তারা পলাতক হয়ে যায়।’
‘দীর্ঘদিন পর হলেও এ দ্বৈত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।’
কেকে/এমএ