কুমিল্লা শহরতলীর রত্নাবতী এলাকায় গেলে চোখে পড়বে গাড়ির সারি—দেখতে যেন সমাধিক্ষেত্র। তবে এগুলো কোনো সমাধি নয় বরং আইনি জটিলতায় মামলায় জব্দ হওয়া গাড়ি বছরের পর বছর পড়ে আছে খোলা আকাশের নিচে। এছাড়া এসব জব্দকৃত গাড়ি নষ্ট হচ্ছে রোদ ও বৃষ্টিতে ভিজে। কোনটায় মরিচা পড়েছে। কোনটা জরাজীর্ণ। এভাবে থাকার কারণে নষ্ট হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।
জানা গেছে, ছত্রখিল পুলিশ ফাঁড়ির পার্শ্ববর্তী রত্নাবতী এলাকায় এভাবে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা যানবাহনগুলো কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার অধীনে। একজন এসআই ও দুজন কনস্টেবল এখানে পাহারার দায়িত্বে আছেন। যে যানবাহনগুলো এখানে রাখা হয়, সেগুলো মামলা জটিলতা শেষ হলে মালিকরা নিয়ে যায়। যানবাহনগুলো সংরক্ষণে পুলিশের হাতে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেই। এজন্য এভাবে রাখতে হয় এখানে।
মামলার জব্দ যানবাহনের এই ভাগাড়ে আছে- প্রাইভেট কার, টিআরএক্স, এম্বুলেন্স, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ, ট্রাক, সিএনজি, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন। এসব যানবাহনের কোনটার গায়ে মরিচা পড়েছে, আবার কোনটার গায়ে উঠছে লতাপাতা। অধিকাংশ যানবাহনই রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে হয়ে যাচ্ছে ব্যবহার অনুপযোগী।
স্থানীয় সোহাগ সরকার ও কাদের মিয়া বলেন, হিসেব করলে দেখা যাবে এখানে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ আছে। খোলা আকাশের নিচে এভাবে রেখে নষ্ট করা ঠিক হচ্ছেনা। আইনি জটিলতা ও প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতার কারণে দাড়িগুলো নষ্ট হচ্ছে।
এসব যানবাহনের পাহারায় দায়িত্বে থাকা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের এসআই সালাউদ্দিন খোলা কাগজকে বলেন, এখানে যে গাড়িগুলো রয়েছে সেগুলোর মামলা আদালতে বিচারাধীন। আদালত যদি আমাদেরকে নির্দেশ দেয় ছাড়ার, আমরা ছেড়ে দেই।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম খোলা কাগজকে বলেন, ছত্রখিল পুলিশ ফাঁড়ির পার্শ্ববর্তী রত্নাবতী এলাকায় আমাদের অধীনে ৫০০ বেশি যানবাহন রাখা আছে। এখানে মাদক বহন, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতের কাজে ব্যবহৃত, সড়ক দুর্ঘটনা এবং বৈধ কাগজপত্র না থাকাসহ বিভিন্ন মামলায় জব্দ যানবাহন আছে। যেগুলোর মামলা আদালতে বিচারাধীন।
কেকে/ আরআই