মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের তিতপুর গ্রামের আলতাফুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগ এনে প্রতিবাদ সভা করেছেন চার গ্রামের মানুষ।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাত আটটায় পশ্চিম আশিদ্রোন গ্রামের আইয়ুব আলী মার্কেটে তিতপুর, জিলাদপুর, আশিদ্রোন ও খোশবাস গ্রামবাসীর উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
আইয়ুব আলী মার্কেট কমিটির সভাপতি মো. ফুল মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন এলাকার মুরব্বি মো. শফিকুর রহমান, ভুক্তভোগী কৃষক সিকান্দর আলী ওরফে ছিকই মিয়া, কৃষক মো. কাদির মিয়া, মো. বশর মিয়া, মো. জুনেদ মিয়া, মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘আমাদের এলাকার আলতাফ মাস্টার নামে একজন ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে চার গ্রামের ৩৫০-৪০০ জন কৃষককে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নেয়। উপজেলা কৃষি অফিসে জমা দিয়ে সার, বীজ ইত্যাদি অনুদান দিবে বলে গ্রামবাসীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সংগ্রহ করে। আমরা গ্রামবাসী কোন ধরনের অনুদান না পেয়ে উপজেলা কৃষি অফিসে গেলে উনারা বলেন, ‘‘আমাদের সব অনুদান আপনাদের নিয়োজিত ব্যক্তির কাছে দেওয়া হয়েছে।’’
তারা আরও বলেন, ‘আলতাফুর রহমান এই জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ব্যবহার করে উপজেলা বিএডিসি অফিসে সেচের আবেদন করে। অথচ আগ থেকেই আমাদের গ্রামে দুইটি সেচ প্রকল্প স্থাপন করা রয়েছে। যার মাধ্যেমে গ্রামবাসী দীর্ঘ ১২ বছর ধরে কৃষি কাজ করছে। বর্তমানে যে দুইটি সেচ স্থাপন করা আছে, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং একটি সেচ প্রকল্পের মিটার না দেওয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে অভিযোগ করে। ৩৫৯-৪০০ মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি বর্তমানে সে সরকারি বহু কাজে ব্যবহার করছে। আমরা তার এই কর্মকাণ্ডের জন্য পুরো গ্রামবাসী নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়ে চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছি। আমরা তার এসব অপকর্মের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শ্রীমঙ্গল থানা, উপজেলা কৃষি অফিস, বিএডিসি, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে আবেদন করেছি।’
সভায় স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ‘আলতাফ এলাকায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছেন। তার ওই স্কুলে কোনোদিন ক্লাস হয় না। নেই কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থী। কিন্তু প্রতারণা করে শিক্ষার্থীর নামে উপজেলা থেকে সরকারি বই এনে বিক্রি করছেন। একটি সংস্থা থেকে এলাকাবাসীর নাম ভাঙিয়ে ডিপ টিপওয়েল আনলেও তিনি কাউকে এটি ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না। এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রেখেছেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দ-অনুদান এনে আত্মসাৎ করেছেন। তার এসব অন্যায়, দুর্নীতি ও অপকর্ম নিয়ে কেউ কথা বললে তাদের ওপর মিথ্যা মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করছেন।’
আলতাফুর রহমানের এসব অন্যায়-অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
কেকে/ এমএ